স্বাস্থ্য ডেস্ক:
বড়দের ক্ষেত্রে মাথাব্যথার যে কারণগুলো প্রযোজ্য, বাচ্চাদের ক্ষেত্রেও মোটামুটি একই কারণ থাকে। অনেক সময় পরিবারে কারো মাথাব্যথার সমস্যা থাকলে, বাচ্চার মধ্যে এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন যে কেমিক্যাল বা ব্লাড ভেসেলে কোনো পরিবর্তন হলে, ব্রেনের কাছে তা ‘পেইন সিগনাল’ হিসেবে পৌঁছে যায়, এবং তা মাথাব্যথার মাধ্যমে প্রকাশ পায়।
মাথাব্যথার কারণ : ভাইরাল ইনফেকশন, সাইনুসাইটিস থেকেও মাথায় ব্যথা হয়। ঠাণ্ডা লাগলে, প্রচণ্ড সর্দি-কাশি হলেও মাথায় ব্যথা হতে পারে।
সাইকোলজিকাল সমস্যা থেকেও মাথা ব্যথা হয়। স্ট্রেস, পড়াশোনার অত্যাধিক চাপ থেকেও বাচ্চাদের মাথাব্যথা হয়।
এরকমও দেখা গিয়েছে যে বাড়িতে নতুন বাচ্চার জন্ম হলে বা পরীক্ষার ভয় বাচ্চাদের মনের ওপর গভীর প্রভাব বিস্তার করে। তারা এই মানসিক সমস্যার কথা বলতে পারেনা এবং এই সমস্যাগুলো শারীরিক উপসর্গ হিসেবে প্রকাশ পায়। মাথাব্যথা তেমনই এক উপসর্গ হতে পারে।
তাছাড়া চোখের সমস্যা তো আছেই। সাধারণত প্রথম প্রথম বই পড়তে, ক্লাসে বোর্ড দেখতে অসুবিধা হয়। এর থেকেও মাথাব্যথা শুরু হতে পারে। এছাড়াও আরও কয়েকটি কারণে মাথাব্যথা হতে পারে,
যেমন :
কোনো বিশেষ ওষুধ খেলে, ঘুম কম হলে।
ঠিকমতো খাওয়া দাওয়া না করলে।
মাথায় ছোট খাটো চোট লাগলে।
দীর্ঘক্ষণ কম্পিউটারে কাজ করলে বা টিভি দেখলে।
অতিরিক্ত মাত্রায় কফি, চা, সোডা, খেলে।
বিভিন্ন ধরনের মাথাব্যথা : শারীরিক কারণ ছাড়া দু’ধরণের মাথাব্যথা বাচ্চাদের বিব্রত করে। টেনশন হেডেক এবং মাইগ্রেন
টেনশন হেডেক :
পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি অনেক সময় বাচ্চাদের মনে প্রভাব ফেলে, যা হয়তো বয়স্করা বুঝে উঠতে পারেন না। স্কুলের পরিবেশ, বন্ধুদের মতো হওয়ার চেষ্টা, পড়াশোনার, চাপ, বাবা-মায়ের প্রত্যাশা ইত্যাদি বাচ্চারা অনেক সময় নিতে পারে না। অনেক সময় তারা অতিরিক্ত আবেগ প্রবণ হয়ে পড়ে, এর থেকেও মাথাব্যথা হতে পারে। সাধারণত টেনশন হেডেকে মাথার সামনে এবং কপালের দু’পাশে প্রচণ্ড যন্ত্রণা হয়।
মাইগ্রেন :
বড়দের মতো, বাচ্চাদের মধ্যে মাইগ্রেন হওয়ার সম্ভবনা অতটা না হলেও, একেবারেই অবহেলা করা ঠিক নয়। মাইগ্রেনের মাথাব্যথা সাধারণত মাথার একপাশে হয়। পরিবারে কারো মাইগ্রেন থাকলে বাচ্চার মাইগ্রেন হওয়ার সম্ভবনা বেড়ে যায়। মাথাব্যথার সঙ্গে বমি বমি ভাব, মাথা ঝিম ঝিম করা, তীব্র আলো, আওয়াজ, গন্ধ সহ্য করতে না পারার মতো উপসর্গ দেখা যায়।
চিকিৎসা :
সাধারণ মাথাব্যথায় তাৎক্ষনিক আরামের জন্যে পেনকিলার বা অ্যানালজেসিক দেওয়া হয়। বাম মালিশ করা যেতে পারে তবে সবথেকে জরুরি মাথাব্যথার কারণটা অনুধাবন করা। সেই বুঝেই সঠিক চিকিৎসা করা হয়। ডাক্তারেরা অনেক সময় বাবা-মায়েদের বাচ্চাদের একটা ‘হেডেক ডায়েরি’ মেইনটেন করতে বলেন, যাতে ফলো আপ করতে সুবিধা হয়।
তবে সবার আগে মাথাব্যথার কারণটা অনুধাবন করুন। সাধারণ মাথা ব্যথা হলে বাচ্চাদের বিশ্রাম নিতে দিন। তাদের টেনশন দূর করার চেষ্টা করুন। কারণ অল্প বয়সে অল্প কারণেই যদি ব্যথার ঔষুধ দেয়া শুরু করেন, তাহলে ভবিষতে আপনার বাচ্চার জন্য এটি ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। আর যদি ব্যথা বেশি হয় তাহলে অবশ্যই দ্রুত চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া উচিত।
দৈনিকদেশজনতা/ আই সি