স্বাস্থ্য ডেস্ক:
পুরুষেরা সকালে ঘুম থেকে উঠে কোনো রকমে নাকে-মুখে কিছু খাবার গুঁজে অফিসে দৌড় দেন। এর ওপর আবার সংসারের চিন্তা, ব্যাংকের লোন, উৎসবের খরচ, সবকিছু নিয়ে মানসিক দিক থেকেও একেবারে নাজেহাল। সবদিক সামলাতে গিয়ে বাড়ির কর্তাকে জীবন থেকে অনেক কিছুই বাতিল করে দিতে হয়। কারণ বেশিরভাগেরই বিশ্বাস, এই আত্মত্যাগের বদলে প্রিয়জনের মুখে হাসি ফুটবে। কিন্তু, কখনো ভেবে দেখেছেন, আপনার কিছু হয়ে গেলে আপনার প্রিয়জনদের কী হবে? তখন কি সত্যিই পারবেন, সাহায্যের, সহানুভূতির হাত বাড়িয়ে দিতে? তাই এখন থেকে সকলের সঙ্গে নিজেরও যত্ন নিন।
আর কিভাবে খেয়াল রাখবেন নিজের? চাবিকাঠি লুকিয়ে রয়েছে কিছু খাবারের মধ্যে। তাই তো রোগমুক্ত জীবন উপভোগ করে শক্তি, সামর্থবান হতে পুরুষদের প্রতিদিন এই খাবারগুলো খাওয়া খুবই জরুরি;
১. কাঠ বাদাম: অ্যামন্ড বা কাঠবাদামে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন থাকে। তাই তো দিনে ৮-১০ টা বাদাম খেলে শরীরের প্রয়োজনীয় প্রোটিনের ঘাটতি সহজেই মিটে যায়।
২. সয়াবিন: এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আইরন, যা হাড়কে শক্তপোক্ত রাখতে বিশেষ ভূমিকা নেয়। তাই তো নিয়মিত সয়াবিন খেলে বুড়ো বয়সে গিয়ে কোনো ধরনের হার্টের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা একেবারে থাকে না বললেই চলে।
৩. টমেটো: টমেটোর মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম, ভিটামিন সি এবং ফাইবার। এই উপাদানগুলো নানাবিধ রোগের হাত তেকে বাঁচানোর পাশাপাশি হজম ক্ষমতার উন্নতিতে সাহায্য করে।
৪. পেস্তা বাদাম: এতেও রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, যা হার্ট ভালো রাখতে সাহায্য করে এবং শরীরে উপকারি কোলেস্টেরলের ঘাটতি দূর করতে বিশেষ ভূমিকা নেয়।
৫. বাঁধাকপি: বাঁধাকপির মধ্যে আছে ভিটামিন কে, যা হার্টের পাশাপাশি শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের কর্মক্ষমতা বাড়াতে কাজে লাগে। তাই তো নিয়মিত বাঁধাকপির নানা পদ খেলে শরীরে বয়সের ছাপ পরতেই পারে না।
৬. কমলা: কমলার মধ্যে ভিটামিন বি-৯ রয়েছে। ফলে কমলা কাঁচা অবস্থায় খেলে অথবা এর রস নিয়ম করে পান করলে সারা শরীরে রক্ত প্রবাহ সঠিক থাকে। সেই সঙ্গে এতে উপস্থিত ভিটামিন সি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
৭. মিষ্টি আলু: মিষ্টি আলুর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ থাকে, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এতটা বাড়িয়ে দেয় যে কোনো রোগই ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না। সেই সঙ্গে সংক্রমণে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও হ্রাস পায়।
৮. ছোলা: এতে রয়েছে বিপুল পরিমাণে ফাইবার এবং ভিটামিন-৬, যা হজম ক্ষমতা বাড়াতে এবং শরীরকে সবদিক থেকে সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করে।
৯. কিউই: আমরা অনেকেই এই ফলটির নাম জানি না বা দেখলেও হয়তো চিনতে পারব না। তাই একান্ত যদি পেয়েই জান, তাহলে একবার খেয়ে দেখতে পারেন। কারণ কিউই-এর মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, যা সারা শরীরে রক্তের প্রবাহ ঠিক রাখার পাশাপাশি ক্লান্তি দূর করতেও সাহায্য করে।
১০. সূর্যমুখী বীজ: নিয়মিত এই প্রাকৃতিক উপাদান ভাজা হিসেবে খাওয়া খুব উপকারি। কেন জানেন? কারণ সূর্যমুখী ফুলের বীজ রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ই এবং নানাবিধ শক্তিশালী অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, যা ক্যান্সারের মতো রোগকে যেমন আটকায়, তেমনি হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতিতেও বিশেষ ভূমিকা নেয়।
১১. সরষে দানা: এতে ফলেট নামে একটি উপাদান থাকে, যা ওজন কমাতে সাহায্য করে। সেই সঙ্গে আরও নানা উপকারে লাগে। সেই কারণেই তো সরষের তেলে রান্না করা খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা।
১২. তরমুজ: এই ফলটির শরীরজুড়ে রয়েছে পটাশিয়াম। এই উপাদনটি এনার্জির ঘাটতি দূর করার পাশাপাশি ক্য়ান্সার রোগকে দূরে রাখতেও বিশেষ ভূমিকা নেয়। প্রসঙ্গত, একটি গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত তরমুজ খাওয়া শুরু করলে প্রোস্টেট ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়।
১৩. ডাল: একথা নিশ্চয় জানা আছে, যে স্বাস্থ্যের যত্নে যে কোনো ধরনের ডালই খুব প্রয়োজনীয় একটি খাবার। আসলে এতে উপস্থিত প্রোটিন শরীরের যত্নে খুবই নানাভাবে সাহায্য করে থাকে।
১৪. ছানা: দুধ থেকে তৈরি এই খাবারটি নিয়মিত খেলে মাংসপেশী দৃঢ় হয়, সেই সঙ্গে শরীরে প্রোটিনের ঘাটতিও দূর হয়। তাই যারা মাছ-মাংস খেতে খুব একটা ভালবাসেন না, তারা ছানার সাহায্য নিতে পারেন। এমনটা করলে দেখবেন দারুণ ফল মিলবে।
১৫ রসুন: এতে উপস্থিত অ্যালিসিন নামক উপাদান জীবাণুনাশক হিসেবে কাজ করে। শুধু তাই নয়, হার্ট এবং স্নায়ুর যত্নেও এই উপাদানটির কোনো বিকল্প হয় না বললেই চলে।
১৬. কুমড়ো: এই সবজিটির শরীরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে জিঙ্ক, যা হাড়কে শক্ত করতে এবং সার্বিরভাবে শরীরের কর্মক্ষমতা এবং জোর বাড়াতে দারুণ কাজে আসে।
দৈনিকদেশজনতা/ আই সি