আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
বহুল আলোচিত ভারতের কথিত ধর্মগুরু গুরমিত রাম রহিম সিং কমপক্ষে ২ হাজার নারীকে ধর্ষণ করেছেন; আর ওসব নারী তার ডেরায় ছিলেন বলে জানিয়েছেন এক সাধ্বী। আজ শনিবার ইন্ডিয়া টিভি অনলাইনের প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, সম্প্রতি নাম প্রকাশ না করার শর্তে হরিয়ানায় সিরসার ডেরার ওই সাধ্বী এক সাক্ষাৎকারে এই দাবি করেছেন। ওই সাধ্বী রাম রহিমের ডেরায় প্রায় ৩০ বছর ছিলেন বলেও দাবি করা হয়। এদিকে আজ শনিবার রাম রহিমের বিরুদ্ধে সাংবাদিক রামচন্দ্র ছত্রপতি ও সাবেক ডেরা ব্যবস্থাপক রণজিৎ সিং হত্যা মামলার শুনানি শুরু হচ্ছে। রোহতাকের সানোরিয়া কারাগার থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে শুনানিতে অংশ নেবেন তিনি। এ কারণে হরিয়ানার পঞ্চকুলায় আবারও নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
সাক্ষাৎকারে ওই সাধ্বী দাবি করেছেন, প্রতিদিন ৫-৬ ঘণ্টা পরপরই একজন নতুন মেয়েকে রাম রহিম তার ডেরায় ডেকে পাঠাতেন। এছাড়া এই ভ- বাবা ডেরায় থাকা কমপক্ষে দুই হাজার নারীকে ধর্ষণ করেছেন। ওই সাধ্বীর দাবি, রাম রহিমের এই অপকর্মের কথা অনেক মেয়েই তাদের মা-বাবাকে জানিয়েছিলেন। কিন্তু রাম রহিমের ওপর অগাধ বিশ্বাসের কারণে নিজের মেয়েদের কথা বিশ্বাস করতেন না মা-বাবারা।
সাক্ষাৎকারে রাম রহিমের পালিত কন্যা হানিপ্রীত সম্পর্কে ওই সাধ্বী বলেছেন, পূর্বপরিকল্পিতভাবে হানিপ্রীতের বিয়ে দিয়েছিলেন রাম রহিম। এরপরে নকশা অনুযায়ী স্বামীর সঙ্গে হানির বিবাহবিচ্ছেদ ঘটান তিনি। মানুষকে বিভ্রান্ত করতেই পরে তিনি হানিপ্রীতকে পালিত কন্যা হিসেবে পরিচয় দেন। হানি পালিত কন্যা নয়, তিনি আসলে রাম রহিমের প্রেমিকা। ডেরায় বাস করা প্রায় সবাই এসব অপকর্ম সম্পর্কে জানতেন, কিন্তু তারা সবাই এই ব্যাপারে নির্লিপ্ত ছিলেন।
সাধ্বীর দাবি, রাম রহিমের বিলাসবহুল ডেরার ভেতর গোপন গুহা বা যৌন গুহা ছিল। সেই গুহার খোলা জানালা দিয়ে ডেরার মেয়েদের দেখে দেখে পছন্দ করতেন তিনি। তারপর পছন্দের মেয়েকে নিয়ে ধর্ষণ করতেন তিনি। ধর্ষণের পর অন্তঃসত্ত্বা হলে মেয়েদের জোর করে গর্ভপাত করাতেন তিনি। ডেরার এ রকম হাজারো মেয়ের গর্ভপাত করানো হয়েছে। প্রথম দিকে পাঞ্জাবের বাথিন্ডার বিভিন্ন এলাকায় গর্ভপাত করানো হতো। পরে রাম রহিম নিজেই তার ডেরার ভেতর হাসপাতাল চালু করে গর্ভপাত করাতেন।
প্রসঙ্গত গত ২৫ আগস্ট দুই নারী ভক্তকে ধর্ষণের অভিযোগে করা দুটি মামলায় দোষী সাব্যস্ত করা হয় রাম রহিমকে। এরপর নেওয়া হয় রোহতক শহর থেকে ১০ কিলোমিটার দূরের সানোরিয়া কারাগারে। এতে রাম রহিমের সমর্থকেরা পঞ্চকুলা এলাকায় তা-ব শুরু করেন। পুলিশের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষে ৩১ জন নিহত ও ২৫০ জন আহত হন। পরে গত ২৮ আগস্ট রাম রহিমকে দুটি মামলায় ১০ বছর করে ২০ বছরের কারাদ-াদেশ দেন সিবিআই আদালত।
দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ