নিজস্ব প্রতিবেদক:
দারুণ খেলছিলেন, ব্যাটে ধারাবাহিক রান। টেস্টে তামিম ইকবালের সঙ্গে একটা বিশ্বরেকর্ডও গড়ে ফেললেন। এই সংস্করণে দেশের সেরা তিনটি ওপেনিং জুটিতেও আছেন। আর এমন সুদিনে চলতে চলতেই ঘটলো বিপত্তি। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে গত বছরের শেষটায় ওয়েলিংটনে সিরিজের প্রথম টেস্টে ইনজুরিতে পড়লেন ইমরুল কায়েস। এরপর দ্রুত ক্রিকেটে ফিরতে গিয়ে বাড়ে জ্বালা। ভারতে গিয়ে নিউজিল্যান্ডে পাওয়া চোটের জায়গাতেই আবার ব্যথা পেলেন। আর এই সময়টাতেই সর্বনাশ যা হওয়ার হয়ে যায়। ওপেনিংয়ে চমৎকার পারফরম্যান্স করে তামিমের সঙ্গী হিসেবে নিজেকে অনেকটা দাঁড় করিয়ে ফেলেন সৌম্য সরকার। ফেরার পর তাই ইমরুলের জায়গা তিন নম্বরে। কিন্তু ওখানে নিজের ছায়া হয়েই আছেন। এই যে হচ্ছে না কিছুই, তার জন্য পেছনের ইনজুরিকে দোষ দেওয়া ছাড়া আর কিইবা করার থাকে ইমরুলের!
এই বছর শ্রীলঙ্কা সিরিজ থেকেই তিন নম্বর ব্যাটসম্যান হিসেবে পরিচিত হন ইমরুল। এরপর ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষেও একই ভূমিকায়। কিন্তু দুইবারই ব্যর্থ। তাই বুধবার মিরপুরে কথা বলতে গিয়ে হতাশাই ঝরে পড়লো এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের কণ্ঠে, ‘শেষ দুটি টেস্ট আমার জন্য খারাপ হয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকায় ইনজুরি (আসলে নিউজিল্যান্ডে) হয়ে এসেও শ্রীলঙ্কায় ওভাবে পারফর্ম করতে পারিনি। সব মিলিয়ে একটু দুর্ভাগা বলবো নিজেকে। ইনজুরি না হলে যে ছন্দে যাচ্ছিলাম সেই পারফরম্যান্স আরেকটু ভালো হতো। ইনজুরি থেকেও একটু সমস্যা হয়েছে। আমি যেভাবে খেলছি এভাবে খেলা অবশ্যই একটু কঠিন।’
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ১-১ এ ড্র করা বাংলাদেশের ঐতিহাসিক গর্বের সিরিজে চার ইনিংস মিলিয়ে মোটে রান ২১। ০,২,৪,১৫। ওখানে এতো খারাপ করার পর ইমরুলের ব্যাটিং নিয়ে হয়েছে নানা সমালোচনা। কিন্তু সব সমালোচনা উপেক্ষা করে তার উপর আস্থা রেখেছেন নির্বাচকরা। বাউন্সি উইকেটে ভালো খেলার কারণেই নির্বাচকদের সুদৃষ্টি পেয়েছেন ইমরুল। তবে দক্ষিণ আফ্রিকায় কাজটা অনেক কঠিন, জানেন তিনি। বড় চ্যালেঞ্জেই পড়বেন। তবে সে চ্যালেঞ্জ দুহাতে টেনে নিয়েছেন।
‘প্রতিটি সিরিজই আমার জন্য চ্যালেঞ্জিং হয়। আমি চেষ্টা করব… এটাও চ্যালেঞ্জ হিসেবে নেওয়া। বাকিটা আল্লাহর ইচ্ছে। আর আমি নিজেও জানি একটা সিরিজ খারাপ খেললে আমার জন্য পরের সিরিজে চাপ। আমি চেষ্টা করি প্রতিটি সিরিজে রান করার। কখনো সফল হই, কখনো হই না।’ আবার রানে ফিরতে মরিয়া ব্যাটসম্যান বলেন, ‘যে কয়দিন খেলবে সে কয়দিন চেষ্টা করব ভালো খেলার। অন্যথায় কাজটা কঠিন।’
স্বীকার না করলেও ব্যাটিং অর্ডারের পরিবর্তন যে স্বাভাবিক ছন্দে প্রভাব ফেলেছে তা ভালো করেই জানেন ইমরুল। তারপরও নিজের পছন্দকে গুরুত্ব না দিয়ে দলের প্রয়োজনের কথাই ভাবছেন ৩০ বছর বয়সী কুষ্টিয়ার ওপেনার, ‘যেখানে দেবে ওটাই আমার পছন্দের পজিশন। আমার পার্টিকুলার কোনো পছন্দ নেই। মানুষ হিসেবে সব কিছুই পরিবর্তন করতে হয়। একটা মানুষ তো সব সময় একটা ট্র্যাকে ঠিক থাকে না। নিজেকে নিজের সাথে মানিয়ে নিতে হয়।’
দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ