আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
নিজ দেশের সেনাবাহিনীর অত্যাচার, নির্যাতন আর বর্বরতা থেকে প্রাণ বাঁচিয়ে স্রোতের মতো রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। এখন পর্যন্ত সরকারি হিসাব অনুযায়ী গত কয়েকদিনে অন্তত তিন লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী কক্সবাজার ও সীমান্তবর্তী বিভিন্ন এলাকায় আশ্রয় নিয়েছেন। পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের দাবি, শিশু, বুড়ো, নারী কাউকেই নির্যাতন থেকে রেহাই দেয়া হচ্ছে না। তবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, আঞ্চলিক শক্তি এবং তাদের বেসামরিক সরকার রক্তপাতের প্রতিরোধ করার জন্য এখনও শক্তিশালী কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না।
এদিকে এখন পর্যন্ত আরাকান রোহিঙ্গা সালভেশন আর্মির (আরসা) বিরুদ্ধে যুদ্ধের কথা বলে ৩৮৭ জনকে হত্যার বিষয় স্বীকার করেছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। তবে এই ৩৮৭ জনকে তারা আরসা সদস্য বলে দাবি করেছে। এদিকে বিভিন্ন সময় পালিয়ে আসা বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য অপ্রতুল ত্রাণ ও সহায়তার বিষয়টি সামনে চলে এসেছে। বাংলাদেশ শরণার্থীদের আশ্রয় দিলেও তাদের পুরোপুরি দায়িত্ব নেয়া সরকারের পক্ষে সম্ভব না। এর জন্য জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের তড়িৎ পদক্ষেপ ও সহায়তার দাবি জানানো হয়েছে।
তবে জাতিসংঘ বলছে এই মুহূর্তে এই বিপুল সংখ্যক শরণার্থীর দায়িত্ব নেয়া তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। কাতার ভিত্তিক টিভি চ্যানেল আল জাজিরার পক্ষ থেকে জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর’র সঙ্গে কথা বলা হয়। জানতে চাওয়া হয় শরণার্থীদের সহায়তায় তাদের প্রস্তুতির বিষয়ে। তবে বেশ হতাশার সঙ্গে ইউএনএইচসিআর’র পক্ষ থেকে বলা হয়, স্রোতের মতো আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের পুরোপুরি সহায়তা দেয়া তাদের পক্ষে সম্ভব না।
সংস্থাটির মুখপাত্র ভিভিয়ান ট্যান বলেন, এই মুহূর্তে বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সহায়তা করা সম্ভব না। এ অবস্থা দিন দিন আরও খারাপ হচ্ছে। স্রোতের মতো আসছে শরণার্থীরা। শরণার্থীরা আসার পর থেকে কক্সবাজারের বিভিন্ন এলাকায় জাতিসংঘ এবং বিভিন্ন এনজিও প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করে। তবে সেখানে যে পরিমাণ চাহিদা এবং যে হারে মানুষ আসছে তাতে সহায়তা দিয়ে কুলানো সম্ভব হচ্ছে না।
এ মানবিক বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন ট্যান বলেন, ভয়াবহ এক সময় আমাদের সামনে আসছে। এই বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে বড় ফান্ডের দরকার। সেই ফান্ড এবং সহায়তা সংগ্রহে কাজ চলছে। তিনি বিশ্বের বিবেকবান সবাইকে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সহায়তায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
দৈনিকদেশজনতা/ আই সি