২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | সন্ধ্যা ৭:৩৬

সুচির নোবেল কেড়ে নিতে স্বাক্ষর করে ৩ লাখ ৬৫ হাজার মানুষ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চির শান্তিতে নোবেল পুরস্কার কেড়ে নেয়ার দাবিতে এক পিটিশনে ৩ লাখ ৬৫ হাজার মানুষ স্বাক্ষর করেছে। কিন্তু নরওয়ের নোবেল কমিটি এ আবেদনে সাড়া দিচ্ছে না। তারা বলেছে, যাকে একবার নোবেল পুরস্কার দেয়া হয় তা আর ফিরিয়ে নেয়া হয় না। নোবেলজয়ী যে কাজের জন্য নোবেল পেয়েছেন তা-ই তারা ধর্তব্যের মধ্যে রাখে। নরওয়ের অসলোতে নোবেল ইন্সটিটিউটের প্রধান ওলাভ জোলস্টাড বলেছেন, যখন কাউকে একবার নোবেল পুরস্কার দেয়া হয়ে যায় তখন তা আর বাতিল করা একেবারেই অসম্ভব। বার্তা সংস্থা এএফপি’কে উদ্ধৃত করে এ খবর দিয়েছে লন্ডনের অনলাইন দ্য টেলিগ্রাফ।

এতে বলা হয়, চেঞ্জ ডট অর্গ নামের অনলাইনে রোহিঙ্গা নির্যাতনের প্রতিবাদে সুচির নোবেল পুরস্কার কেড়ে নেয়ার পিটিশন করা হয়। বৃহস্পতিবার নাগাদ এতে কমপক্ষে ৩ লাখ ৬৫ হাজার মানুষ স্বাক্ষর করেছে। এতে পরিষ্কার হয়ে গেছে যে, মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর সেনাবাহিনী যে অভিযান পরিচালনা করছে বিশ্বজুড়ে তাতে কিভাবে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ছে। ওই পিটিশনে বলা হয়েছে, নিজের দেশে মানবতার বিরুদ্ধে চলমান অপরাধ বন্ধে কার্যত মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সুচি কিছুই করছে না। সুচিকে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার দেয়া হয় ১৯৯১ সালে। ওই সময় তিনি সামরিক জান্তার হাতে ছিলেন গৃহবন্দি। দীর্ঘ কারাভোগের পর ২০১০ সালে তিনি মুক্তি পান। এরপর নিজ দলের নেতৃত্ব দিতে শুরু করেন। স্বাধীনতার পর প্রথম বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে তিনি সরকার গঠন করেন। কিন্তু রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর তার সেনাবাহিনী অকথ্য নির্যাতন, ধর্ষণ, গণহত্যা, গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দিতে থাকে। এর ফলে বাংলাদেশে শরণার্থীদের ঢল নামে। এর ফলে সুচি নেতৃত্বাধীন সরকার আন্তর্জাতিক সমালোচনার মুখে রয়েছে। বৃহস্পতিবার জাতিসংঘ বলেছে, গত দুই সপ্তাহে কমপক্ষে এক লাখ ৬৪ হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছে। সব মিলে তাদের মোট সংখ্যা আড়াই লাখেরও বেশি। এর অর্থ হলো অক্টোবরে সৃষ্ট সহিংসতার পর রাখাইনের ১০ লাখ রোহিঙ্গার এক চতুর্থাংশের বেশি বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। কিন্তু এ সমস্যাকে অং সান সুচি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করেন। তিনি বলেন, রোহিঙ্গা নির্যাতন নিয়ে ভয়াবহ আকারে মিথ্য খবর প্রচার করা হচ্ছে। তার ভাষায়, এর মধ্য দিয়ে ‘টেরোরিস্ট’দের স্বার্থকে উৎসাহী করা হচ্ছে। ওলাভ জোলস্টাড বলেছেন, আলফ্রেড নোবেলের যে উইল বা নোবেল ফাউন্ডেশনের যে নীতিমালা তাতে পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, চিকিৎসা, সাহিত্য বা শান্তিতে যাদেরকে পুরস্কার দেয়া হয় তা ফেরত নেয়ার কোনো বিধান নেই। তবে এক্ষেত্রে যদি পুরস্কার হস্তান্তরের আগে কোনো ঘটনায় এমন দাবি ওঠে নোবেল কমিটি তা যাচাই করে দেখতে পারে ।

দৈনিকদেশজনতা/ আই সি

প্রকাশ :সেপ্টেম্বর ৯, ২০১৭ ১২:২১ অপরাহ্ণ