২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ভোর ৫:০৩

ঈদে পরিমিত মাংস খান ‘সুস্থ থাকুন’

লাইফ স্টাইল ডেস্ক:

গরুর মাংসে অনেক পুষ্টি থাকার পরও অতিরিক্ত খেলে তা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হয়ে থাকে। গরুর মাংসের ক্যালরি ও পুষ্টি উপাদানের তারতম্য নির্ভর করে রান্নার পদ্ধতির ওপর। এছাড়া গরুর কোন অংশটি খাওয়া হবে তার ওপর অনেক কিছু নির্ভর করে। অতিরিক্ত গরুর মাংস স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর—কারণ গরুর মাংসে থাকে কোলেস্টেরল, ফ্যাট ও সোডিয়াম। কোলেস্টেরল বেড়ে গেলে হৃদরোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়। তাই যাদের রক্তে কোলেস্টেরল বেশি, তাদের অতিরিক্ত গরুর মাংস খাওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত।

গরুর মাংস থেকে অনেক প্রোটিন চলে আসে, তাই যাদের কিডনিতে সমস্যা রয়েছে তাদের অবশ্যই গরুর মাংস এড়িয়ে যেতে হবে। যাদের উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে, তাদেরও গরুর মাংস এড়িয়ে চলা উচিত। এতে উপস্থিত সোডিয়াম রক্তচাপ বাড়িয়ে দেয় বলে, অতিরিক্ত না খাওয়াই ভালো। গবেষণায় দেখা গেছে যারা অতিরিক্ত গরুর মাংস খান, তাদের ক্যানসার ঝুঁকি বেড়ে যায়।

মহিষের মাংসের চেয়ে ছাগল ও খাসির মাংসে ফ্যাটের পরিমাণ বেশি থাকে। তাছাড়া মাংসের চেয়ে মগজ ও পায়াতে ফ্যাট থাকে সবচেয়ে বেশি। শিশু ও গর্ভবতীদের জন্য উপযোগী হলেও যাদের বয়স ৪৫ থেকে ৫৫ তাদের এগুলো খাওয়ার সময় সচেতন হতে হবে।

গরু, মহিষ, ছাগল ও খাসির মাংসে থাকে উচ্চমাত্রার প্রোটিন ও ফ্যাট। যা ডায়াবেটিস, হৃদরোগী ও যাদের রক্তে কোলেস্টরেলের মাত্রা বেশি তাদের রক্তচাপক আরও বাড়িয়ে দেয়। এতে রক্তনালী চিকন হয়ে রক্তচাপ বা প্রেসার বেড়ে যেতে পারে। ফলে স্ট্রোকের ঝুঁকি বেড়ে যায়।

যেকোনো খাবার অতিরিক্ত খেলেই তা স্বাস্থ্যের জন্য অবশ্যই ক্ষতিকর। তাই পরিমিতভাবে সঠিক পদ্ধতিতে গরুর মাংস খেলে নিজেকে অনেক ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করা যাবে এবং এই স্বাদের খাবারটি থেকে ভবিষ্যতে কাউকে বঞ্চিত হতে হবে। মাংস খাওয়ার নিয়ম ঈদের সময় তৈলাক্ত খাবারের পরিমাণ বেশি খাওয়া হয়। তাই খাবারে পর্যাপ্ত সালাদ ও সবজি রাখুন। এতে হজম প্রক্রিয়া সহজ হবে। যাদের রক্তে কোলেস্টরেল বেশি বা ডায়াবেটিস ও হৃদরোগ রয়েছে, তাদের জন্য মাংস রান্নার আগে চর্বি আলাদা করে নিন। রান্নায় সবজি মিশিয়ে তৈরি করুন নতুন খাবার। এতে অনাকাঙ্ক্ষিত ঝুঁকি কমে আসবে।

মোটাতাজা গরু রান্নার ক্ষেত্রে অবশ্যই ভালোভাবে সিদ্ধ করে নিন। গরু মোটাতাজা করতে ব্যবহার করা বিভিন্ন ধরনের ইনজেকশন ও ওষুধ। ভালোভাবে সিদ্ধ না করলে পাকস্থলিতে ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়তে পারে। খাওয়ার পরিমাণপরিমিত সবকিছুই ভালো। খাদ্যাভাসে এটা মেনে চলা জরুরি। ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, রক্তে কোলেস্টরেল ও কিডনি রোগীরা ডাক্তারের পরামর্শ মতো মাংস খেতে পারেন। তেল চর্বিযুক্ত মাংস না খাওয়াই ভালো। এতে বুকে ব্যথা ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়তে পারে।

খাওয়ার পর গরুর মাংস খাওয়ার পর অবশ্যই ব্রাশ দিয়ে দাঁত মাজবেন। নইলে দাঁতের ফাঁকে আটকে থাকা মাংস পঁচে দুর্গন্ধ বের হতে পারে। এছাড়াও দাঁত ও মাড়ির সমস্যা দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা থাকে। মাংস খাওয়ার পর দাঁত ব্রাশ করলে এ সমস্যা কমে আসবে।

পরিপাক হজম শক্তি বাড়াতে খাবারে শাকসবজি ও আঁশজাতীয় খাবার প্রয়োজন। গরু, মহিষ, ছাগল, খাঁসির মাংসে ফাইবার বা আঁশের পরিমাণ অনেক কম। এতে পরিপাকে সমস্যা হতে পারে। যাদের খাবার হজমে সমস্যা তারা খাবারের সঙ্গে পর্যাপ্ত সালাদ ও সবজি রাখতে পারেন। মনে রাখবেন কোমল পানিয় খাবার হজমে কোনো ভূমিকা রাখে না। এ জন্য খাবার তালিকায় আঁশযুক্ত খাবার রাখুন।

এ সময়ে খাবারজনিত কারণে পেটে গুড়গুড় করলে, প্রথমেই খাবার তালিকায় আঁশজাতীয় খাবার যুক্ত করুন। ডাবের পানি ও স্যালাইন পর্যাপ্ত পানি পান করুন। বেশি সমস্যা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ

প্রকাশ :সেপ্টেম্বর ৩, ২০১৭ ৬:৩৯ অপরাহ্ণ