ধর্ম ডেস্ক:
আজ বৃহস্পতিবার পবিত্র হজ। ‘লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা, ওয়াননি’মাতা লাকা ওয়ালমুলক্?, লা শারিকা লাকা’ (আমি হাজির! হে আল্লাহ আমি হাজির! তোমার কোনো শরিক নেই, সব প্রশংসা ও নিয়ামত শুধু তোমারই, সব সাম্রাজ্যও তোমার)।
লাখ লাখ মুসলমানের (হাজী) কণ্ঠের এ ধ্বনিতে মুখরিত হবে আরাফাতের ময়দান। পবিত্র হজ ইসলামের পাঁচ স্তম্ভের একটি। আর্থিক ও শারীরিকভাবে সমর্থ পুরুষ ও নারীর জন্য হজ ফরজ (বাধ্যতামূলক)। লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাব্বাইক— এই তালবিয়া পাঠ করে মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ রব্বুল আলামিনের কাছে নিজের উপস্থিতি জানান দিয়ে পাপমুক্তির আকুল বাসনায় লাখ লাখ নারী-পুরুষ (হাজী) আজ ৮ জিলহজ মক্কা নগরীর অদূরে তাঁবু আচ্ছাদিত মিনা থেকে আরাফাতের ময়দানে সমবেত হবেন। সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করে জিকির-আজকারের মাধ্যমে মহান আল্লাহর ইবাদতে মশগুল থাকবেন। এ সময় পুরুষরা পরিধান করবেন শ্বেতশুভ্র দুই খণ্ড ইহরামের কাপড়। হজের দিনে সারাক্ষণ আরাফাতে অবস্থান করা ফরজ। মূলত ৮ জিলহজ আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করাই হজ।
আজ আরাফাতের ময়দানে খুতবার পর হাজীরা একসঙ্গে জোহর ও আসরের নামাজ আদায় করবেন। তারা সূর্যাস্তের পর সেখান থেকে মুজদালিফায় গিয়ে একসঙ্গে মাগরিব ও ইশার নামাজ আদায় করবেন। আজ রাতে মুজদালিফায় খোলা মাঠে অবস্থান করবেন। সেখান থেকে শয়তানের প্রতিকৃতিতে নিক্ষেপের জন্য প্রয়োজনীয় পাথর (৭০টি) সংগ্রহ করবেন।
পবিত্র হজ পালন করতে মঙ্গলবার রাতে হাজীরা মক্কা থেকে মিনায় পৌঁছান। বিশ্বের প্রায় ১৭২টি দেশের প্রায় ১৫ লাখ ২৩ হাজার ৫২০ জন মুসলমান এবার হজ করছেন। বাংলাদেশ থেকে এ বছর হজ করছেন ১ লাখ ২৬ হাজার ৭৫৮ জন।
কাবা শরিফ থেকে ৯ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে মিনা। মিনা থেকে প্রায় ১৪ কিলোমিটার দূরে আরাফাতের এই দিগন্তবিস্তৃত প্রান্তর। আরাফাত ময়দান দৈর্ঘ্যে ২ মাইল, প্রস্থেও ২ মাইল। এই বিরাট সমতল ময়দানের তিন দিক পাহাড়বেষ্টিত। জাবাল মানে পাহাড়। জাবালে রহমত হলো রহমতের পাহাড়। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) এই পাহাড়ের কাছে দাঁড়িয়ে ঐতিহাসিক ‘বিদায় হজ’-এর ভাষণ দিয়েছিলেন।
আগামীকাল শুক্রবার মুজদালিফায় ফজরের নামাজ আদায় করে হাজীরা মিনায় ফিরে বড় শয়তানকে ৭টি পাথর মারার পর পশু কোরবানি দিয়ে মাথার চুল ছেঁটে (পুরুষরা ন্যাড়া করে) গোসল করবেন। সেলাইবিহীন দুই টুকরা কাপড় বদল করবেন। এরপর স্বাভাবিক পোশাক পরে মিনা থেকে মক্কায় গিয়ে কাবা শরিফ সাতবার তাওয়াফ করবেন। কাবার সামনের দুই পাহাড় সাফা ও মারওয়ায় ‘সাই’ (সাতবার দৌড়াবেন) করবেন। সেখান থেকে তারা আবার মিনায় যাবেন। মিনায় ৯, ১০ ও ১১ জিলহজ তিন দিন ৩টি (বড়, মধ্য, ছোট ) শয়তানকে ২১টি পাথর করবেন। আবার মক্কায় বিদায়ী তাওয়াফ করার পর নিজ নিজ দেশে ফিরবেন।
দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ