নিজস্ব প্রতিবেদক:
নিজের বাল্য বিয়ে ঠেকিয়ে অনন্য সাহসের পরিচয় দেওয়া ও আন্তর্জাতিক সাহসী পুরস্কার প্রাপ্ত ঝালকাঠির সেই শারমিন আক্তার তার মায়ের বিরুদ্ধে আদালতে সাক্ষী দিয়েছেন। রোববার দুপুরে ঝালকাঠির নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-২ এ তিনি এ সাক্ষ্য দেন। আদালতে দাঁড়িয়ে শারমিন ২০১৫ সালের ৬ আগস্ট জোর করে তাকে বিয়ে দেওয়া ও মায়ের বিরুদ্ধে মামলার ঘটনার বর্ণনা দেন। আদালতের অতিরিক্ত সরকারি কৌসুলি এম আলম খান কামাল জানান, সাক্ষীতে শারমিন জানায়, নবম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় ২০১৫ সালের ৬ আগস্ট শারমিনকে চিকিৎসা করানোর কথা বলে তার মা রাজাপুরের বাসা থেকে খুলনায় নিয়ে যান। সেখানে একটি বাসায় মায়ের কথিত প্রেমিক স্বপন খলিফার কক্ষে রাতে শারমিনকে ঢুকিয়ে দিয়ে দরজায় তালা লাগিয়ে দেন তিনি। ৭ আগস্ট শারমিন কৌশলে বাসা থেকে বের হয়ে রাজাপুর চলে আসে। ১৬ আগস্ট সেখান থেকে পালিয়ে শারমিন তার সহপাঠী নাদিরা আক্তারের বাসায় যায়। দুজন মিলে স্থানীয় সাংবাদিকদের সহযোগিতায় রাজাপুর থানায় গিয়ে মা ও তার কথিত প্রেমিকের বিরুদ্ধে মামলা করেন। সাক্ষ্য গ্রহণের সময় আদালতের কাঠগড়ায় স্বপন খলিফা উপস্থিত থাকলেও অসুস্থতার কারণে শারমিনের মা হেনোয়ারা বেগম উপস্থিত ছিলেন না। সাক্ষী গ্রহণের সময় রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত সরকারি কৌসুলি এম আলম খান কামাল এবং আসামিপক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট আবদুর রশীদ শিকদার। শারমিন রাজাপুরের বাগড়ি এলাকার প্রবাসী কবির হোসেনের মেয়ে। বর্তমানে সে ঢাকার ক্যামব্রিয়ান স্কুল অ্যান্ড কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। অনন্য সাহসিকতার জন্য গত ৩০ মার্চ তাকে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক সাহসী পুরস্কার (সেক্রেটারি অব স্টেটস ইন্টারন্যাশনাল উইমেন কারেজ অ্যাওয়ার্ড) দেওয়া হয়।
দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ