নিজস্ব প্রতিবেদক:
ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে বেনাপোল ও শার্শা সীমান্তের বিভিন্ন পথ দিয়ে ভারত থেকে গরু আসছে। আগস্টের প্রথম সপ্তাহে বৈধ পথে ১ হাজার ৬৭০টি গরু ৩২০টি ছাগল এসেছে। তবে অবৈধ পথে কী পরিমাণ গরু আসছে তার হিসাব নেই কারো কাছে। এ সংখ্যাটা বৈধ পন্থার চেয়ে বেশি বলে ধারণা করছেন গরু ব্যবসায়ীরা। এদিকে ভারতীয় গরুর চাপে দেশিয় গরু খামারিরা লোকসানের আশঙ্কা করছেন। বেনাপোল ও শার্শা সীমান্ত এলাকায় ছোট বড় মিলিয়ে প্রায় ৭ থেকে ৮ শত গরুর খামার রয়েছে।
যশোর জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের হিসাব মতে, কোরবানি উপলক্ষে জেলার ৮ উপজেলায় ৬৮ হাজার ২৫টি পশু হৃষ্টপুষ্ট করা হচ্ছে। এরমধ্যে গরু ৩৫ হাজার ৭০০, ছাগল ২৯ হাজার ৩০০ ও ভেড়া রয়েছে ৩ হাজার। আর জেলায় পশুর চাহিদা রয়েছে ৫৫ হাজার। এ জেলার চাহিদা মিটিয়ে ২৯ হাজার গরু এবং ছাগল-ভেড়া মিলে ২৬ হাজার বাইরের জেলায় সরবরাহ করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা।
যশোরের পশ্চিম প্রান্তে ভারতের সীমান্ত। সীমান্তের যেসব স্থানে বেড়া নেই সেই পথে অনায়াসে বাংলাদেশে গরু আসে। এছাড়া বৈধ পথে গরু, ছাগল ও ভেড়া আনার জন্য বেনাপোলে কয়েকটি খাটালের অনুমোদন দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তবে বেনাপোলের পুটখালী, দৌলতপুর শার্শার অগ্রভুলট ও গোগা এই চারটি খাটালে বর্তমানে সীমিত গরু আসছে। কয়েক বছর আগে পুটখালীসহ এসব খাটাল হয়ে প্রতিদিন ৩-৪ হাজার গরু আসতো। বর্তমানে আসছে ১ হাজার করে। তবে এ সংখ্যা দিনদিন বাড়ছে।
বেনাপোল সীমান্ত এলাকার পুটখালী গ্রাম। এখানে ছোট বড় অনেক খামার রয়েছে। ভারতীয় গরু আসায় খামার ব্যবসায়ীরা হতাশায় ভুগছেন। তারা জানান, সারা বছর পর ভারত কোরবানির সময় দেদারছে সীমান্ত দিয়ে গরু প্রবেশ করায় আমাদের ব্যবসা ধ্বংস হচ্ছে। আমরা গরুকে একজন সন্তান যেভাবে লালন পালন করে বড় করে তার চেয়ে বেশি পরিশ্রম করে লালন পালন করে থাকি। এখন ঈদের সময় আমাদের গরুর দাম বাজারে পড়ে যাবে। আমরা সারাবছর ধারদেনা করে গরু যত্ন সহকারে পালন করি বছর শেষে কিছু টাকা পাওয়ার জন্যে।
বেনাপোলের ঘিবা গ্রামের জবেদা খাতুন জানান, সারা বছর গরু লালন পালন করে থাকি কোরবানির সময় কিছু টাকা পাওয়ার আশায়। এ বছর তিনি ১৫টি বড় জাতের গরু পালন করেছে। গোয়াল ঘরে ফ্যানের ব্যবস্থা করতে হয়। ভাল খাবার দেওয়া হয়। গরুর দাম পড়ে গেলে আমাদের এ ক্ষতি আমরা কিভাবে পোষাব।
শার্শার নাভারণ পশু শুল্ক করিডোরের দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা সুমা মনি জানান, বেনাপোল ও শার্শা সীমান্তের চারটি পশুহাট পুটখালী, দৌলতপুর, অগ্রভুলট ও গোগা দিয়ে যে পশু আসে নাভারণ করিডোরে এর ভ্যাট আদায় করা হয়। গড়ে প্রতিদিন ২০০ থেকে ২৫০টি পশু আসছে। ঈদ সামনে রেখে এ সংখ্যা আরো বাড়তে পারে।
দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ