কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:
কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, দুধকুমারসহ অন্যান্য নদ-নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় এখানে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অপরিবর্তিত রয়েছে। এতে করে বন্যার পানিতে ভেসে আসা সাপের ভয়ে অনেকে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন। গত তিন দিনে বন্যার পানিতে ডুবে ও সাপের কামড়ে মৃত্যু হয়েছে ৮ জনের। তাদের সারারাত সাপ আতঙ্কে থাকতে হয়। কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী পরিচালক শফিকুল ইসলাম জানান, গত ১২ ঘণ্টায় সেতু পয়েন্টে ধরলার পানি ১৫ সেন্টিমিার হ্রাস পেয়ে বিপদসীমার ৮৬ সোন্টিমিটার, চিলমারী পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপদসীমার ৮৫ সেন্টিমিটার, নুন খাওয়া পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি ১ সেন্টিমিটার হ্রাস পেয়ে বিপদসীমার ১৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বন্যায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ৯ উপজেলার ৬০ ইউনিয়নের ৭৬৩ গ্রামের প্রায় ৪ লক্ষাধিক মানুষ। ঘর-বাড়ি ছেড়ে বানভাসিরা আশ্রয় নিয়েছে পাকা সড়ক, উঁচু বাঁধ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। চরম দুর্ভোগ বেড়েছে বানভাসিদের। বন্যা দুর্গত মানুষের মাঝে দেখা দিয়েছে খাদ্য ও বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট। এখানে সরকারি-বেসরকারিভাবে ত্রাণ তৎপরতা চাহিদার চেয়ে অপ্রতুল। এর মধ্যে দুর্গম চরাঞ্চল গুলোতে ত্রাণ তৎপরতা নেই বললে চলে। বন্যা দুর্গত চরাঞ্চলের বেশির ভাগ বানভাসি মানুষ ত্রাণ না পাওয়ার অভিযোগ করেছেন।
এ স্থানীয় বানভাসিরা জানান, সদরের হলোখানা ইউনিয়নের খামার হলোখানা আব্দুল খালেকের স্ত্রী জোসনা বেগম বিষাক্ত সাপের কামড়ে মৃত্যু হয়। এরপর থেকে হলোখানা ইউনিয়নের বানভাসিদের সারারাত সাপ আতঙ্কে কাটে। হলোখানা ইউনিয়নের সারডোপ গ্রামের নজরুল ইসলাম (৪৮) জানান, তারা সাপের কামড়ে ওই নারীর মৃত্যুর সংবাদ শোনার পর থেকে আতঙ্কে আছেন। এ জন্য তারা রাতে ঠিক করে ঘুমাতেও পারেন না। ফুলবাড়ী উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের পূর্ব-ধনিরাম গ্রামের বানভাসি আক্কাছ আলী (৪৬) জানান, সাপ ও বিভিন্ন পোকামাকড়ের ভয়ে তারা রাতে ঘুমান না। তিনি বানভাসা ঘরে দুইটি সাপকে মেরেছেন। তাকে প্রতি রাতেই বন্যায় ভেসে আসা সাপের ভয় তাড়া করেন। একই এলাকার ৫ম শ্রেণির ছাত্রী পারভীন আক্তার জানান, আমরা সাপের ভয়ে আছি। সাপের ভয়ে রাতে ঘুমতে পানি না।
দৈনিকদেশজনতা/ আই সি