২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | সকাল ১০:১৪

চাল আমদানিতে বাকি শুল্কও প্রত্যাহার!

নিজস্ব প্রতিবেদক:

দেশে  চাল আমদানিতে আমদানি শুল্ক ২৮ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। তারপরও চালের দামে এর কোনো প্রভাব নেই। এই অবস্থায় চালের দাম নিয়ন্ত্রণে বাকি ১০ শতাংশ আমদানি শুল্কও প্রত্যাহার করার উদ্যোগ নিয়েছে এনবিআর। এনবিআর সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। তথ্যানুযায়ী, চালের আমদানি শুল্ক পুরোপুরি প্রত্যাহার করতে এনবিআরে একটি সুপারিশ মালা পাঠায় খাদ্য মন্ত্রণালয়।

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের ‍সুপারিশের প্রেক্ষিতে এনবিআর এ বিষয়ে একটি খসড়া প্রস্তুত করে সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয়েও পাঠায়। মন্ত্রণালয় থেকে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত আসলে চাল আমদানিতে শুল্কহার শুন্য করে এসআরও জারি করতে এনবিআর। এদিকে গত ৬ আগষ্ট খাদ্য মন্ত্রণালয়ের পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, চাল আমদানিতে বিদ্যমান ১০ শতাংশ শুল্কের ফলে এখনও প্রতি কেজিতে আমদানি মূল্যের সঙ্গে কমপক্ষে ৩ দশমিক ৩০ টাকা শুল্ক যুক্ত হয়।

চাল আমদানিতে সম্পূর্ণ শুল্ক প্রত্যাহার করা হলে আমদানির পরিমাণ আরও বেড়ে যাবে। মিলার, ব্যবসায়ী ও মজুদদারদের মধ্যে মজুদ ধরে রাখার প্রবণতা আরও কমে গিয়ে বাজারদরে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। এতে অভ্যন্তরীণ সংগ্রহ কার্যক্রমে গতি সঞ্চারিত হবে। এর ফলে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ চাল বিদ্যমান সংগ্রহ মূল্যে দেশের অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে সরকারি গুদামে আনা সম্ভব হবে। সুতরাং চালের বাজারদর সহনীয় পর্যায়ে রাখা এবং স্বল্প সময়ে ও সহজতর উপায়ে সরকারি গুদামে চালের মজুদ বৃদ্ধির লক্ষ্যে চাল আমদানিতে শুল্ক সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাহার করা প্রয়োজন।

চিঠিতে আরো বলা হয়, চলতি বোরো মৌসুমে ৭ লাখ মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল ও এক লাখ মেট্রিক টন আতপ চাল সংগ্রহেরে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এ লক্ষ্যে গত ২ মে থেকে সারা দেশে অভ্যন্তরীণ সংগ্রহ অভিযান শুরু হয়। কিন্তু এপ্রিলে হাওর এলাকায় অকাল বন্যার কারণে শুরুতেই অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। চালের বাজারদর সংগ্রহ মূল্যের চেয়ে বেশি হওয়ায় সংগ্রহ অভিযান সফল না হওয়ার আশঙ্কা দেখা দেয়। ভোক্তার স্বার্থে ঊর্ধ্বমুখী চালের বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে সরকারি পর্যায়ে চাল আমদানির উদ্যোগ নেওয়া হয়। বেসরকারি পর্যায়ে চাল আমদানি শুল্ক ২৮ শতাংশ বহাল থাকায় এ ক্ষেত্রে এক ধরনের স্থবিরতার সৃষ্টি হয়। এই পরিস্থিতিতে দেশে চাল প্রস্তুতকারী রাইস মিলার, সচ্ছল কৃষক ও বড় বড় চাল ব্যবসায়ীদের মধ্যে মজুদ প্রবণতা বৃদ্ধি পায়। এতে বাজারে চালের সরবরাহ কমে গিয়ে বাজারদর বাড়তে থাকে।

এ অবস্থায় আমদানি শুল্ক ২৮ থেকে ১০ শতাংশে নামিয়ে আনা হলে বেসরকারি পর্যায়ে চাল আমদানি গতি পায়। চলতি অর্থবছরের মাত্র ২৩ দিনে এক লাখ ১৬ হাজার ৬১ টন চাল আমদানি হয়। এর পাশাপাশি সরকারি পর্যায়ে বিভিন্ন চুক্তির আওতায় চাল আমদানির উদ্যোগ গ্রহণ করায় দেশের চালের বাজারে ইতিবাচক প্রভাব পড়ে।

চিঠিতে বলা হয়, চালের মজুদ বাড়াতে ইতিমধ্যে জি টু জি পদ্ধতিতে ভিয়েতনাম থেকে আড়াই লাখ টন চাল আনার চুক্তি হয়েছে। ভারত, থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার সঙ্গে আলোচনা চলছে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে ২ লাখ টন চাল আমদানির চুক্তি হয়েছে। আরও এক লাখ টনের দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। শুল্ক কমানোয় বেসরকারি পর্যায়ে চাল আমদানি বাড়ছে। প্রতিদিনই সরকারি গুদামে ৪-৫ হাজার টন চাল পাওয়া যাচ্ছে। শুল্ক সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করা হলে আমদানি আরও বাড়বে।

দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ

প্রকাশ :আগস্ট ১৪, ২০১৭ ১:১৭ অপরাহ্ণ