নিজস্ব প্রতিবেদক:
মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে মাঝারি থেকে হালকা বৃষ্টিতে সারাদেশে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। গতকাল থেকে রাজধানীসহ সারাদেশে ঝরছে বৃষ্টি। এই বৃষ্টি আগামী সোমবার পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
শনিবার সকালে আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ এই তথ্য জানান। তিনি বলেন, কয়েক বছর পর পর মুনসুন সক্রিয় হয়। এবারও মুনসুন সক্রিয় হওয়ায় বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এ কারণে আগামী দুইদিন সারাদেশে বৃষ্টি ঝরবে। এরপর থেকে বৃষ্টি কমতে শুরু করবে।
তিনি আরও জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় তেতুলিয়ায় সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। সেখানে ৩২৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এছাড়া সকালে ঢাকায় ৩৪ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানান এই আবহাওয়াবিদ।
গতকাল থেকে চলা বৃষ্টিতে জনজীবনে ভোগান্তি নেমে এসেছে। বিশেষ করে খেটে খাওয়া মানুষগুলো পড়েছেন বেশি বিপাকে। বৃষ্টির কারণে রাজধানীর কিছু পয়েন্টে যানজট দেখা গেলেও রাস্তায় গণপরিবহনের সংখ্যাটা ছিল অনেক কম। তবে সরকারি ছুটির দিন হওয়ায় অন্যান্য দিনের তুলনায় গাড়ির চাপ তুলনামূলকভাবে কম দেখা গেলেও কিছু পয়েন্টে যানজট দেখা গেছে।
বৃষ্টির কারণে অনেক সড়কে কাঁদাপানি জমে গেছে। তবে অন্যান্য দিন অল্প বৃষ্টিতে রাজধানীর অনেক সড়কে হাঁটুপানি দেখা গেলেও দুইদিনের বৃষ্টিতে তেমন কোনো চিত্র চোখে পড়েনি। কাঁদাপানির কারণে গন্তব্যস্থলে পৌঁছাতে অনেকের জুতো-স্যান্ডেল, শার্ট-প্যান্টের বেহাল দশা হয়েছে।
গণপরিবহনের সংখ্যা কম থাকায় বেসরকারি চাকুরে, স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী ও নানা শ্রেণি-পেশার মানুষদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। অনেক কষ্টে গাড়িতে ঠাঁই পেলেও গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত ভাড়া। ২০ টাকার জায়গায় দিতে হচ্ছে ৩০ টাকা। বৃষ্টি ভোগান্তিতে পড়েছেন দৈনিক মজুরিভিত্তিক শ্রমিকরাও।
সকালে অনেক শ্রমিককে মোহম্মদপুর টাউনহল, শিয়া মসজিদ, কারওয়ান বাজার এলাকায় অলসভাবে বসে থাকতে দেখা গেছে। নুন আনতে পান্তা ফুরনো এসব মানুষদের অনেকেই অসহায়ভাবে কাকাভেজা হয়ে দাঁড়িয়ে আছেন।
অফিসের উদ্দেশে বের হয়ে মিরপুর গোলচত্বরে বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন বেসরকারি চাকুরে আতিকুর রহমান। তিনি বলেন, বৃষ্টি শুরু হলেই এই এলাকায় কাঁদাপানি জমে যায়। তাছাড়া মিরপুরের প্রায় প্রতিটি সড়কের এমন অবস্থা যে, এসব সড়ক চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। তিনি বলেন, প্রায় আধা ঘণ্টা দাঁড়িয়ে আছি, এখনো কোনো বাস পাচ্ছি না। তখন অফিসে যাব, কিছুই বুঝে উঠতে পারছি না।
আতিকুরের মতো অনেকেকেই বাসের জন্য অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। মাঝে মাঝে দুএকটি বাস আসলেও সেগুলোতে যাত্রীতে ঠাসা। এজন্য অনেককে বাড়তি টাকা দিয়ে সিএনজি অটোরিকশায় করে গন্তব্যস্থানে যেতে দেখা গেছে।
দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ