নিজস্ব প্রতিবেদক:
ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার ৮টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার স্থানীয় কৃষকেরা এবার কম খরচে নেরিকা ও উফশী আউশের চাষ করে ভালো ফলন পেয়েছেন। এবার উপজেলার ৪৫৫ হেক্টর জমিতে সরকারি প্রনোদনার মাধ্যমে ৫’শ কৃষকের ৫০০বিঘা জমিতে নেরিকা ও উফশী আউশ চাষ হয়। এসব জাতের আউশ চাষে সরকার থেকে সার, বীজ ও নগদ অর্থ প্রদান করা হয়। ফলনও পাওয়া যাচ্ছে অন্য ধানের চাইতে কম সময়ে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে দেশে বি.আর ২১, ২৪, ২৬ ব্রি-ধান ২৭, ৪২, ৪৩, ৪৮, ৫৫, বিনা-৮, নেরিকাসহ বেশ কয়েকটি স্বল্পমেয়াদি ধানের জাত উদ্ভাবিত হয়েছে। এ জাতের ধানগুলো একদিকে যেমন খরা সহিষ্ণু তেমনি অন্যান্য জাতের তুলনায় বড় হওয়ায় সহজে বন্যায় ডুবে না। এমনকি একটানা ২ সপ্তাহ বন্যার পানিতে ডুবে থাকলেও ধান নষ্ট হয় না। এছাড়া এসব জাতের ধানে ভূ-গর্ভস্থ পানি ব্যবহার করে সেচের প্রয়োজন হয় না। বৃষ্টির পানিতেই আউশ মৌসুমে ধান লাগিয়ে ৯০ থেকে ১১৫ দিনের মধ্যে কৃষকরা ধান ঘরে তুলতে পারবে। এতে কৃষকরা হেক্টরপ্রতি ৪ থেকে সাড়ে চার টন পর্যন্ত ফলন পাবে। কৃষকরা নিজেরাই এ ধান বীজ হিসেবে সংরক্ষণ করে পরবর্তীতে আউশ চাষের মৌসুমে জমিতে লাগাতে পারবে। এসব জাতের ধান চাষে সার্বিক সহায়তা দিচ্ছে ইউনিয়ন পর্যায়ে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা। উপজেলার জায়লস্কর ইউনিয়নের বারাহী গোবিন্দ গ্রামের মোখলেছুর রহমান বলেন, আমি পরীক্ষামূলকভাবে ১৫০ শতক জমিতে চাষ করেছি। কয়েক দিনের মধ্যে এসব ধান কাটা হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আশা করি প্রতি কানি (৪০ শতক) জমিতে ৮০ আড়ি ধান পাওয়া যাবে। কৃষক মো. শহীদ বলেন, আমি ৩৬ শতক জমিতে প্রনোদনার আওতায় নেরিকা চাষ করেছি। এতে ১৯ মন ধান পেয়েছি। খরচ হয়েছে প্রায় ৮ হাজার টাকা। উৎপাদিত ধানের মূল্য ১৯ হাজার টাকা। পূর্ব চন্দ্রপুর ইউনিয়নের নয়নপুর গ্রামের কৃষক সেলিম বলেন, আমি প্রনোদনার আউশ ধান করেছি, ফলন মোটামুটি ভালো হয়েছে, পাখি কিছুটা নষ্ট করছে। উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবদল্লাহ আল মারুফ জানান, নেরিকা ও উফশী জাতের আউশ চাষের ফলন খরচের তুলনায় ভালোই হয়েছে। এ বিষয়ে দাগনভূঁঞা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হুজ্জাতুল ইসলাম বলেন, প্রনোদনার আওতায় উপজেলার ৪৫৫ হেক্টর জমি থেকে প্রায় ১৫শ-২ হাজার মেট্রিক টন ধান আশা করা যায়। আগামী দিনে এসব ধানের চাষ পুরো উপজেলায় আরো ছড়িয়ে দেওয়া হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ