নিজস্ব প্রতিবেদক:
২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রথমার্ধের জন্য মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর ফজলে কবির। নতুন মুদ্রানীতিতে ২০১৮ অর্থবছরের জন্য গড় বার্ষিক ভোক্তা মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৫ শতাংশে পরিমিত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। বাংলাদেশ ব্যাংকের জাহাঙ্গীর আলম কনফারেন্স হলে বুধবার দুপুরে ২০১৭-১৮ অর্থবছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ের মুদ্রানীতি ঘোষণা করেন গভর্নর।
বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর বলেন, ‘২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রথমার্ধের মুদ্রানীতিতে ২০১৮ অর্থবছরের জন্য গড় বার্ষিক ভোক্তা মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৫ শতাংশ পরিমিত রাখা হয়েছে। এ ছাড় ৭ দশমিক ৪ শতাংশ প্রকৃত দেশজ উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে মনস্থির করা হয়েছে। এ জন্য প্রণীত মুদ্রানীতিতে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে অভ্যন্তরীণ ঋণের ১৫ দশমিক ৮ শতাংশ ধরা হয়েছে। যার মধ্যে বেসরকারি ও সরকারি খাতের জন্য ঋণ প্রবৃদ্ধি প্রাক্কলন যথাক্রমে ১৬ দশমিক ৩ শতাংশ ও ১২ দশমিক ১ শতাংশ। ব্যাংক ব্যবস্থার বাইরে জাতীয় সঞ্চয় স্কিমের অর্থায়ন সরকারি খাতের জন্য সহজপ্রাপ্য থাকায় ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে বেসরকারি খাতের জন্য ঋণ যোগানের পরিসর প্রশস্থ করা হয়েছে।’
ফজলে কবির জানান, নতুন অর্থবছরের জন্য ব্যাপক মুদ্রা (এম২) এর প্রবৃদ্ধি প্রাক্কলন দাঁড়িয়েছে ১৩ দশমিক ৯ শতাংশ। এ ছাড়া ব্যাপক মুদ্রা যোগান এ মাত্রায় সীমিত রাখার উদ্দেশে রিজার্ভ মানির প্রবৃদ্ধি গড় বার্ষিক ১২ শতাংশ পরিমিত রাখার লক্ষ্য ধরা হয়েছে।
তিনি আরো জানান, ব্যাপক মুদ্রার ওপর নিয়ন্ত্রণ সুষ্ঠু করার জন্য প্রথমবারের মতো ২০১৮ অর্থবছর থেকে রিজার্ভ মুদ্রা প্রবৃদ্ধির পয়েন্ট টু পয়েন্ট লক্ষ্যমাত্রার পরিবর্তে গড় বার্ষিক লক্ষ্যমাত্রা অনুসরন করা হয়েছে।
গভর্নর বলেন, সরকারি রাজস্ব আহরণে ২০১৭ অর্থবছরের ১৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধির জোরালো গতিবেগটি বজায় থাকলে নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন না হওয়ায় ২০১৮ অর্থবছরের মুদ্র্রানীতিতে তেমন কোনো বিঘ্ন সৃষ্টি করবে না।
তিনি বলেন, দেশের উত্তর পূর্ব হাওর অঞ্চলে বিগত অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধে আকস্মিক বন্যায় ফসলহানির কারণে দেশে খাদ্য মূল্যস্ফীতির কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বিদ্যমান। তবে প্রতিবেশী ভারতে ভোক্তা মূল্যস্ফীতি দুই শতাংশের নিচে নেমে আসায় এবং ২০১৭ সালের শুরু থেকে জ্বালানি তেল ও অন্যান্য মুখ্য পণ্যের আন্তর্জাতিক বাজার মূল্য নিম্নমুখী বা স্থিতিশীল থাকায় বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ মূল্যস্ফীতি পরিমিত রাখা যাবে বলে আশা করা যায়।
ফজলে কবির বলেন, রফতানি প্রবৃদ্ধির মন্থরতা এবং রেমিট্যান্স আন্তঃপ্রবাহে নিম্নগামিতার সূত্রে মুদ্রা যোগানের নিট ফরেন এসেট অংশ সংকুচিত হয়ে তারল্য যোগান পরিমিত করেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে রেপো ও রিভার্স রেপো নীতি সুদহার সমূহ পরিবর্তনের প্রয়োজন আপাতত অনুভূত হচ্ছে না। তবে প্রয়োজন হলে তাৎক্ষণিকভাবেই নীতি সুদহারগুলো পরিবর্তন আনা হবে।
দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ