দৈনিক দেশজনতা ডেস্ক:
চলতি বছরে (২০১৭ সাল) সম্ভাব্য বিশ্ব অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হবে ৩ দশমিক ৬ শতাংশ। এ ছাড়া বিশ্ব অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ধারা সঠিক পথে রয়েছে। তবে মধ্যমেয়াদি কিছু সঙ্কট রয়েছে, যা মোকাবেলা করতে হবে। ‘আপডেট টু দ্য ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুক’ শীর্ষক প্রতিবেদনে সোমবার এসব তথ্য জানিয়েছে ইন্টান্যাশনাল মনিটরি ফান্ড (আইএমএফ)। বিশ্ব অর্থনীতির পূর্বাভাস প্রতি তিনমাস পর পর হালনাগাদ করে প্রকাশ করে সংস্থাটি। এর আগে গত এপ্রিলের প্রতিবেদনে ২০১৭ সালে বিশ্ব অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৩ দশমিক ৫ শতাংশের পূর্বাভাস দিয়েছিল সংস্থাটি। এবারের প্রতিবেদনেও তা বহাল রাখা হয়েছে। সংস্থাটি বলছে, বিশ্ব অর্থনীতিতে সঙ্কট রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক জোটের ব্রেক্সিট পরবর্তী অনিশ্চিত দর কষাকষি, যুক্তরাষ্ট্রের বাজেট ও মুদ্রানীতির প্রভাব। এ ছাড়া চীনের ঋণবৃদ্ধি ও ইউরো জোনের ব্যাংকগুলোর স্থিতিশীলতাও বিশ্ব অর্থনীতির জন্য মধ্যমেয়াদি সঙ্কট নিয়ে আসতে পারে। আইএমএফ মনে করছে, আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কিছুটা বেড়েছে। তেলের দাম বৃদ্ধিতে গেল ১৫ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো উত্তোলন কমাতে সম্মত হয়েছে রফতানিকারক দেশগুলো। এ কারণে রাশিয়ার অর্থনৈতিক গতি বাড়বে। দেশটিতে ঋণাত্মক অবস্থান থেকে এবার ১ দশমিক ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধির আশা করা হচ্ছে। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে ভারতের প্রবৃদ্ধি পূর্বাভাস এপ্রিল মাসেরটি বহাল রয়েছে। গত নভেম্বরে নেয়া নোট বাতিলের সিদ্ধান্তের কারণে অভ্যন্তরীণ ভোগ ব্যয় কমেছে দেশটিতে। ২০১৭ সালে ভারতের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ২ হবে বলে পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। তবে ২০১৮ সালে আবার ঘুরে দাঁড়াবে ভারতের অর্থনীতি। সংস্থাটি মনে করছে, ২০১৮ সালে দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হবে ৭ দশমিক ৭ শতাংশ; যা আগে ৭ দশমিক ৬ হবে বলে ধারণা করা হচ্ছিল। তবে আইএমএফের এ প্রতিবেদনে বাংলাদেশ সম্পর্কে কোনো আলোচনা নেই। প্রতিবেদনে ইন্দোনেশিয়া ও থাইল্যান্ডে বেসরকারি বিনিয়োগ কমে যাওয়ায়, পর্যটন খাত ও অভ্যন্তরীণ ভোগ হ্রাস পাওয়ায় প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কমানো হয়েছে। জাপানে এ বছর শূন্য দশমিক ৮ ও আগামী বছর শূন্য দশমিক ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হতে পারে। মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিরতা, আফ্রিকার দেশগুলোর অভ্যন্তরীণ কোন্দল, বিভিন্ন দেশে যুদ্ধের কারণে উদ্বাস্তু ও অভিবাসীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার মতো উপাদানগুলো বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। প্রবৃদ্ধি বাড়বে চীনের। তবে ল্যাটিন আমেরিকার ব্রাজিল এবং আর্জেন্টিনার মতো দেশগুলোর প্রবৃদ্ধিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। প্রসঙ্গত, আইএমএফ গত এপ্রিলে প্রকাশিত ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুকে বাংলাদেশের চলতি অর্থবছর (২০১৬-১৭) মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৯ ভাগ হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে। প্রবৃদ্ধির এ হার পরের বছর (২০১৭-১৮) ৭ শতাংশে উন্নীত হওয়ারও পূর্বাভাস দিয়েছে সংস্থাটি। আইএমএফের প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, এ বছর মূল্যস্ফীতি ৬ দশমিক ৪ শতাংশে উন্নীত হতে পারে, যা পরবর্তী বছর কিছুটা কমে ৫ দশমিক ৮ ভাগে নেমে আসতে পারে। আমদানি-রফতানি বাণিজ্যের ভারসাম্য ঋণাত্মক হওয়ার পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। এ বছর জিডিপির শূন্য দশমিক ৫ ভাগ হতে পরের বছর চলতি হিসাবের ভারসাম্য জিডিপির এক ভাগ ঋণাত্মক বা ঘাটতি হতে পারে।
দৈনিকদেশজনতা/এন এইচ