নিজস্ব প্রতিবেদক:
খুলনায় ব্যবসায়ীকে গ্রেফতারের ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায়ের ঘটনায় জড়িত থাকায় জেলা ডিবি পুলিশের ৫ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বুধবার রাতে পুলিশ সুপারের নির্দেশে তাদের বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়। বরখাস্তরা হলেন— খুলনা জেলা ডিবির এসআই এইচ এম শহিদুল ইসলাম ও এসআই আবু সাইদ এবং এএসআই শাহাজুল ইসলাম, এএসআই মিকাইল হোসেন ও এএসআই কামাল হোসেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার বেতাগ্রাম এলাকায় আব্দুস সালাম গাজীর আব্দুল্লাহ ফুড নামক তিলের খাজার কারখানায় রোববার রাত সাড়ে ১১টার দিকে খুলনা জেলা ডিবির এসআই এইচ এম শহিদুল ইসলাম ও এএসআই শাহাজুল ইসলামসহ ছয় সদস্য অভিযান চালান। এ সময় তারা ফ্যাক্টরিতে গিয়ে লাইসেন্সসহ কাগজপত্র দেখাতে বলেন। কাগজপত্র দেখালেও তাকে হ্যান্ডকাপ পরিয়ে গ্রেফতারের ভয় দেখিয়ে এক লাখ টাকা দাবি করেন তারা।
এর আগে তারা তার তিনটি মোবাইল ফোন কেড়ে নেন। ভয়ে সালাম ৭৭ হাজার টাকা ডিবি পুলিশকে দেন। টাকা নিয়ে পুলিশ দল দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। চলে যাওয়ার সময় বিষয়টি কাউকে না বলার জন্য হুমকি দিয়ে ফোন তিনটি ফেরত দেয়।
স্থানীয় লোকজন ঘটনাস্থলে যেতে চাইলে তাদের বাধা দিয়ে বলা হয়, ভেতরে অপারেশন চলছে সামনে যাওয়া যাবে না। পুলিশের ভয়ে ওই মুহূর্তে ঘটনাস্থলে যেতে পারেনি কেউ। পরে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা ক্ষুব্ধ হলে তাদের তোপের মুখে সোমবার রাতে টাকা ফেরত দিতে বাধ্য হয় ডিবি সদস্যরা।
এদিকে পুলিশ সুপারের নির্দেশে সহকারী পুলিশ সুপার ‘বি’ সার্কেল মো. সজীব খান বিষয়টি তদন্তের জন্য সোমবার সরেজমিনে পরিদর্শন করেন। ওই সময় তিনি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানসহ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে অভিযোগ গ্রহণ করেন। মঙ্গলবার তিনি এ সংক্রান্ত তদন্ত রিপোর্ট পুলিশ সুপারের কাছে দাখিল করেন। রিপোর্টের পরিপ্রেক্ষিতেই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
খুলনা জেলা পুলিশ সুপার মো. নিজামুল হক মোল্লা জানান, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একটি টিম ডুমুরিয়ায় এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে বেআইনিভাবে অর্থ গ্রহণ করে। প্রাথমিক তদন্তে অভিযানে নেতৃত্বদানকারী উপ-পরিদর্শক শহিদুল ইসলামসহ ৫ জনকে সাময়িক বরখাস্ত করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। তদন্ত রিপোর্টের ভিত্তিতে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। এরপর তাদের শোকজ করা হবে। জবাব পাওয়ার পরই চূড়ান্ত পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ