অনলাইন প্রতিনিধি:
নির্যাতন, ঘর থেকে বের করে দেয়া, গর্ভের সন্তানকে নষ্ট করে দিতে পেটে লাথি দেয়ার অভিযোগ নিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড-বিসিবিতে গেছেন জাতীয় দলের ক্রিকেটার মোহাম্মদ শহীদের স্ত্রী ফারজানা আক্তার। রবিবার সকালে মুন্সীগঞ্জের বাড়ি থেকে সন্তানকে কোলে নিয়ে মিরপুরে বিসিবির কার্যালয়ে যান ফারজানা।
শহীদের স্ত্রী বলেন, ‘আমি তার সংসার করতে চাই। বিসিবির মাধ্যমে একটা সমাধান চাচ্ছি। বিসিবির মাধ্যমে কাজ না হলে আইনি পদক্ষেপ নেবেন বলেও জানান তিনি।
ফারজানা জানান, ২০১১ সালের ২৪ জুন বাংলাদেশ জাতীয় দলের ক্রিকেটার মোহাম্মদ শহীদের সঙ্গে আমার পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের প্রথম তিনটি বছর তাদের বেশ ভালো যায়। কিন্তু ২০১৫ সালে খুলনায় পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে অভিষেকের পর তারকাখ্যাতি পেয়ে পাল্টে যান তিনি।
এর আগেই প্রথম সন্তানের জন্ম হয় শহীদ-ফারজানা দম্পতির। আর আন্তর্জাতিক অভিষেকের পর গর্ভে দ্বিতীয় সন্তান আসে এবং সেই সন্তান মেয়ে জেনে শহীদ তাকে নষ্ট করে দিতে চায়। সন্তানকে নষ্ট করার কথা বলে পেটে লাথিও মারেন শহীদ।
ফারজানা বলেন, অত্যাচার সহ্য করেও সন্তান নষ্ট করতে চাননি তিনি। ২০১৬ সালের ২০ আগস্ট প্রসববেদনা শুরু হলে নারায়ণগঞ্জের একটি বেসরকারি হাসপাতালে যান। এরপর ঢাকার সেগুনবাগিচার বারডেম হাসপাতালের ভর্তি জন। ২৪ আগস্ট এখানে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে কন্যাসন্তান জন্ম হয়। এই হাসপাতালে ১৪ দিনে বিল আসে এক লাখ ১০ হাজার টাকা। এই টাকার এক টাকাও পরিশোধ করবে না সাফ জানিয়ে দেন শহীদ। এরপর অলঙ্কার বন্ধক রেখে টাকা পরিশোধ করা হয়।
এরপর হাসপাতাল থেকে দুই সন্তানকে নিয়ে মুন্সীগঞ্জ চলে যান ফারজানা। গত বছর কোরবানি ঈদের আগের দিন ১৩ সেপ্টেম্বর ছেলে এবং ১৫ সেপ্টেম্বর ফারজানা ও দ্বিতীয় সন্তানকেও বাড়িতে নিয়ে যান শহীদ। কিন্তু এরপর এখন পর্যন্ত মেয়ে সন্তানকে মেনে নেননি তিনি।
এর মধ্যে শহীদ কয়েকজন নারীর সঙ্গে পরকিয়া সম্পর্কে জড়িয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন তার স্ত্রী। এক পর্যায়ে একটি মেয়ে গর্ভবতী হয়ে পড়ে বলেও দাবি করেন তিনি। এরপর শহীদ ওই মেয়েকে বিয়ে করার জন্য উঠেপড়ে লাগে বলেও অভিযোগ করেন ফারজানা। এই পর্যায়ে গত ২৩ জুন ঈদের তিন দিন আগে তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়ার কথা জানিয়েছেন তিনি।
দুই সন্তানকে নিয়ে গত ২৩ জুন থেকে মুন্সীগঞ্জের বাবার বাড়িতে চলে আসেন তিনি। এরপর বিভিন্ন গণমাধ্যমে এসব ঘটনার ব্যাপক প্রচার হয়। আর শহীদ পত্নী মুন্সিগঞ্জের স্থানীয় থানায় যোগাযোগ করেন। কিন্তু সেখান থেকে বলা হয়, ঘটনাস্থল নারায়ণগঞ্জের থানায় মামলা করার কথা। এরপর মুন্সিগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য মৃণাল কান্তি দাসের কাছে ছুটে যান ফারজানা। আর তার পরামর্শেই তিনি বিসিবিতে আসার কথা জানিয়েছেন।
ফারজানা বলেন, ‘আমি আমার দুই সন্তান নিয়ে স্বামীর সংসারে ফিরে যেতে চাই এবং স্ত্রীর পূর্ণ অধিকার নিয়ে স্বামীর সংসার করতে চাই। বাবা ছাড়া আমার দুই সন্তানের ভবিষ্যৎ অন্ধকার।’
দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ