এম.এ.জাফর লিটন, সিরাজগঞ্জ থেকে:
গত তিন দিনে প্রায় সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার ১৩ টি ইউনিয়নে বন্যার পানি ৩৭ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বর্তমানে বিপদসীমার ৮৫ সেমি. নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এরই মধ্যে যমুনা নদীর তীরবর্তী গ্রাম ছাড়াও উপজেলার পোতাজিয়া, কায়েমপুর, গাড়াদহ, নরিনা, রুপবাটি, হাবিবুল্লাহনগর, পোরজনা, গালা, বেলতৈল ইউনিয়নের গ্রামগুলির নিম্নাঞ্চলসমূহ বন্যার পানিতে ডুবে গেছে।
এছাড়াও চরাঞ্চলের সিংহভাগ গ্রাম এখন পানির নীচে। উপজেলার বিভিন্ন পয়েন্টের বন্যা নিয়ন্ত্রিত বাঁধ ভেঙ্গে সহস্রাধিক কাঁচা ঘরবাড়ি ডুবে গেছে। অব্যাহত পানি বৃদ্ধির কারণে বিভিন্ন এলাকার কাচা- পাকা সড়ক বন্যার পানিতে ডুবে যাওয়ায় উপজেলা সদরের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। চরকৈজুরী-চরগুধীবাড়ী সড়ক ভেঙে গেছে। যমুনা নদী তীরবর্তী কৈজুরী, জামিরতা এলাকার গুরুত্বপূর্ণ পাড়া মহল্লা , গুপিয়াখালী বাজার বন্যার পানিতে ডুবে গেছে। এছাড়া রাউতারা স্লুইচ গেট সংলগ্ন রিং বাধ বন্যার পানিতে ডুবে যাওয়ায় শাহজাদপুর সহ চলনবিল অঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকা বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে।
অপরদিকে বন্যায় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠে পানি উঠে যাওয়ায় ক্লাস বন্ধ ঘোষণা না করায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের হাটু পানি ভেঙ্গে ক্লাস করতে হচ্ছে। এতে তাদের চরম দূর্ভোগ বেড়েছে। এছাড়া শাহজাদপুরের গো-খাদ্যের তীব্র সংকট সৃষ্টি হওয়ায় দানাদার খাদ্যের দাম বস্তা প্রতি ১০০ থেকে ১২০ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। এদিকে কৈজুরী ইউনিয়নের পাঁচিল পূর্বপাড়া বেপারী পাড়ায় যমুনার ভাঙ্গন প্রকট আকার ধারন করেছে। গত কয়েকদিনে শতাধিক বাড়ী নদীগর্ভে বিলীণ হয়ে গেছে। কৈজুরী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আওয়ামীলীগনেতা সাইফুল ইসলাম তার এলাকার বন্যা দূর্গত ও ভাঙ্গন কবলিত মানুষের জন্য পর্যাপ্ত ত্রাণ, আশ্রয়কেন্দ্র খুলে দেওয়ার জোড় দাবী জানিয়েছেন।
যমুনা চরের সোনাতনী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান জানান, যমুনা চরের সিংহভাগ ঘর-ব্ড়াী এখন পানির নীচে। এদের দূর্ভোগের কমতি নেই। মানুষ ঘরের চালে বসবাস করছে, পরিবার পরিজন, গৃহপালিত পশুপাখি নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। তাই দ্রুত এই ইউনিয়নে জরুরী ত্রান বিতরণ করার জন্য কর্তৃপক্ষের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
এদিকে পল্লী বিদ্যুুৎ সমিতির শাহজাদপুর জোনাল ম্যানেজার জুলফিকার রহমান জানান বন্যার কারনে কায়েমপুর, পোতাজিয়া, রূপবাটি ইউনিনের মধ্যে দিয়ে বৈদ্যুতিক সঞ্চালন লাইন ও খুটিতে সর্তকতার জন্য লাল কাপড় ঝুলিয়ে দেয়া হয়েছে । এ ছাড়া সেচ সংযোগ গুলো বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে ।
দৈনিক দেশজনতা /এমএম