কক্সবাজার প্রতিনিধি:
স্থানীয় প্রসাশনের কড়া নজরদারী ও সরকারের কঠোর অবস্থানের পরও থেমে নেই ইয়াবা বানিজ্য। গ্রেফতার আতংকে উখিয়া টেকনাফের ইয়াবা গড়ফাদাররা অবস্থান বদল করেছে মাত্র। তারা কক্সবাজারে বসে ঠিকই চালিয়ে যাচ্ছে ইয়াবা বানিজ্য। গত রবিবার কক্সবাজার থানা পুলিশের হাতে উখিয়া উপজেলার শীর্ষ ইয়াবা গড়ফাদার স্বরাষ্ট মন্ত্রনালয়ের তালিকাভুক্ত হিজলিয়ার মোহাম্মদ হোসেনের পুত্র বাবুল গ্রেফতার হওয়ার পর বিষয়টি আরো পরিস্কার হলো। এদিন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কক্সবাজার থানা পুলিশের এস,আই শামসুদ্দিনের নেতৃত্বে একদল পুলিশ কক্সবাজারের একটি ভাড়া করা বাসা থেকে ইয়াবা গড়ফাদার বাবুল ও তার অন্যতম সহযোগী ঢাকার মেয়ে নিপা আক্তারকে গ্রেফতার করে। এ সময় বাবুল পুলিশকে জানায় গ্রেফতার আতংকে সে কক্সবাজারে ভাড়া বাসা নিয়েছে। তার মতো উখিয়া টেকনাফের অনেকেই ভাড়া বাসা অথবা নিজস্ব ফ্যাটে কক্সবাজারে থেকে ইয়াবা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে বলে বাবুল জানায়। বাবুল গ্রেফতার হলেও এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে তার অন্যতম সহযোগী ভাই দেলোয়ার, হিজলিয়া এলাকার আক্তার ও মোক্তার মিয়া। বাবুল গ্রেফতারের পর এসব সহযোগীরা গা, ঢাকা দিয়েছে বলে এলাকাবাসী সুত্রে জানা গেছে। এদিকে টেকনাফ ডিগ্রী কলেজের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক শামশুল আলম হত্যা মামলার ২ নাম্বার আসামী টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের খারাংখালী গ্রামের মৃত মোহাম্মদ ইলিয়াছের পুত্র আরেক ইয়াবা গড়ফাদার মহিউদ্দিন কক্সবাজার রুমালিয়ার ছড়া পিটি স্কুল এলাকার একটি ৬ তলা বাড়ীতে বসে গোপনে ইয়াবা বানিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে বলে একাধিক সুত্রে জানা গেছে। কক্সবাজারের কলাতলী এলাকার নিহত মোস্তাক আহামদ প্রকাশ হাজী মুফিজের অন্যতম সহযোগী হিসেবে পরিচিত পাওয়া মহিউদ্দিন পুলিশের গুলাগুলিতে হাজী মুফিজ নিহত হওয়ার পর লাইম লাইটে চলে আসেন। নিয়ন্ত্রন নেন হাজী মুফিজের পুরো ইয়াবা সাম্রজ্যের। হত্যা মামলার আসামী ও ইয়াবা গড়ফাদার হিসেবে পরিচিত পেলেও ক্ষমতাশীন দলের গুটিকয়েক নেতাকে ম্যানেজের মাধ্যমে ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যায় সে। ফলে কক্সবাজারে থেকে ইয়াবা বানিজ্য চালিয়ে নিতে তাকে খুব একটা সমস্যায় পড়তে হয়নি। বর্তমানে টেকনাফ থেকে সাগর পথেই সে বড় বড় ইয়াবার চালানগুলো ঢাকায় পৌছে দিচ্ছে। ঢাকায় ইয়াবা বানিজ্যের দ্বায়িত্বে রয়েছে অধ্যাপক শমশু হত্যা মামলার ১ নং আসামী একই এলাকার জালাল উদ্দিন। অধ্যাপক হত্যা মামলার আসামীরাই এখন ইয়াবা গড়ফাদার। গ্রেফতার এড়াতে এলাকা ছেড়ে তারা কক্সবাজার ও ঢাকায় বসে তারা সিন্ডিকেট গড়ে চালিয়ে যাচ্ছে ইয়াবা বানিজ্য। ইতিমধ্যে তারা কক্সবাজারে একাধিক জায়গা জমি সহ গাড়ী বাড়ীর মালিক বনে গেছে। এতে মামলা তুলে নিতে মামলার বাদী নিহত অধ্যাপকের স্ত্রী দিলসাদ আক্তারকে তারা হুমকি ধমকি দিয়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন অপিরিচিত মোবাইল নাম্বার থেকে হুমকি ধমকি দিয়ে যাচ্ছে। এতে নিহতের পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে নিহতের স্ত্রী জানান। এ ব্যাপারে কক্সবাজার মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ রনজিত বড়–য়ার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, রবিবার উখিয়ার একজনকে ঢাকার এক মহিলাসহ আটক করা হয়েছে। তাছাড়া কক্সবাজারে আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা ইতিমধ্যে ভাড়াবাসায় অবস্থানকারীদের তথ্য নিতে শুরু করেছে। টেকনাফ ও উখিয়ার কেউ থাকলে তারা কি কাজে এখানে এসেছে তা খতিয়ে দেখা হবে।
দৈনিক দেশজনতা /এমএম