আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ভারতে কথিত গরু রক্ষকদের হাতে মানুষ হত্যা নিয়ে অবশেষে সরব হলেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বলেছেন, গরুর মাংস খাওয়ার অভিযোগ এনে মানুষকে হত্যা করা অগ্রহণযোগ্য। কিন্তু বৃহস্পতিবার মোদির এই মন্তব্যের ঘন্টাকয়েক পরই ঝাড়খন্ডে গরুর মাংস বহনের অভিযোগে আরেকজনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। ওই লোকের ভ্যানগাড়ি আগুণে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এ খবর দিয়েছে এনডিটিভি।
বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেন, ‘গরু ভক্তির নামে মানুষ হত্যা গ্রহণযোগ্য নয়। এই দেশে কারোই আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার অধিকার নেই।’ হিন্দুদের কাছে পবিত্র পশু গরু রক্ষা করা দরকার মন্তব্য করে মোদি বলেন, মহাত্মা গান্ধী ও আচার্য ভিনোব ভাবের মতো আর কেউই গরু রক্ষা নিয়ে এত কথা বলেননি। তাই এই সহিংসতা কোনোভাবেই মহাত্মা গান্ধী বরদাশত করতেন না।
মোদির মন্তব্যের পর ঝাড়খন্ডে আরেক লোককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। দুই দিন আগে একই রাজ্যে এক মুসলিমকে আক্রমণ করা হয়। তার বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়া হয়। কারণ, তার বাড়ির পাশে একটি মৃত গরু পাওয়া গিয়েছিল।
ভারতে কথিত গোরক্ষকদের হাতে মুসলিম ও নিুবর্ণের দলিত হত্যাকা-র ঘটনা ক্রমেই বাড়ছে। সমালোচকদের অভিযোগ, শাসক দল বিজেপি ও প্রধানমন্ত্রী এ ক্ষেত্রে নিষ্ক্রিয়। এমনকি ক্ষেত্রবিশেষে এই সহিংসতা উস্কে দেওয়ার জন্য বিজেপি ও এর সংগঠনগুলো দায়ী। অনেক সহিংসতায় সরাসরি বিজেপির অঙ্গসংগঠনগুলোর কর্মীরা জড়িত ছিল। প্রধানমন্ত্রী সর্বশেষে আগস্টে এই সহিংসতার নিন্দা জানিয়েছেন। আর বৃহস্পতিবার গুজরাটে মহাত্মা গান্ধী সবরমতি আশ্রমে আবার নিন্দা জানান।
নিজের রাজ্য গুজরাটে কিছুদিন পরেই ভোট। একদিন আগে ভারতজুড়ে মানুষ এই গণপিটুনি দিয়ে মানুষ হত্যার নিন্দা জানাতে শামিল হওয়ার পর মোদি নিন্দা জানালেন। গত সপ্তাহে, ট্রেনে করে নিজের গ্রামে সাওয়ার পথে ১৬ বছর বয়সী জুনায়েদ খানকে পিটিয়ে হত্যা করা হয় দিল্লিতে। প্রায় ২০ জন লোকের অভিযোগ জুনায়েদের ব্যাগে গরুর মাংস রয়েছে। এরপর তাকে পিটিয়ে ও ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয়। হত্যার পর ট্রেন থেকে তার লাশ বাইরে ছুড়ে ফেলা হয়। এ ঘটনার পরই প্রতিবাদের আয়োজন করা হয় দেশজুড়ে।
দৈনিক দেশজনতা/এন আর