২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ১২:৩২

রাঙামাটি পাহাড় ধস: ঈদের খুশি নেই রাঙামাটিতে

রাঙামাটি থেকে শাহ আলম:

রাঙামাটিতে পাহাড় ধসে ঈদের খুশি নেই দুর্গত লোকজনের। শনিবার সকালে শহরের রাঙামাটি সরকারি কলেজে খোলা আশ্রয় কেন্দ্র গিয়ে দেখা যায়, সেখানে আশ্রিত ৮০টি পরিবারের নারী, শিশু, পুরুষ মিলে প্রায় তিন শতাধিক দুর্গত লোকজন দুর্বিষহ দিনাতিপাত করছেন। শিশুসন্তান কোলে নিয়ে হতাশায় সময় পার করছেন নারীরা।

১৩ জুন পাহাড় পাহাড় ধসের বিপর্যয়ে সদরসহ রাঙামাটিতে ব্যাপক প্রাণহানি ও বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়। ঝুঁকিতে পড়ে পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারী ও আপপাশের ব্যাপক জনগোষ্ঠী। তারা এখন সরকারি আশ্রয় কেন্দ্রসহ বিভিন্ন নিরাপদ আশ্রয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। হারিয়েছেন এবার ঈদ আনন্দ। সরেজমিন একাধিক আশ্রয় কেন্দ্র ঘুরে দেখা যায়, শিশুরা ভূলে গেছে খুশির ঈদ। আর একদিন বাদে যে খুশির ঈদ সেই খেয়ালখুশি নেই কারও।

ওই আশ্রয় কেন্দ্রে থাকা শহরের শিমুলতলীর রূপননগরের ফিরোজা (২৭), জেসমিন (২৬), জোসনা আক্তার (১৮), সুলতানাসহ অনেক নারী বলেন, তাদের ঘরবাড়ি নেই। নেই কোনো সহায়সম্বল। কোথায় কীভাবে কাকে নিয়ে ঈদ করব। প্রতিবছর স্বজনদের নিয়ে সাধ্য অনুযায়ী ঈদের আনন্দ করতাম। এবার তো পাহাড় ধসে বাড়িঘর সব মাটিতে বিলীন। অনেকের বাড়িঘরের আংশিক থাকলেও তা ঝুঁকিতে। ভেঙে যাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ বাড়িঘরে থাকার কোনো পরিস্থিতি নেই। দুর্যোগের পর থেকেই নিরাপদে সরে এসে অবস্থান করছি আশ্রয় কেন্দ্রে। অনেকে আজও এক কাপড়ে।

তারা বলেন, আমাদের জন্য ঈদের কোনো খুশি নেই। কোথায় কীভাবে কী দিয়ে ঈদ করব। শুনছি সরকার নাকি এখানে ঈদ করাবে। কিন্তু নতুন জামাকাপড় কেনার টাকা নেই। আশ্রয় কেন্দ্রে এসে সকাল বিকাল দু’বেলা খাবার, পানি পাচ্ছি। কিন্তু নিজের বাড়িঘরের সুখ তো নেই। এভাবে দিন কাটছে। জানি না আর কতদিন থাকতে হবে। বিধ্বস্ত, ঝুঁকিপূর্ণ বাড়িঘরে ফিরে নতুন করে বসবাস করার কোনো সাহস বা আগ্রহ নেই। ভয়ে ওইসব জায়গায় ফিরে যেতে চায় না কেউ। এখন শুধু সরকারের পুনর্বাসনের আশায় দিন গুনছি। ত্রাণের কাপড় দেয়া হচ্ছে শুনি কিন্তু আমাদের দু’বেলা খাবার দেয়া হলেও পরণের কোনো কাপড় পাইনি। সাহায্যের নগদ টাকাও দেয়া হয়নি।

এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মো. মানজারুল মান্নান বলেন, আমরা প্রশাসনের সরকারি কর্মকর্তা, কর্মচারী, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিসহ দুর্গত লোকজনকে নিয়ে আশ্রয় কেন্দ্রে ঈদ উদযাপন করব। দুর্গত লোকজনের নিরাপদ আশ্রয়সহ তাদের সহায়তায় শহরে খোলা ১৯টি কেন্দ্রে নারী-শিশুসহ প্রায় তিন হাজার মানুষ আশ্রিত রয়েছেন। এসব কেন্দ্রে অবস্থানকারী দুর্গত লোকজনদের জন্য প্রয়োজনীয় ঈদ আয়োজনের প্রস্তুতি রয়েছে। ত্রাণ সহায়তা অব্যাহত রয়েছে। আশ্রিতদের মাঝে নতুন কাপড়ও বিলি করা হচ্ছে।

দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ

প্রকাশ :জুন ২৫, ২০১৭ ১১:১০ পূর্বাহ্ণ