নিজস্ব প্রতিবেদক:
১৪৩৮ হিজরির পবিত্র রমজান মাসের শেষ জুমআ ২৩ জুন। রমজানের শেষ জুমআ যথাযথ পালনে আল্লাহর নৈকট্য অর্জন সহজ হয়। এ যেন তাঁর নৈকট্য লাভের অন্যতম উপায়।
মুমিন মুসলমান রমজান মাসের শেষ জুমআকে বিদায় জানাবে নামাজ আদায় ও ইবাদত-বন্দেগির মাধ্যমে। এমনিতেই জুমআর দিনের ফজিলত ও মর্যাদা অনেক বেশি। আর তা যদি হয় রমজানের জুমআ; তাতে সাওয়াব ও মর্যাদা অনেক বেশি।
সমগ্র মুসলিম উম্মাহর জন্য রহমত বরকত মাগফেরাত ও নাজাত তথা সিয়াম, কিয়াম ও তাকওয়ার উপহার নিয়ে এসেছিল যে রমজান। এখন ভাবনা বিষয় হলো এ রমজানের মুসলিম উম্মাহ কতটুকু ফজিলত ও মর্যাদা অর্জনে সফলতা লাভ করেছে।
রমজান মাসে আমরা তিনটি জুমআ অতিবাহিত করে আজ রমজানের সর্বশেষ জুমআকে বিদায় জানানোর দ্বার প্রান্তে। রমজানের বিদায়ী জুমায় মুমিন মুসলমানের লক্ষ্য হওয়া উচিত হলো কুরআন নাজিলের মাসে কুরআনকে হৃদয়ে ধারণ করে আমলি জিন্দেগি গঠন করা।
কারণ এ রমজানে মানুষের সংবিধান হিসেবে কুরআন নাজিল হয়েছে। আর রমজান এবং জুমআ উভয়টিই উম্মতে মুহাম্মাদির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তাই রমজান ও শেষ জুমআর যথাযথ মর্যাদা ও গুরুত্ব উপলব্ধি করে তার অধিকার বা হক পালন করা জরুরি।
জামআতুল বিদা:
জুমাআতুল বিদা বলা হয় পবত্রি রমজান মাসের শেষ জুমআ`কে। এমনিতেই জুমআ`র দিনটি সপ্তাহের দিনগুলোর মধ্যে অধিক ফজিলতের দিন। তারপর আবার রমজানের শেষ দশকের মর্যাদা ও গুরুত্ব অত্যাধিক। তাই রমজানের শেষ জুমআর ফজিলত বেশি হওয়াই স্বাভাবিক।
তাছাড়া জুমআ`র নামাজ সম্পর্কে হজরত সামুরাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত আছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, `তোমরা জুমআর নামাজে উপস্থিত হও এবং ইমামের নিকটবর্তী হয়ে দাঁড়াও। কেননা যে ব্যক্তি জুমআর নামাজে সবার পেছনে উপস্থিত হবে, জান্নাতে প্রবেশ ক্ষেত্রেও সে সবার পেছনেই পড়ে থাকবে। (মুসনাদে আহমদ)
জুমআর দিনটিকে মুমিন মুসলমানের জন্য সাপ্তাহিক ঈদ হিসেবে গণ্য করা হয়। তাই এ দিনের ফজিলত ও মর্তবা অনেক বেশি।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, সূর্যোদয় হওয়ার সবগুলো দিনের মধ্যে সর্বাপেক্ষা উত্তম ও শ্রেষ্ঠ হলো জুমআ`র দিন।
এ জুমআ`র দিনেই হজরত আদম আলাইহিস সালামকে আল্লাহ তায়ালা সৃষ্টি করেছেন এবং জুমার দিনেই তাকে জান্নাত দান করেন এবং জুমার দিনেই তাকে জান্নাত থেকে এই দুনিয়ায় প্রেরণ করেন এবং কিয়ামতও এই জুমার দিনেই অনুষ্ঠিত হবে। (মুসলিম)।
মূল কথা হচ্ছে-
জুমআর দিনের ইবাদত ও নামাজ মুসলিম উম্মার জন্য এক অতিশয় মর্যাদা ও ফজিলতপূর্ণ নির্দেশিত ইবাদত। বহু মুসলমান একত্রিত হয়ে আল্লাহর সম্মুখে বিনীতভাবে সিজদায় অবনত হওয়ার এবং নিজেদের মধ্যে পারস্পরিক ঐক্য অধিকতর মজবুত করার জন্য এটি একটি সামষ্টিক ও সামাজিক অনুষ্ঠান। তাই রমজানের সর্বশেষ জুমআয় রহমত বরকত কল্যাণ ও মাগফেরাত লাভে নিজেদেরকে আত্মনিয়োগ করি।
পরিশেষে…
রমজানের শেষ দশকের শেষ জুমআ বা জুমআতুল বিদার নামাজ আদায় করে অফুরন্ত ছাওয়াব, রহমত, বরকত মাগফিরাত এবং জাহান্নামের আগুণ থেকে নিষ্কৃতি লাভের জন্য সর্বাগ্রে মসজিদে উপস্থিত হওয়া আবশ্যক।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে রমজান ও জুমআতুল বিদার ফজিলত ও মর্যাদা লাভে যথা সময়ে মসজিদে যাওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।
দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ