২১শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ৮:৫১

শীতে নাকাল জনজীবন

জয়পুরহাট সংবাদদাতা : টানা শৈত্যপ্রবাহে নাকাল হয়ে পড়েছে জয়পুরহাটের জনজীবন। বিনা প্রয়োজনে ঘর থেকে কেউ বাহিরে পা রাখতে পারছেন না। তবে সবচয়ে বেশি বেকায়দায় পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ।

দুবেলা কাজ না করলে দু’মুঠো অন্ন জোটে না এমন মানুষরা শীতের প্রকোপে কুকরে গেছেন। প্রচণ্ড শীতের কারণে ঠাণ্ডাজনিত রোগের রোগীর ভীড় বাড়ছে হাসপাতালে। বিশেষ করে ঠান্ডাজনিত রোগে শিশু ও বয়স্ক রোগীর ভীড় বেড়েছে হাসপাতালে।

বৃহস্পতিবার থেকে হঠাৎ করেই জয়পুরহাটে শীত জেঁকে বসেছে।  এই কয়দিন সূর্যের দেখা মিললেনি।  সোমবার সকাল থেকে পুরো আকাশ মেঘাচ্ছন্ন। সেই সঙ্গে কনকনে বাতাস শীতের তীব্রতা আরো বাড়িয়েছে।

ছিন্নমূল মানুষরা সকাল সন্ধ্যা আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করছেন। শহরে মানুষের আনাগোনা নেই বললেই চলে। ভীড় বেড়েছে শহরের হকার্স মার্কেটের বিভিন্ন দোকানগুলোতে। স্বল্প দামে শীতের কাপড় মেলায় নিম্নআয়ের মানুষরা দোকানগুলোতে ভীড় করছে।

সদর উপজেলার ঘোনা পাড়ার কৃষক আক্কাস আলী জানান,‘শীতে হাত-পা ঠাণ্ডা হওয়ার পরও থেমে নেই কৃষি কাজ। শীতের তীব্রতা উপেক্ষা করে সকাল থেকেই মাঠে আলু ক্ষেতের পরিচর্যা করছেন তারা। ’

শহরের পাচুর মোড়ের পান দোকান রাসেল হোসেন বলেন, ’সকাল বেলা ঠাণ্ডার কারণে দোকানে আসতে পারি না, আবার ঠাণ্ডার কারণে সন্ধ্যার পর দোকানে বসে থাকা যায় না।

আমরা গরীব মানুষ। অভাবের তারনায় দোকোনে ছুটে আসলেও বিকাল হতে না হতে কাস্টমার শূন্য হয়ে যায়। আবার এনজিওর কিস্তি আছে। কী করবো কিছুই ভেবে পাচ্ছি না।’

শাপলা নগর এলাকার হামিদা বেগম বলেন, এই শীতে আর জীবন বাঁচে না। এখন পর্যন্ত একখানা গরম কম্বল পাই নাই।  শীতে আমাদের জীবন আর চলে না।

এই এলাকার সাহেরা বেগম ও সালেহা বেওয়া জানান, গরম কাপড় কেনার সাধ্য তাদের নেই। তাই এই শীতে খুব কষ্ট হচ্ছে।

রেল স্টেশন এলাকার ফাতেমা বেওয়া বলেন, ‘আমরা গরীব মানুষ। গরম কাপড় কেনার হাঙ্গে (আমাদের) সাধ্য নাই। সরকারও হামাঙ্গো (আমাদের) দিকে দ্যাখে (দেখে) না। আপনারা যদি পান তাহলে হামাঙ্গো (আমাদের) একখান করে গরম কম্বল দেন।

সোমবার ভোরে জয়পুরহাটে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানান জয়পুরহাট জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাকির হোসেন।

তিনি বলেন, গত পাঁচদিন ধরে সূর্যের দেখা মেলেনি। তাপমাত্রাও ওঠা-নামা করছে। দিনভর কনকনে ঠাণ্ডার পর বিকালেও কুয়াশা কমে না। আর সন্ধ্যার পর তো কথাই নেই। জেলায় শীতার্ত মানুষের মাঝে ৩০ হাজার কম্বলও শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। এখনও অনেক মজুদ আছে, কোনো সমস্যা হবেনা।

প্রকাশ :ডিসেম্বর ২৩, ২০১৯ ১১:৫৯ পূর্বাহ্ণ