স্বাস্থ্য ডেস্ক:
হিট স্ট্রোক কেন হয় এ সম্পর্কে আমাদের অনেকেরই সুস্পষ্ট কোনো ধারণা নেই। তাই প্রথমেই জানা দরকার হিট স্ট্রোক কী এবং কেন হয়।
হিট স্ট্রোক কী?
হিট স্ট্রোক হচ্ছে দেহের তাপমাত্রা বৃদ্ধ্বি পেয়ে সৃষ্টি হওয়া এক প্রকার জটিলতা। গরমের সময়ে এই মারাত্মক স্বাস্থ্যগত সমস্যার সৃষ্টি হয়।
চিকিৎসা শাস্ত্র অনুযায়ী, প্রচণ্ড গরম আবহাওয়ায় শরীরের তাপ নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা নষ্ট হয়ে শরীরের তাপমাত্রা ১০৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট ছাড়িয়ে গেলে তাকে হিট স্ট্রোক বলে।
স্বাভাবিক অবস্থায় রক্ত দেহের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে। কোনো কারণে শরীরের তাপমাত্রা বাড়তে থাকলে ত্বকের রক্তনালি প্রসারিত হয় এবং অতিরিক্ত তাপ পরিবেশে ছড়িয়ে দেয়। প্রয়োজনে ঘামের মাধ্যমেও শরীরের তাপ কমে যায়। কিন্তু প্রচণ্ড গরম ও আর্দ্র পরিবেশে বেশি সময় অবস্থান বা পরিশ্রম করলে তাপ নিয়ন্ত্রণ আর সম্ভব হয় না। এতে শরীরের তাপমাত্রা দ্রুত বিপৎসীমা ছাড়িয়ে যায় এবং হিট স্ট্রোক দেখা দেয়।
হিট স্ট্রোকের লক্ষণগুলো কী:
১.ঘাম বন্ধ হয়ে যায় ২. ত্বক শুষ্ক ও লালচে হয়ে যায় ৩. নিশ্বাস দ্রুত হয় ৪. নাড়ির স্পন্দন ক্ষীণ ও দ্রুত হয়।
৫. রক্তচাপ কমে যায় ৬. খিঁচুনি, মাথা ঝিমঝিম করা, অস্বাভাবিক আচরণ, হ্যালুসিনেশন, অসংলগ্নতা ইত্যাদি।
৬. প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যায়।
৭. রোগী শকেও চলে যায়। এমনকি অজ্ঞান হয়ে যেতে পারে।
হিট স্ট্রোক প্রতিরোধে করণীয়:
১. তীব্র রোদ এড়িয়ে চলার চেষ্টা করতে হবে। প্রয়োজন ছাতা কিংবা অন্যান্য রোদ প্রতিরোধী সরঞ্জাম (যেমন: হ্যাট, ক্যাপ) ব্যবহার করা যেতে পারে। অর্থাৎ যা আপনার শরীরের বেশিরভাগটাই ঢেকে রাখবে, তেমন জিনিস অবশ্যই সঙ্গে রাখুন।
২. প্রচুর পরিমাণে পানি খান। বাইরে বের হলে সঙ্গে সবসময় পানির বোতল রাখুন। কাজের ফাঁকে ফাঁকে প্রচুর পানি পান করতে হবে। বেশি ঘেমে গেলে স্যালাইন, শরবত, জুস ইত্যাদি খাওয়া যেতে পারে।
৩. দিনে একাধিক বার গোসল করা যেতে পারে।
৪. ঢিলে-ঢালা হালকা সুতির কাপড় পরিধান করাই নিরাপদ।
৫. বেশি শারীরিক কসরত করবেন না।
৬. ক্যাফেইন, অ্যালকোহল জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলুন।
৭. স্বাস্থ্যকর খাবার খান। তেলে ভাজা খাবার যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন।
৮. যারা নিয়মিত মানসিক রোগের ওষুধ, উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ, ইনসুলিন, অ্যান্টিহিস্টামিন গ্রহণ করেন তাদের গরমের সময়টাতে চিকিৎসকের পরামর্শ মত চলা উচিত।
দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ