২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ১:২৬

বাল্যবিয়ে থেকে রক্ষা পেল এসএসসি পরীক্ষার্থী মালা

ভোলা প্রতিনিধি:

ভোলায় কিশোরী ক্লাব, প্রশাসন ও সাংবাদিকদের হস্তক্ষেপে বাল্যবিয়ের হাত থেকে রক্ষা পেল দশম শ্রেণীর ছাত্রী মালা বেগম (১৫)। মঙ্গলবার দুপুরে মালার গায়ে হলুদের পর রাতে রাজাপুর ইউনিয়নের প্রবাসী সবুজের সাথে বিয়ে হওয়ার কথা ছিল তার। খবর পেয়ে রাতেই পৌর সভার ৭ নং ওয়ার্ডের ‘জবা ক্লাবের’ সদস্য সুমি ও চৈতির মাধ্যমে স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীর সহায়তায় প্রশাসনের হস্তক্ষেপে এই বাল্যবিয়ে বন্ধ করা হয়। ভ্রাম্যমাণ আদালত এসে ‘১৮ বছরের আগে মালার বিয়ে নয়’ এই মর্মে মুচলেকা নিয়ে বাল্যবিয়ের হাত থেকে তাকে রক্ষা করে। এদিকে, মালার সহপাঠীরাও চায় সে যেন পড়াশোনা চালিয়ে যায়।

জানা গেছে, ভোলা সদর উপজেলার আলীনগর ইউনিয়নের চর ছিপলী গ্রামের কৃষক মো. হাছান ও ফুল রানী বেগমের ৩ মেয়ের মধ্যে দ্বিতীয় মালা বেগম (১৫)। চলতি শিক্ষাবর্ষে সে মনেজা খাতুন মাধ্যমিক গার্লস স্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষা দেয়ার জন্য ফরম ফিলাপ করেছে। ফরম ফিলাপের একদিন পরই বিয়ের পিঁড়িতে বসতে যাচ্ছিল মালা বেগম। কিন্তু তার সহপাঠী ও কিশোরী ক্লাবের সদস্যরা স্কুলটির সহকারী শিক্ষক শচিন্দ্র দাশের সহায়তা নিয়ে স্থানীয় প্রশাসনকে এ বাল্যবিয়ের খবর দেয়।

খবর পেয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত প্রতিনিধি সহকারী কমিশনার (ভূমি) রুহুল অমিন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। ভ্রাম্যমাণ আদালতের উপস্থিতি টের পেয়ে বিয়ে বাড়ির সবাই সটকে পড়ে। এ সময় স্থানীয়দের সহায়তায় তাদেরকে আদালতের সামনে আনা হয় এবং ১৮ বছরের আগে মালাকে বিয়ে দেওয়া হবে না এমন মুচলেকা নেয়া হয়। এ সময় বিয়ের জন্য তৈরি প্যান্ডেল প্রশাসনের হস্তক্ষেপে ভেঙ্গে দেয়া হয়। পরে পরিবারের লোকজনকে বাল্য বিবাহের কুফল সম্পর্কে বুঝানো হয়। এতে মালার পরিবার ভুল বুঝতে পেরে আদালতের কাছে ক্ষমা চায়।

ভ্রাম্যমাণ আদালত প্রতিনিধি রুহুল অমিন বলেন, মেয়ের বয়স আঠারো বছর না হওয়ায় তার পরিবার ও স্থানীয়দের সামনে ওই বিয়ে ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে। মেয়ের পরিবারের কাছ থেকে মুচলেকা নেয়া হয়েছে যে, আঠারো বছর পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত তারা মেয়েকে বিয়ে দেবে না। যদি কোন নকল কাগজের মাধ্যমে বিয়ে দেয়া হয় কিংবা চেষ্টা করা হয় তাহলে বাল্য বিবাহ আইন অনুযায়ী তাদের শাস্তি দেয়া হবে।

দৈনিকদেশজনতা/ আই সি 

প্রকাশ :নভেম্বর ৮, ২০১৭ ৩:৫৪ অপরাহ্ণ