২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | বিকাল ৩:৩৬

সাপে কাটলে করণীয়

লাইফ স্টাইল ডেস্ক:

টানা বর্ষণ আর ভারত থেকে নেমে আসা উজানের পানিতে ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়েছে দেশের উত্তর ও মধ্যঞ্চল। বন্যার দুর্যোগের মধ্যে সাপের উপদ্রব বড় আতঙ্কের নামে। ইতিমধ্যে খবর পাওয়া গেছেসাপের কামড়ে একজনের মৃত্যুর। সাপে কামড় দিলে অনেকে ওঁঝার কাছে দৌড়ে যান। অজপাড়াগাঁয়ে এখনো রয়ে গেছে এমন কুসংস্কার। কামড়টি বিষাক্ত সাপের না হলে কারিশমা দেখিয়ে বাহবা কুড়ায় ওঁঝা। আর কামড়টি বিষাক্ত সাপের হলে মারা যায় আক্রান্ত ব্যক্তি, তখন দোষ পড়ে নিয়তির। সাপে কাটলে সময়মতো ব্যবস্থা নিলে বেঁচে যায় মূল্যবান প্রাণ। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে দ্রুত ভুক্তভোগীকে নিয়ে যেতে হবে হাসপাতালে।

সাপে কাটলে প্রথমেই দংশিত স্থানটি ভালোভাবে পরীক্ষা করে দেখতে হবে, ওটা বিষধর সাপের কি না। কারণ, বিষধর সাপের কামড়ের ক্ষত জীবনের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। কামড় দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিষ ক্ষতের মাধ্যমে রক্তনালিতে প্রবেশ করে সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে।

সাপে কাটলে করণীয়
১. সাপে কাটা রোগীর ক্ষেত্রে প্রথমেই যেটা করতে হবে সেটা হল রোগীকে সাহস যোগানো। কারণ, এতে আক্রান্ত ব্যক্তি খুবই ভয় পেয়ে যায়। তাকে শান্ত রাখতে হবে।

২. দংশিত স্থানটি পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।

৩. সাপে কাটলে দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। তাই রোগীকে ওই স্থানেই শুইয়ে দিন। রোগীর নড়াচড়া সম্পূর্ণ বন্ধ রাখতে হবে, যাতে বিষ তাড়াতাড়ি ছড়িয়ে না পড়ে।

৪. সাপ যদি হাতে বা পায়ে কামড় দেয় তাহলে বাঁধন দিতে হবে। দংশিত স্থানের কিছুটা ওপরে দড়ি বা হাতের কাছে যা পান, তা দিয়েই বেঁধে ফেলুন। তবে বাঁধনটা যেন অস্থিসন্ধিতে যেমন কনুই, কবজি বা গোড়ালি এবং গলা বা মাথায় না হয়। যে দড়ি বা কাপড় দিয়ে বাঁধবেন তা যেন চওড়ায় দেড় ইঞ্চি হয়, কখনো তা যেন সরু সুতোর মতো বা রাবার ব্যান্ডের মতো না হয়।

বাঁধনটি যেন খুব বেশি শক্ত না হয়। বাঁধনটি এমনভাবে দিতে হবে যেন একটা আঙুল ওই বাঁধনের মধ্য দিয়ে যেতে পারে। যদি বাঁধনটি শক্ত হয়, তাহলে ঢিলা করে দেবেন, তবে কখনোই তা খুলে ফেলবেন না। বাঁধনটি দেওয়ার উদ্দেশ্য হলো রক্ত চলাচল বন্ধ রাখা। তবে বাঁধনটি একটানা ২০ মিনিটের বেশি একভাবে রাখবেন না। প্রতি ১০ মিনিট অন্তর তা আলগা করে দিতে হবে।

৫. রোগীকে কিছু খেতে বা পান করতে দেওয়া যাবে না। বিশেষ করে অ্যালকোহল জাতীয় পদার্থ।

৬. আক্রান্ত স্থানের ওপর এবং আশপাশে ব্লেড দিয়ে কেটে দেয়া-মুখে করে বিষাক্ত রক্ত বের করার চেষ্টা থেকে বিরত থাকা। আক্রান্ত স্থান কার্বলিক এসিড দিয়ে পুড়িয়ে দেয়া বা গরম রড দিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা না করা।

এছাড়া কামড়ের জায়গায় থুথু, ঘাসের রস, গোবর বা মাটি, কাঁচা ডিম, চুন- এসব কিছুই লাগানো যাবে না। এতে ইনফেকশন হয়ে রোগীর জীবনহানি ঘটতে পারে।

৭. প্রাথমিক চিকিৎসার পর রোগীকে দ্রুত নিকটতম হাসপাতালে কিংবা স্থাস্থ্যকেন্দ্রে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হবে, যেখানে অ্যান্টিভেনম মজুদ রয়েছে। প্রয়োজনে রোগীকে টিটেনাস বা ধনুষ্টঙ্কারের প্রতিষেধক দিতে হবে।

দৈনিকদেশজনতা/ আই সি 

প্রকাশ :আগস্ট ১৫, ২০১৭ ৬:০১ অপরাহ্ণ