স্পোর্টস ডেস্ক:
ফিরে ফিরে আসছে ২০০৭ বিশ্বকাপ। যে টুর্নামেন্টে ভারতকে হারিয়ে দিয়েছিল বাংলাদেশ। তার পরিণামেই তো প্রথম রাউন্ড শেষে বিদায় ভারতের। আবার ভাবনায় ২০১৫ সালের সিরিজ জয়। কি দাপটেই না দেশের মাটিতে ভারতকে ওয়ানডে সিরিজে হারিয়ে দিলো বাংলাদেশ। ওগুলো প্রেরণা। আরো প্রেরণা আসলে এই চলমান চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। যে আসরে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে নিউজিল্যান্ডকে অবিশ্বাস্যভাবে হারালো বাংলাদেশ। ওই জয়ের পথ ধরেই আরেকটু শঙ্কা পেরিয়ে আইসিসির কোনো আসরের প্রথম সেমি-ফাইনাল খেলা। ভারতের বিপক্ষে আজ বিকাল সাড়ে তিনটায় সেই লড়াই। ফাইনালে ওঠার লড়াই। বিরাট কোহলির বর্তমান চ্যাম্পিয়ন দলও ছেড়ে দেওয়ার পাত্র নয় মোটেও।এবারের আসরের প্রস্তুতি ম্যাচে ভারতের কাছে যা তা রকম বাজে হারের স্বাদ পেয়েছে টাইগাররা। ভারতের পেস শক্তির জোর ওখানেই দেখেছে সবাই। সেই জোরের সাথে বিশ্বমানের ব্যাটিং ভারতকে এবারের আসরের অন্যতম ফেভারিট বানিয়ে রেখেছে। যদিও প্রাক টুর্নামেন্ট ফেভারিট তারা, তারপরও গ্রুপ পর্বের এক হার কোহলিদের কোণঠাসা করেছিল। আতঙ্কের সেই প্রহর পেরিয়ে শেষ ম্যাচের জয় তাদের তুলে এনেছে সেমি-ফাইনালে।
এই আসরে রোহিত শর্মা, শিখর ধাওয়ানের জমাট ওপেনিং জুটির ওপর বড় ভরসা তাদের। বিরাট কোহলি অপ্রতিরোধ্য। এমএস ধোনিও নেতৃত্ব ছেড়ে ব্যাটিংয়ে ঝড় তুলছেন। যুবরাজ সিং তো ক্ল্যাসিক। আর আছে উমেশ যাদব, জসপ্রিত বুমরাহ, হার্দিক পান্ডিয়া ও ভুবনেশ্বর কুমারের বৈচিত্র্যময় পেস অ্যাটাক। যেটিকে এই আসরের সেরাও বলা যেতে পারে। স্পিনার রবীন্দ্র জাদেজা কিংবা রবিচন্দ্রন অশ্বিনরা কতোটা প্রমাণিত তা সব প্রতিপক্ষেরই জানা।কিন্তু টাইগারদের কখনো হেলা ফেলা করতে পারবে না কেউ। বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ের ছয় নম্বর দল। তামিম ইকবাল একটুর জন্য টানা দুই সেঞ্চুরি মিস করেছেন। কিন্তু আছেন তুখোড় ফর্মে। শেষ ম্যাচে রান পাননি। তাতে কি? তিনি ভয়ঙ্কর। সৌম্য সরকার আর সাব্বির রহমান এখনো বলার মতো রান পাননি। কিন্তু নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে রূপকথার জয়ে সাকিব আল হাসান ও মাহমুদউল্লাহর সেঞ্চুরি ঢুকে পড়েছে ক্রিকেট ফোকলোরে। মুশফিকুর রহীম প্রথম ম্যাচে সেঞ্চুরির চেয়ে দামী ৭৯ রানের ইনিংস খেলার পর কিছুটা ম্রিয়মাণ। তারও নিশ্চয়ই মনে ভাসছে ২০০৭ বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে সেই উইনিং শটটা। ওই একটি শট দেশের ক্রিকেট ইতিহাসে কতোটা অমলিন হয়ে আছে তা সবার জানা।মাশরাফি তাদের বেশি করে আড়াল করে রাখছেন, সমর্থন দিচ্ছেন যারা এখনো পারফর্ম করতে পারেননি। আবার যারা পারফর্ম করছেন এবং করেছেন তাদের আবারো দায়িত্ব নেওয়ার ডাকও দিয়েছেন বুধবারের সংবাদ সম্মেলনে।
বাংলাদেশের পেস আক্রমণেও আছে বৈচিত্র্য। মাশরাফির নিখুত বোলিং খুব বিষ ছড়ায় না। তবে কার্যকারিতার দিক দিয়ে পিছিয়ে নয়। মোস্তাফিজুর রহমান খুব ভালো করতে পারেননি। একটি মাত্র উইকেট এখনো। কিন্তু ২০১৫ সিরিজে তার কাটারেই তো সিরিজ হেরেছিল ভারত। সেই কাটার ফিরিয়ে আনার চেষ্টা ফিজের মাঝে থাকবে ভারতের বিপক্ষে সেমিতে। তাসকিন আহমেদ আগের ম্যাচের পারফরমার। কোহলিদের সাথে পুরনো শত্রুতা ভিন্ন অ্যাকশনের পেসার রুবেল হোসেনের। দুই আগ্রাসী পেসারের যোগফলেও দারুণ কিছুর সম্ভাবনা। সাকিব বল হাতে কিছুটা বিবর্ণ হলেও তিনি বিশ্বের সেরা অল রাউন্ডার। আর মোসাদ্দেক হোসেন ব্যাটের বদলে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে বল হাতে হিরো। সব মিলিয়ে এই দলটা অন্যরকম।সেই দলের ষোলো কোটি ভক্ত এখন এজবাস্টনে আরেকটি গর্জনের অপেক্ষায়। বাংলাদেশ পারবে তো?
দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ
Daily Deshjanata দেশ ও জনতার বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর

