পাবনা সংবাদদাতা:
পাবনার সাঁথিয়া খাদ্য গুদামে সরকারী গম সংগ্রহে নানা অনিয়ম এবং দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে । সরকারী নিয়ম না মেনে তারা কৃষকদের কাছ থেকে গম সংগ্রহ না করে ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের কাছ থেকে উৎকোচের বিনিময়ে গম সংগ্রহ করছে। এতে করে গমের ন্যায্য মূল্যে থেকে বঞ্চিত হচ্ছে প্রকৃত গম চাষীরা ফলে সরকারের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ব্যহত হচ্ছে ।
অভিযোগে জানা যায়,গুদাম ইনচার্জ টনপ্রতি ৪ হাজার টাকা করে উৎকোচ নিয়ে কতিপয় সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের আমদানী করা নিম্নমানের গম ১০ চাকার বড় গাড়ীতে করে নিয়ে আসছে। সরেজমিন দেখা যায়, গুদাম ইনচার্জ দাড়িয়ে থেকে ১০ চাকার গাড়ী থেকে গম গুদামে রাখছেন শ্রমিকেরা। সাংবাদিক আনলোড করা অবস্থায় ঐ ট্রাকের ছবি তুলতে গেলে সেখানে ম্যানেজ করার জন্য এগিয়ে আসেন ওই অফিসের জনৈক্য কর্মচারী। তিনি বার বার বাধা প্রদান করেন ছবি তুলতে।
জানাগেছে টন প্রতি ৪ হাজার টাকা করে উৎকোচ নিয়ে এসব নিম্নমানের গম সংগ্রহ করছে স্থানীয় সিন্ডিকেট ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা কর্মচারিরা। আর এই উৎকোচের টাকার ভাগ প্রশাসন থেকে শুরু করে আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা পর্যন্ত পেয়ে থাকেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
পাবনা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিস সুত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে সাঁথিয়া উপজেলায় ১ হাজার ৬শত টন গম সংগ্রহের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করা হয়। আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত চলবে এই গম সংগ্রহের অভিযান।
সরকারী খাদ্য গুদামে নিয়মনুযায়ী কৃষি উপকরণ সহায়তা কার্ড রয়েছে এমন কৃষকরা ৫০ কেজি থেকে ৩ টন পর্যন্ত গম খাদ্য গুদামে দিতে পারবেন। প্রতি কেজি গম সংগ্রহের মূল্য ধরা হয়েছে ২৮ টাকা। উপজেলার কিছু অসাধু ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন ভাবে কৃষকদের কাছ থেকে কার্ড সংগ্রহ করে সেই কার্ড দিয়ে গম সরবরাহ করছেন। কোন প্রকৃত কৃষক খাদ্য গুদামে এখন পর্যন্ত ১ কেজি গমও সরবরাহ করতে পারেনী।
সুত্র জানায়, উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার বিভিন্ন গ্রাম থেকে কৃষকের তালিকা করার কথা থাকলেও সেখানে কোন নিয়ম না মেনে ২/১একটি গ্রাম থেকে সিন্ডিকেটের নিজস্ব লোকজনের নাম তালিকায় দেওয়া হয়েছে।
সাঁথিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রঞ্জন কুমার প্রাং এক অভিযোগে জানান, উপজেলা খাদ্য অধিদপ্তর থেকে আমার নিকট তালিকা চাওয়া হলে আমরা যেসব কৃষকের কৃষি উপকরণ সহায়তা কার্ড আছে তাদের তালিকা দেই। কিন্তু দেখা গেছে যে তালিকায় গম ক্রয় হচ্ছে সেখানে তাদের নাম নেই।
সাঁথিয়া উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা আলিউল কবির ( অতিঃদাঃ) জানান, গম ক্রয়ে কেউ যদি অনিয়ম করে তবে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে আইননানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
এ বিষয়ে সাঁথিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাহাঙ্গীর আলমের নিকট জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের জানান, গম ক্রয়ে কোন অনিয়ম হচ্ছে না। ১০ চাকার ট্রাকে করে গম সরবরাহের বিষয়ে তিনি বলেন,সেটা কৃষকের ব্যাপার তারা কিভাবে ডেলিভারী দিবে।
দৈনিক দেশজনতা /এমএম