নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাঙামাটিতে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা তছনছ হয়ে রয়েছে। দুদিন ধরে জেলায় বিদ্যুৎ নেই। পাহাড় ধসে খুঁটি উপড়ে যাওয়ায় তার ছিঁড়ে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। সোমবার দিবাগত রাত ৩টা থেকে বিদ্যুৎহীন থাকা শহরে বুধবার সকাল পর্যন্ত বিদ্যুতের দেখা মেলেনি। অবশ্য সকাল থেকে শহরের বিভিন্ন স্থানে ছেঁড়া তার ও উপড়ে যাওয়া খুঁটি স্বাভাবিক করতে কাজ করছেন বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মীরা।
শহরের রিজার্ভ বাজার এলাকার বাসিন্দা উষা রানী বলেন, ‘গত দুদিন ধরে বাসায় বিদ্যুৎ নেই। সোমবার রাত ১২টার পর বিদ্যুৎ কিছুক্ষণ ছিল, কিন্তু যাওয়া-আসা করেছে বারবার। খাওয়ার পানি পর্যন্ত তুলতে পারছি না, রান্না করার পানিতো দূরের কথা।’
গর্জনতলী এলাকার বাসিন্দা ডানোশা ত্রিপুরা বলেন, ‘মোমবাতি জ্বালিয়ে আমাদের রাত কাটাতে হচ্ছে। মোবাইল ফোন ও ইলেকট্রনিক্স সামগ্রীও চার্জ করতে পারছি না। পাহাড় ধসে হতাহতের খবর নেওয়ারও উপায় নেই এখন আমাদের।’
রাঙামাটি বিদ্যুৎ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সবুজ কান্তি মজুমদার জানান, প্রবল বর্ষণে সৃষ্ট পাহাড় ধসে রাঙামাটির বিভিন্ন স্থানে বৈদ্যুতিক খুঁটি উপড়ে গেছে এবং তার ছিঁড়ে গেছে।
তিনি বলেন, ‘সোমবার বিকাল থেকেই বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মীরা কাজ করে যাচ্ছেন। আশা করছি, আবহাওয়া ঠিক থাকলে সন্ধ্যার মধ্যেই শহরে বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারব।’
এদিকে রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মানজারুল মান্নান জানান, পাহাড় ধসের কারণে রাঙামাটির সড়ক যোগাযোগ সম্পূর্ণরূপে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ফলে ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ পার্শ্ববর্তী জেলা বান্দরবান ও খাগড়াছড়ির সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
তিনি জানান, এ অবস্থায় বিদ্যুৎ সরবরাহ ফিরিয়ে আনা ও পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোর সঙ্গে রাঙামাটির যোগাযোগ ব্যবস্থা সচল করার ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। অন্যদিকে বুধবার সকাল থেকেই রাঙামাটির উপজেলাগুলোতে নৌযান চলাচল সচল হয়েছে।
উল্লেখ্য, সোমবার মধ্যরাত থেকে মঙ্গলবার ভোর পর্যন্ত চট্টগ্রাম, রাঙামাটি ও বান্দরবানের বিভিন্ন স্থানে পাহাড় ধসে ও গাছচাপা পড়ে কমপক্ষে ১৩৭ জন নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে রাঙামাটিতে ১০১ জন, চট্টগ্রামে ৩০ জন আর বান্দরবানে ৬ জনের মৃত্যু হয়। রাঙামাটিতে নিহতদের মধ্যে সেনাবাহিনীর দুই কর্মকর্তাসহ চার সেনা সদস্যও রয়েছেন।
দৈনিক দেশজনতা/ এমএইচ