২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | সন্ধ্যা ৬:০৮

শত বছর আগে সময়ভ্রমণ করেছিলেন যিনি!

নিজস্ব প্রতিবেদক:

সময় পরিভ্রমণের কথা এখনও কল্পকাহিনী হলেও অষ্টাদশ শতকেই এক বিজ্ঞানী এর সম্ভাবনা ও সাফল্যের দাবি করেছিলেন। বিজ্ঞানী নিকোলা টেসলা ১৮৯৫ সালে বলেছিলেন, তিনি একই সঙ্গে অতীত ও ভবিষ্যতের ঘটনাবলী দেখতে পারতেন। তার এই কথাকে অবশ্য কেউ পাত্তা দেয়নি। যেমনটি দেয়নি তার অন্যসব আবিষ্কারে ব্যাপারেও। যার কিছু কিছু আজকের অত্যাধুনিক প্রযুক্তি হিসেবে দাবি করা হয়।
নিকোলা টেসলা’র এসি বিদ্যুৎ তরঙ্গের বিষয়টি বাদ দিলেও আজকের যে উন্নত ওয়াইফাই প্রযুক্তি, সেটি সম্পর্কে কিন্তু আগেই ধারণা দিয়েছিলেন টেসলা। এমনকি বৈদ্যুতিক তার ছাড়াও যে বিদ্যুৎ সরবরাহ সম্ভব টেসলার সেই আবিষ্কার নিয়ে এখনও বিজ্ঞানীরা পরীক্ষা নিরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছেন।

মহাকাশে যোগাযোগ এবং যাতায়াত নিয়েও নিকোলা টেসলার নিজস্ব ধ্যান-ধারণা ছিল। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল মহাকাশে রেডিও তরঙ্গের মাধ্যমে বার্তা গ্রহণ ও প্রেরণ পদ্ধতি। তিনি এমন এক রেডিও তরঙ্গ নিয়ে গবেষণা করছিলেন যা পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল ভেদ করে মহাকাশের অনেক দূর পর্যন্ত পৌঁছে যাবে।

আর ফিলাডেলফিয়া এক্সপেরিমেন্ট নামে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী সময় পরিভ্রমণের যে বিশেষ পরীক্ষা চালায়, তার পেছনেও নিকোলার সূত্র কাজ করেছে বলে কোনো কোনো বিজ্ঞানী দাবি করে থাকেন। দুর্ঘটনাবশত সেই পরীক্ষা সফল হলেও কিভাবে তা হল আজও তা রহস্য। আবার কারও কারও মতে, পরীক্ষার পুরো বিষয়টি ধামাচাপা দেয় মার্কিন সেনাবাহিনী।

কিন্তু ফিলাডেলফিয়া পরীক্ষায় যে সফলতা পাওয়া সম্ভব এমন দাবি টেসলা আগেই বলে গিয়েছিলেন। এমনকি চৌম্বক আবেশ সৃষ্টির মাধ্যমে শক্তির কর্মক্ষমতা বহুগুণে বৃদ্ধি সম্ভব বলেও জানিয়েছিলেন তিনি। বিদ্যুতের ক্ষমতা অতিমাত্রায় বৃদ্ধির মাধ্যমে টেসলা এক অজানা দ্বার উন্মোচন করেছিলেন বলেও কোনো কোনো বিজ্ঞানী দাবি করেন।

তাদের দাবি, সেই অজানা দ্বার দিয়েই তিনি সময়কে অতিক্রম করেছিলেন। এমনকি ভবিষ্যতে দেখা অনেক প্রযুক্তি সম্পর্কেও নিকোলা পরে গবেষণা এবং পরিচয় করিয়ে দেন বলে দাবি বিজ্ঞানীদের। অবশ্য সেসব আবিষ্কার সম্পূর্ণই তার ব্যক্তিগত ছিল। এসব আবিষ্কার নিয়ে তিনি কারও সঙ্গে কথাও বলতে আগ্রহী ছিলেন না। পাছে বিষয়টি অসাধু ব্যক্তিদের গোচরে আসে!

কেননা টেসলা জানতেন, সময় ভ্রমণের বিষয়টি জানাজানি হলে তা পৃথিবীতে ঘোর অমঙ্গল বয়ে আনতে পারে। ১৮৯৫ সালে তিনি এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন ৩৫লাখ ভোল্টের সমপরিমাণ বিদ্যুৎ প্রবাহের মাধ্যমে এমন এক দরজা উন্মুক্ত হতে পারে যা দিয়ে মহাকাশ এবং সময়কে ভ্রমণ সম্ভব। নিউ ইয়র্ক হেরাল্ডের এক প্রতিবেদক সেই সাক্ষাৎকারটি নিয়েছিলেন।

সেই সাক্ষাৎকারে নিকোলা টেসলা আরও বলেন, তিনি নিজে এই পরীক্ষা চালিয়ে সফল হন। ফলে তিনি বর্তমানে বসেই অতীত ও ভবিষ্যত দেখতে পারেন। যদিও তার মতে বর্তমান বলে কিছু নেই। যা আমরা বর্তমান বলছি তার অর্ধেক নিকট অতীত আর বাকিটা নিকট ভবিষ্যত।

একটি রেস্টুরেন্টে বসে সেই সাংবাদিক নিকোলার সাক্ষাৎকারটি নেন। পরে সেই সাক্ষাৎকারটি নিউইয়র্ক হেরাল্ডে প্রকাশও হয়। প্রতিবেদককে নিকোলা বলেন, সেই পরীক্ষা সফল হলেও অতিমাত্রায় বিদ্যুৎ প্রবাহের কারণে তিনি সাময়িক পঙ্গুত্ব বরণ করেন। হয়তো বিপদেই পড়তেন যদি তার সহকারি তাকে উদ্বার না করতেন। তিনি মারাও যেতে পারতেন।

সাংবাদিককে সেই পরীক্ষা সম্পর্কে নিকোলা বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছিলেন। যার অনেকটাই বুঝতে ব্যর্থ হন সেই প্রতিবেদক। কিন্তু এর বহুবছর পর ১৯৪৩ সালে ফিলাডেলফিয়া পরীক্ষায় নিকোলার বর্ণিত পদ্ধতিই অবলম্বন করা হয়। অর্থাৎ প্রচণ্ড শক্তিধর বিদ্যুৎ আবেশ সৃষ্টি করা হয়। আর তাতে পরীক্ষাটি দুর্ঘটনাবশত সফলও হয় বলে দাবি করেছিল প্রত্যক্ষদর্শীরা।

দৈনিক দেশজনতা/ এমএইচ

 

প্রকাশ :জুন ১৩, ২০১৭ ১২:৫২ অপরাহ্ণ