নিজস্ব প্রতিবেদক:
তীব্র ঝড়ো হাওয়া তাড়িত জলোচ্ছ্বাসে সম্পূর্ণ ডুবে গেছে কক্সবাজারের উপকূল। বিশেষ করে দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়ার অধিকাংশ এলাকা এখন পানির নীচে। ইতোমধ্যে দ্বীপের অনেক ঘরবাড়ি তলিয়ে গেছে। ভেসে গেছে সহায় সম্পদ। কিনারাহীন হয়ে পড়েছে দ্বীপবাসী।
লঘুচাপে রোববার বিকেল থেকে কক্সবাজারে বৃষ্টি শুরু হয়। এরপর সন্ধ্যা থেকে প্রচ- ঝড়ো হাওয়া বইতে থাকে। বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে কক্সবাজার। লঘুচাপের কারণে সৃষ্টি হচ্ছে জলোচ্ছ্বাসের। উপকূলের নীচু এলাকা তলিয়ে যায় পানিতে। ইতোমধ্যে ৩ থেকে ৪ ফুট উচ্চতার ঢেউয়ে নীচু এলাকার স্থাপনা অথবা ফসলের মাঠে পানি উঠে যায়।
কুতুবদিয়া উপজেলার আলী আকবর ডেইল ইউনিয়নের পশ্চিম আলী আকবর ডেইল, কাহার পাড়া, কাজীর পাড়া, কিরন পাড়া, চৌধুরী পাড়া, পন্ডিত পাড়া, তেলি পাড়া, হায়দার বাপের পাড়া, পূর্ব তাবালেচর, পশ্চিম তাবালেরচর, জেলে পাড়া এবং বড়ঘোপ ইউনিয়নের মুরালিয়া, রোমাই পাড়া এলাকায় গত রাত হইতে দ্বীপের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া বৈরী আবহাওয়া এবং সামুদ্রিক বড় জোয়ারে বেড়িবাঁধ বিলীন হয়ে কয়েক হাজার পরিবার গৃহহীন হয়ে গেছে। অধিকাংশ ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। দ্বীপের মানুষগুলো স্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সাইক্লোন শেল্টারে আশ্রয় নিয়েছে। পানির ধাক্কায় দ্বীপের বেড়িবাঁধ বিলীন হয়ে গেছে। গত বছর থেকে বেড়িবাঁধের যে অংশ ভাঙ্গা ছিল তা পুনঃনির্মাণ না করায় ব্যাপক এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এটিএম নুরুল বশর চৌধুরী জানান, রোববার মধ্যরাত ও সোমবার সকালের বৃষ্টিপাত, উচ্চ জোয়ার এবং বৈরী আবহাওয়ার ফলে ডুবে গিয়েছে কুতুবদিয়ার আলী আকবর ডেইলের ১, ২, ৩ ও ৭নং ওয়ার্ড এবং উত্তর ধুরুং এর অধিকাংশ এলাকা। বেড়িবাঁধ ভাঙ্গার ফলে অতীতের মত এবারও ঘরবাড়ি হারিয়ে পথে বসেছে অনেক পরিবার। তাদের অধিকাংশই এখন আশ্রয় নিয়েছে সাইক্লোন শেল্টারে।
উপজেলা চেয়ারম্যান দুঃখ করে বলেন, প্রতি বছরের ন্যায় এবারও কেটে যাবে ঝড়-জলোচ্ছাস। কিন্তু কাটবে না তাদের ভাগ্য? বিষয়টি তিনি জেলা প্রশাসনকে অবহিত করেছেন বলেও জানান।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কুতুবদিয়া দ্বীপের ৪০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের মধ্যে প্রায় ৩০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ বিধ্বস্ত হয়েছে। এ ভাঙন বেড়িবাঁধ এলাকা দিয়ে জোয়ারের পানি লোকালয়ে ঢুকে পড়েছে। এতে উত্তর ধুরুং, আলী আকবর ডেইল, বড়ঘোপ ইউনিয়নে জোয়ারের পানিতে ব্যাপক এলাকা প্লাবিত হয়েছে। উত্তর ধুরুং ইউপি চেয়ারম্যান আ স ম শাহরিয়ার চৌধূরী বলেন, বিগত ৪ বছর ধরে উত্তর ধুরুং এলাকার কাইছারপাড়া, চুলœারপাড়া, চরধুরুং, নয়াকাটা, আকবরবলী পাড়া, ফয়জানির বাপের পাড়া, উত্তর সতর উদ্দিনসহ ১০টি গ্রাম জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে।
এসব এলাকায় পাউবোর প্রায় ১২ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ বিধ্বস্ত থাকায় শত শত পরিবার জোয়ারের নোনা জলে ভেসে গেছে। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন বলেন, কুতুবদিয়ার খুব খারাপ অবস্থা। আমি জেনেছি। এখনো কোন সাহায্য পাঠানো সম্ভব হয়নি। স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
দৈনিক দেশজনতা/ এমএইচ