দলের নেতাকর্মীদের শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর । মঙ্গলবার (২৪ মার্চ) সন্ধ্যায় গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ের সামনে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে সাংবাদিকদের সামনে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় এ আহ্বান জানান তিনি।
ফখরুল বলেন, আমরা আলোচনা করবো। দলের নেতারা এসেছেন, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে পরামর্শ করে আমরা দলীয় সিদ্ধান্ত জানাবো। তবে, করোনাভাইরাসের কারণে নেতাকর্মীদের স্বাস্থ্য সচেতন হতে আহ্বান জানান বিএনপির মহাসচিব। তিনি বলেন, এখন করোনা ভাইরাস আক্রমণের এই সময়ে দলের নেতাকর্মীরা শান্ত থাকবেন। কেউ যেন আক্রান্ত না হন খেয়াল রাখবেন, শান্ত থাকবেন। এই মুহূর্তে স্বাস্থ্যের প্রতি যত্নবান হবেন।
খালেদা জিয়াকে ছয় মাসের শর্তসাপেক্ষে মুক্তির সরকারি সিদ্ধান্তের বিষয়ে ফখরুল বলেন, দেশনেত্রীর মুক্তি নিয়ে সারাদেশের মানুষ উদ্বিগ্ন ছিল। তারা কিছুটা স্বস্তি পাবেন, অন্তত ছয় মাসের জন্য হলেও তিনি মুক্ত থাকবেন। তবে ব্যক্তিগতভাবে চিন্তিত এই জন্য, দেশের বাইরে যেতে না পারলে তার চিকিৎসার কী হবে। সে সুযোগ নেই দেখলাম।’ তবে বিএনপির মহাসচিব জানান, তারা নেতাদের সঙ্গে ও আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।
প্রসঙ্গত, বিএনপির কারাবন্দি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে শর্তসাপেক্ষে ছয় মাসের জন্য মুক্তি দেওয়ার সুপারিশ করেছে সরকার। মঙ্গলবার (২৪ মার্চ) আইনমন্ত্রী আনিসুল হক তার নিজ বাসায় সংবাদ সম্মেলন করে বলেছেন, বিএনপির কারাবন্দি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে প্রধানমন্ত্রীর নির্বাহী আদেশে শর্তসাপেক্ষে ছয় মাসের জন্য মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে খালেদা জিয়া ঢাকায় নিজ বাসায় থেকে চিকিৎসা গ্রহণ করবেন। দেশের বাইরে যেতে পারবেন না। সরকার মানবিক কারণে সদয় হয়ে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারা (উপধারা-১) অনুযায়ী মুক্তির ব্যবস্থা করা হয়েছে।
খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপগুলো কী—জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব মো. শহীদুজ্জামান মঙ্গলবার বিকালে বলেন, এরই মধ্যে আমরা খালেদা জিয়ার মুক্তির ফাইল হাতে পেয়েছি। এখন আমরা এ বিষয়ে একটি সারসংক্ষেপ তৈরি করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে উপস্থাপন করবো। মন্ত্রীর অনুমোদনের পর সে ফাইল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হবে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অনুমোদনের পর তাকে মুক্তির জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে কারা কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে। এরপরই তিনি কারাগার থেকে মুক্তি পাবেন।
মঙ্গলবারের মধ্যেই খালেদা জিয়া মুক্তি পাচ্ছেন কিনা জানতে চাইলে শহীদুজ্জামান বলেন, মুক্তির ফাইলের পুরো প্রক্রিয়া শেষ করা আজ সম্ভব হবে না। তবে আশা করি আগামীকালের (বুধবার) মধ্যেই সেই প্রক্রিয়া শেষ করা যাবে।
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, সরকারের নির্বাহী আদেশে খালেদা জিয়ার মুক্তির ব্যবস্থা করার বিষয়টি কারারক্ষীদের মাধ্যমে ইতোমধ্যে তাকে মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে কারাগারে রয়েছেন খালেদা জিয়া।