করোনা মোকাবিলায় দেশকে আংশিক বা পুরোপুরি লক ডাউন এবং জরুরি অবস্থা ঘোষণার পরামর্শ দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকনের সাথে করোনা মোকাবিলায় এক বৈঠকে এই পরামর্শ দেন সংস্থাটির বিশেষজ্ঞরা।
শনিবার (২১ মার্চ) রাজধানীর বনানীতে নিজ বাসভবনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, যুক্তরাষ্ট্রের কমিউনিকেবল ডিজিস কন্ট্রোল এন্ড প্রটেকশন (এসডিসিপি) এর প্রতিনিধিদের সাথে এক বৈঠকে বসেন মোহাম্মদ সাঈদ খোকন।
বৈঠকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ডা. বার্নার্ড জুরস রানা, জরুরি গণ স্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান ডা. এল সাক্কা হাম্মান, সিডিসিপি’র যুক্তরাষ্ট্রের কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ ডা. মাইকেল ফ্রিডম্যান, প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এ বি এম আবদুল্লাহ, ডিএসসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শরীফ আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে সাঈদ খোকন সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচিত মেয়র হিসেবে জনগণের জান-মাল রক্ষার উদ্দেশ্যে তাদের সাথে এই বৈঠক করি আমি। তারা যে পরামর্শ দিয়েছেন, তা হচ্ছে দেশে লক ডাউন অবস্থা তৈরি করা। পুরোপুরি না হলেও অন্তত আংশিক লক ডাউন তৈরি করা। একই সাথে জরুরি অবস্থা জারি করা।
‘আমরাও দেখেছি যেসব দেশে লক ডাউন করা হয়েছে বা জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে সেখানে নতুন আক্রান্তের বিষয়টি নিয়ন্ত্রণে আছে। নতুন করে সংক্রমণ কম হয়েছে। আমরা তাদের জানিয়েছি এবং আমরাও সিদ্ধান্ত নিয়েছি, তাদের এই পরামর্শগুলোকে আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে পেশ করব। কারণ, সরকার প্রধান হিসেবে তিনিই শুধু এই সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।”
খোকন আরও বলেন, ‘এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় দুইভাবে কাজ করতে হবে। এক, সরকার তার পদক্ষেপ নেবে যেটি সরকার নিচ্ছে। আর দুই, আমাদের জনগণকে সচেতন হতে হবে।’
এসময় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ডা. বার্নার্ড জুরস রানা বলেন, ‘এসময় সবচেয়ে বড় বিষয় হলো নিজেদের নিরাপদ রাখা। আমি যদি নিজেকে নিরাপদ রাখি, আপনি যদি আপনাকে নিরাপদে রাখেন তাহলেই এই ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে থাকবে। কারণ ভাইরাসের হাত পা নেই। কাজেই এই সময়ে জন সমাগম যেমন এই সংবাদ সম্মেলন, এগুলোও এড়িয়ে চলতে হবে।’
ডা. বার্নার্ড জুরস রানা বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকার পরিস্থিতি মোকাবিলায় ভাল কাজ করছে। আমরা দেখেছি স্বাস্থ্য বিভাগ দিন রাত ২৪ ঘণ্টা কাজ করছে। তবে শুধু একটি বিভাগকে কাজ করলে হবে না। সবাইকে সমন্বিত উপায়ে কাজ করতে হবে। সবার উচিত সরকারকে সাহায্য করা।’
প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এ বি এম আবদুল্লাহ বলেন, ‘এই ভাইরাস পুরো পৃথিবীতে ছড়িয়ে গেছে, সবাই ভয় পাচ্ছে। সরকার প্রয়োজন মনে করলে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করবে। তবে আতঙ্কগ্রস্ত হওয়া যাবে না। অনেকেই কোয়ারেন্টাইন মানছেন না। এটিই আমাদের ভয়। আমাদের সবাইকে সচেতন হয়ে কাজ করতে হবে।’