জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের ছোট ছেলে শাহাতা জারাব এরশাদ এরিককে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে দোয়া-আশির্বাদ করেছেন দলটির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও সংসদের বিরোধী দলের নেতা বেগম রওশন এরশাদ।
১৯তম জন্মদিনে বড়ছেলে রাহগির আল মাহে সাদ এরশাদের মুঠোফোনে এরিককে আশির্বাদ জানান। এই প্রথম পিতা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে ছাড়াই জন্মদিন পালন করে এরিক। বাবা না থাকলেও প্রয়াত এরশাদের প্রেসিডেন্ট পার্কে মাতা বিদিশা এরশাদ, বড় ভাই সাদ এরশাদ ও তার স্ত্রী, আসিফ শাহরিয়ার ও তার স্ত্রী, মেজর অব. খালেদ আকতারসহ পরিবারের আত্মীয় স্বজন, বন্ধু-বান্ধব ও দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়েই রাত ৮টার দিকে আনুষ্ঠানিকভাবে কেক কাটেন এরিক। আনন্দ উৎসবে মেতে উঠেন সবাই। এরই মধ্যদিয়ে প্রয়াত এরশাদ পরিবারের বন্ধন ও সুদৃঢ় ঐক্য চোখে পড়ে। তবে জন্মদিন অনুষ্ঠানে দাওয়াত দেয়া হলেও চাচা জিএম কাদের ও তার পরিবারের কাউকে দেখা যায়নি।
হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ট্রাস্ট এর আয়োজনে এরিকের জন্মদিনকে কেন্দ্র করে জাতীয় পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, পেশাজীবীদের মিলনমেলা ঘটে। উপস্থিত ছিলেন বরেন্য সংগিত শিল্পি কুমার বিশ্বজিত, সামিনা চৌধুরীসহ অবসর প্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা, সরকারি আমলা, ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন পেশার মানুষ। উপস্থিত ছিলেন গণমাধ্যমের কর্মীরাও। সবাই একে একে এরিককে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানান।
জাতীয় পার্টির সিনিয়র নেতারাও জন্মদিনের আনন্দ উৎসবে শামিল হন। নেতারা জন্মদিনে এরিককে শুভেচ্ছা জানান এবং তার দীর্ঘায়ূ কামনা করেন।
অনুষ্ঠানে জাতীয় পার্টির নেতাদের মধ্যে পার্টির প্রবীন নেতা, সাবেকমন্ত্রী এম এ সাত্তার, প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রফেসর দেলোয়ার হোসেন খান, কাজী মামুনুর রশীদ, সাবেক এমপি জাফর ইকবাল সিদ্দিকী, প্রেসিডিয়াম সদস্য ফখরুজ্জামান জাহাঙ্গীর, মোহাম্মদ রেজাউল করিম, অ্যাডভোকেট ইকবাল বাহার, গোলাম মোস্তফা, শাকিল আহমেদসহ অসংখ্য নেতাকর্মী এরিককে জন্মদিনে উপস্থিত ছিলেন। জেলা-উপজেলা থেকেও নেতাকর্মীরা এরিককে শুভেচ্ছা জানাতে আসেন।
বিএনএ জোটের মহাসচিব অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীরসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক জোটের নেতাকর্মীরা জন্মদিনে এরিককে শুভেচ্ছা জানান।
অনুষ্ঠানে প্রয়াত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের আত্মার মাগফিরাত এবং এরিকের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ূ কামনা করে দোয়া পরিচালনা করেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য মুক্তিযোদ্ধা এম এ সাত্তার।
জন্মদিন অনুষ্ঠান উপলক্ষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ট্রাস্ট। জন্মদিনের অনুষ্ঠানে এরিক এরশাদ নিজেই বরেন্য শিল্পি সামিনা চৌধুরী, কুমার বিশ্বজিত, সাদি মোহাম্মদসহ আমন্ত্রিত অতিথিদের রবীন্দ্র সংগিত গেয়ে শোনান। করতালিতে এরিককে উৎসাহিত করেন উপস্থিত সবাই। এরিক পিতা এরশাদের জীবদ্দশায় রবীন্দ্র সংগিতের তালিম নেন। সেই থেকে প্রতিবছর জন্মদিনে রবীন্দ্র সংগিত পরিবেশন করতেন। এরিকের পর সাদি মোহাম্মদ, সামিনা চৌধুরী ও কুমার বিশ্বজিত গান পরিবেশন করেন।
এর আগে সবাই নৈশভোজে অংশ নেন। প্রায় ৩০০ অতিথির জন্য নৈশভোজের মেন্যুতে ছিল পোলাও, রোস্ট, গরুর মাংস, ভেজিটেবল, সালাদ, পানি, কোক। ছিল কাবাব, ফুচকা, মুড়ি, চানাচুর, কেক, জিলাপি, চা-কফিও।
এরিকের জন্মদিন উপলক্ষে মঙ্গলবার থেকে সাজানো হয় এরশাদের প্রেসিডেন্ট পার্কের বাসা। একদিন আগে মঙ্গলবার এরশাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে সকালে কোরআন খতম, মিলাদ মোনাজাত শেষে এতিমদের বিরিয়ানি খাওয়ানো হয়। এরিকের মা বিদিশা এরশাদ নিজেই এতিমদের জন্য বিরিয়ানি রান্না করেন।