ছাত্র নেতাদের অনেকে বলছেন, দীর্ঘ দিন পর ডাকসু সচল হওয়ায় কিছুটা হলেও পরিবর্তন হয়েছে। এর ধারাবাহিকতা থাকলে সামনে আরও পরিবর্তন আসবে।
ভিপি নুরুল হক নুর বলেন, ‘একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে ডাকসু শিক্ষার্থীদের অধিকার নিয়ে কাজ করেছে। তবে কাজ করতে গিয়ে আমি ছাত্রলীগ প্যানেলের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের বাধার মুখে পড়েছি। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসন সংকটসহ অন্যান্য সমস্যা প্রশাসনের সদিচ্ছা না থাকায় এবং ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠনের একক আধিপত্যের কারণে সমাধান করা যায়নি। এরপরও নির্বাচনের ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে ধীরে ধীরে এসব সমস্যার সমাধান হবে বলে আমি মনে করি।’
বাংলা ট্রিবিউনকে তিনি বলেন, ‘দায়িত্ব পালনে আমাদের সফলতার পাশাপাশি ব্যর্থতাও রয়েছে।’ তবে, সফলতাকে ইতিবাচকভাবে দেখেন তিনি।
জানতে চাইলে ডাকসুর সাধারণ সম্পাদক (জিএস) গোলাম রাব্বানী বলেন, ‘২৮ বছর পর নির্বাচন হয়েছে। দীর্ঘ সময়ে জমানো যত চাওয়া-পাওয়া রয়েছে, তা আমাদের ওপর এসে পড়ে। সেই জায়গা থেকে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি কাজ করার। তবে কিছু বিষয় আছে যেটা ওভারনাইট সমাধান করা যাবে না। আমরা সীমিত বাজেটের মধ্যে কাজ করেছি। আর গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ডাকসু হলো সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের মতো। সেই জায়গা থেকে বের হয়ে এসে আমরা শিক্ষার্থীদের দাবি-দাওয়া নিয়ে কাজ করেছি। ভর্তি ফি থেকে শুরু করে উন্নয়ন ফি কমানো, হলগুলোতে পরিবেশ ভালো করাসহ অনেক কাজ আমরা করেছি।’
ডাকসু নির্বাচন হওয়াটাকে সবচেয়ে বড় সফলতা হিসেবে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের সবচেয়ে বড় সফলতা হলো নির্বাচন হওয়া। এর ফলে শিক্ষার্থীরা তাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন হতে পেরেছে। আগে তাদের সঙ্গে কোনও অন্যায় হলে কারও কাছে বলতে পারতো না, এখন তা পারছে। এখন তারা সমস্যার প্রতিকার পাচ্ছে।’
ভিপি নুরুল হক নুর এবং এজিএস সাদ্দাম হোসেন নিজেদের জায়গা থেকে অনেক কাজ করেছে মন্তব্য করে গোলাম রাব্বানী আরও বলেন, ‘সবাই নিজেদের জায়গা থেকে অনেক কাজ করেছে।’ নির্বাচনি ইশতেহারের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা নির্বাচনি ইশতেহারের অধিকাংশ বিষয় পূরণ করতে পেরেছি। বাকি সময়ের মধ্যে অন্য বিষয়গুলো পুরোপুরি হয়ে যাবে। শিক্ষার্থীদের কাছে ঘোষিত ইশতেহারের ৬০-৭০ শতাংশ বাস্তবায়ন হয়েছে। নির্বাচনের ধারাবাহিকতা বজায় থাকার আশা রাখি।’
উল্লেখ্য, দীর্ঘ ২৮ বছর পর গত বছরের ১১ মার্চ অনুষ্ঠিত হয় ডাকসু নির্বাচন। ডাকসুর ২৫টি পদের মধ্যে ভিপি পদে কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম নেতা নুরুল হক নুর এবং সমাজসেবা সম্পাদক পদে আইন বিভাগের ছাত্র আকতার হোসেন নির্বাচিত হন। সাধারণ সম্পাদকসহ বাকি ২৩টি পদে ছাত্রলীগের প্যানেল থেকে নির্বাচিত হয়। নির্বাচনের পর ২৩ মার্চ দায়িত্ব নেন প্রতিনিধিরা। আগামী ২২ মার্চ তাদের কার্যকাল শেষ হবে। তবে, নির্দিষ্ট সময়ে নতুন ডাকসু নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা না করায় গঠনতন্ত্রের ৬ এর ‘গ’ ধারা অনুযায়ী আরও ৯০ দিন এই বডি দায়িত্ব পালন করতে পারবেন।