বাংলাদেশে তিন ব্যক্তির শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর রাজধানীর পাইকারি ও খুচরা বাজারে মাস্কের দাম হু হু করে বাড়ছে।
খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, মাস্কের চাহিদা বেড়েছে। এ সুযোগ কাজে লাগাতে পাইকারি ব্যবসায়ীরা বেশি দামে মাস্ক বিক্রি করছেন। এর প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারে।
ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রোববার পাইকারি বাজারে যে নেক মাস্ক প্রতি পিস বিক্রি হয়েছে ১০ টাকায়, সোমবার তা কিনতে হচ্ছে ৩০ টাকায়। খুচরা বাজারে তা আরো ১০-১৫ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। চায়না মাস্ক রোববার ২৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এ মাস্ক এখন পাইকারি মার্কেটে প্রতি ডজন ১ হাজার ২০০ টাকা অর্থাৎ প্রতি পিস ১০০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। প্রতি পিস মাস্কের দাম বেড়েছে ৭৫ টাকা। চায়না মাস্ক খুচরা বাজারে ১২০ টাকা থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সার্জারি মাস্ক রোববার প্রতি পিস ৩ থেকে ৫ টাকায় বিক্রি হলেও আজ খুচরা বাজারে এগুলো ২০ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে।
সোমবার শনিরআখড়ার খুচরা মাস্ক ব্যবসায়ী নূরুল ইসলাম বলেন, আজ সকালে নারায়ণগঞ্জে পাইকারি মার্কেটে মাস্ক কিনতে গিয়ে দেখি, দাম বেড়েছে। সেখানে পর্যাপ্ত মাস্ক নেই। চাহিদামতো মাস্ক কিনতে পারিনি।
খুচরা বাজারে মাস্কের দাম বাড়ার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, পাইকারি মার্কেটে দাম বাড়লে খুচরা বাজারেও দাম বাড়ে। সেখান থেকে আমরা কম দামে মাস্ক কিনতে পারলে এখানেও কম দামে বিক্রি করতে পারব।
পল্টনের ব্যবসায়ী সালাউদ্দীন বলেন, গতকাল তিন ব্যক্তির করোনায় আক্রান্ত হওয়ার খবর প্রকাশের পর মাস্কের চাহিদা বেড়েছে। এ সুযোগে পাইকারি ব্যবসয়ীরা কৃত্রিম সংকট তৈরি করে মাস্কের দাম বাড়িয়েছে।
পল্টন সার্জিক্যাল মার্কেটের এক পাইকারি ব্যবসায়ী বলেন, গত রাত থেকে খুচরা ব্যবসায়ীরা বেশি করে মাস্ক কিনছেন। এখন আমাদের স্টকেও মাস্ক নেই।
এদিকে, মাস্কের সঙ্গে হাত ধোয়ার লিকুইডের দাম বেড়েছে। শাহবাগের আজিজ সুপার মার্কেটে ৬০ টাকার এক বোতল হেক্সিজল লিকুইড ১০০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে হ্যান্ডওয়াশের দাম বাড়েনি বলে জানিয়েছেন কয়েকজন খুচরা বিক্রেতা। শংকরের ডেইলি নিডসের প্রোপ্রাইটার মোক্তাদা হক বলেন, কোম্পানি থেকে দাম না বাড়ালে আমরা বেশি দামে বিক্রি করব না।
এদিকে, করোনাভাইরাস আতঙ্কে অপ্রোয়জনীয়ভাবে মাস্ক ব্যবহার না করার জন্য আহ্বান জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ সোমবার আইইডিসিআরে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সবার মাস্ক ব্যবহার করার মতো পরিস্থিতি এখনো আমাদের দেশে তৈরি হয়নি। যারা আক্রান্ত হয়েছেন বা আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা করছেন, শুধু তারা মাস্ক পরবেন।
তিনি বলেন, মানুষ যদি আতঙ্কিত হয়ে প্রয়োজন ছাড়াই মাস্ক কিনতে থাকেন, তাহলে প্রয়োজনের সময় মাস্ক পাওয়া যাবে না। আমাদের মনে রাখতে হবে, মাস্ক আমাদের দেশে তৈরি হলেও এর কাঁচামাল আসে দক্ষিণ কোরিয়া, চীন ও জাপান থেকে। এসব দেশেও করোনাভাইরাসেরর প্রভাব রয়েছে। ফলে আমাদের মাস্ক ব্যবহারে সাবধান হতে হবে।
এদিকে, র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম বলেছেন, মাস্কের দাম নিয়ন্ত্রণে খুব তাড়াতাড়ি আমরা ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করব।