এদিন টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৪ উইকেটে ১৮৪ করে অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু হরমনপ্রীত কৌরের দল ১৯.১ ওভারে ৯৯ রান করে অলআউট হয়ে যায়। অনেকে ২০০৩ বিশ্বকাপ ফাইনালে সৌরভ গাঙ্গুলীদের পারফরম্যান্সের মিল খুঁজে পাচ্ছেন।
এদিন রান তাড়া করতে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় ভারত। দ্বিতীয় বলেই ফেরেন শেফালি ভার্মা। শুরুতে ঝড় তোলার জন্য তাঁর উপরেই নির্ভর করছিল দল। কিন্তু ১৬ বছর বয়সী ফেরেন মাত্র ২ রানে। মেগান স্কুটের বলে তাঁর খোঁচা জমা হয়েছিল উইকেটকিপার অ্যালিসা হিলির হাতে। প্রথম ওভারে উঠেছিল মাত্র ৩। দ্বিতীয় ওভারে জেস জোনাসেন দেন জোড়া ধাক্কা। তৃতীয় বলে সুইপ মারতে গিয়ে বল লাগে তানিয়া ভাটিয়ার হেলমেটে। দৌঁড়ে আসেন ফিজিও। তানিয়া ঘাড়ে হাত বোলাতে বোলাতে বেরিয়ে যান মাঠ ছেড়ে। সেই ওভারেই ষষ্ঠ বলে জেমাইমা রডরিগেজ ক্যাচ দেন মিড অনে। দ্বিতীয় ওভারের শেষে দুই উইকেট হারিয়ে ভারতের রান দাঁড়িয়েছিল মাত্র ৮।
৩.১ ওভারে পড়ে তৃতীয় উইকেট। আউট হন স্মৃতি মন্ধানা (১১)। সোফি মলিনিউক্সের বলে ক্যারিকে ক্যাচ দেন তিনি। এরপর চতুর্থ উইকেট পড়ে ৫.৪ ওভারে। মারতে গিয়ে লোপ্পা ক্যাচ তুলেন অধিনায়ক হরমনপ্রীত (৪)। জোনাসেনের বলে তাঁর ক্যাচ ধরেন গার্ডনার। পাওয়ারপ্লের ছয় ওভারের মধ্যেই চার উইকেট হারিয়ে ফেলে ভারত।
ভারতের পঞ্চম উইকেট পড়ে ৫৮ রানে। ১১.৩ ওভারে কিমিন্সের বলে ফিরে যান ভেদা কৃষ্ণমূর্তি (১৯)। তানিয়ার জায়গায় এই সময় ‘কনকাসন সাব’ হিসেবে ব্যাট করতে আসেন রিচা ঘোষ। প্রথম দলে ছিলেন না তিনি। কিন্তু হঠাৎ পাওয়া এই সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি রিচা। ১৮ বলে ১৮ করে ফিরলেন তিনি। দীপ্তি শর্মা (৩৩) ও শিখা পাণ্ডে (২) অবশ্য তার আগেই ফিরে গিয়েছিলেন।
বোলিংয়েও শুরুটা ভাল হয়নি ভারতের। প্রথম ওভারে অস্ট্রেলিয়া তুলেছিল ১৪ রান। তার মধ্যে তিনটি চার। দীপ্তি শর্মার সেই ওভারে অবশ্য পড়ল ক্যাচও। সেই দাপটেই পাওয়ারপ্লের ছয় ওভারে হোমটিম বিনা উইকেটে তুলে ৪৯। যা ১০ ওভারে দাঁড়ায় বিনা উইকেটে ৯১।
পরের ওভারে ওঠে ২৩ রান। পেসার শিখা পাণ্ডেকে পরপর তিন ছয় মারেন অ্যালিসা হিলি। যিনি আগেই ৩০ বলে হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেছিলেন। শেষ পর্যন্ত ৩৯ বলে ৭৫ করলেন অ্যালিসা। যাতে ছিল সাতটা চার ও পাঁচটি ছয়। রাধা যাদবের বলে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছিলেন মিচেল স্টার্কের স্ত্রী।
এরপর অজি অধিনায়ক মেগ ল্যানিং ফিরেছিলেন ১৬ রানে। দীপ্তি শর্মার বলে শিখা পাণ্ডেকে ক্যাচ দিয়েছিলেন তিনি। তিন বল পরেই ফের উইকেট নিয়েছিলেন দীপ্তি শর্মা। তাঁকে মারতে গিয়ে তানিয়া ভাটিয়ার হাতে স্টাম্পড হয়েছিলেন গার্ডনার (২)। এরপর ফেরেন হেনেস (৪)। লেগস্পিনার পুনম যাদবের বলে বোল্ড হন তিনি। ৫৪ বলে ৭৮ করে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন বেথ মুনি। তাঁর ইনিংসে ছিল ১০টি চার। নিকোলা ক্যারি অপরাজিত ছিলেন ৫ রানে।
ভারতীয় বোলারদের মধ্যে সফলতম ছিলেন দীপ্তি শর্মা। তিনি ৩৮ রানের বিনিময়ে নেন দুই উইকেট। পুনম যাদব (১/৩০), রাধা যাদব (১/৩৪) নিলেন বাকি দুই উইকেট। কোনো উইকেট না পেলেও ভালো বল করলেন রাজেশ্বরী গায়কোয়াড় (০-২৯)। তবে হতাশ করেন শিখা পাণ্ডে (০/৫২)। এক সময় মনে হচ্ছিল দুশোর বেশি তুলে ফেলবে অজিরা। কিন্তু শেষ পাঁচ ওভারে তিন উইকেট হারিয়ে অস্ট্রেলিয়া তোলে ৪২ রান। ফলে ওভার প্রতি ৯ এর সামান্য বেশি আস্কিং রেট তাড়া করার চ্যালেঞ্জ ছিল হরমনপ্রীতদের সামনে। যা কখনই নিতে পারেনি ভারত। প্লেয়ার অব ম্যাচের পুরস্কার পেয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার অ্যালিসা হিলি। প্লেয়ার অব দ্য টুর্নামেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন বিথ মুনি।