প্রথম ওয়ানডেতে ১৬৯ রানে জয়ের পর এখন সিরিজ জয়ের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী স্বাগতিক বাংলাদেশ। রান বিবেচনায় নিজেদের ওয়ানডে ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ব্যবধানে জয়ের রেকর্ড গড়ে টাইগাররা। এছাড়া আফ্রিকান দলটির বিপক্ষে টানা ১৪ ম্যাচ জয়ের নজিরও গড়েছে মাশরাফি বাহিনী।
বাজে পারফরম্যান্সের কারণে চাপে থাকা অবস্থায় এই জয় বাংলাদেশের জন্য স্বস্তির। তবে প্রতিপক্ষ হিসেবে যদি জিম্বাবুয়ের পারফরম্যান্স বিবেচনা করা হয় তাহলে বাংলাদেশের সাথে কোনো মিল নেই তাদের।
তবুও প্রতিপক্ষ যেই হোক, আট মাস পর ওয়ানডে খেলতে নামাটা মোটও সহজ ছিল না বলে জানিয়েছেন, টাইগার অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা।
আট মাস পর মাঠে নেমেই আশানুরূপ পারফরম্যান্স করেছেন মাশরাফি। দুই উইকেট নিয়ে অধিনায়ক হিসাবে ১০০ উইকেট শিকার পূর্ণ করেন মাশরাফি। যার মাধ্যমে পাকিস্তানের ইমরান খান, ওয়াসিম আকরাম, দক্ষিণ আফ্রিকার শন পোলক ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের জেসন হোল্ডারের পাশে নিজের নাম লেখান মাশরাফি। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক ও ঘরোয়া আসর মিলিয়ে ক্রিকেট ক্যারিয়ারে ‘৭০০’ উইকেট পূর্ণ করেন ম্যাশ।
মাশরাফির পারফরম্যান্সে সাথে লিটন দাস ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের নৈপুণ্যে খুশি বাংলাদেশ দল। ২০২৩ বিশ্বকাপের পরিকল্পনায় দু’জনই দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়।
প্রথম ম্যাচে ওপেনার হিসেবে ১০৫ বলে ১২৬ রান করেন লিটন। ওয়ানডে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি তুলে আহত অবসর নেন তিনি। অন্যদিকে, স্লগ ওভারে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি বল হাতেও উজ্জ্বল ছিলেন সাইফউদ্দিন। দল তার থেকে এমন পারফরম্যান্সই আশা করেছিল। ব্যাট হাতে ১৫ বলে অপরাজিত ২৮ ও বল হাতে ২২ রানে ৩ উইকেট নেন সাইফউদ্দিন।
পিঠের ইনজুরি থেকে সেরে উঠার পর সাইফউদ্দিনের এমন পারফরম্যান্স ছিল দলের জন্য অনেক বড় পাওয়া। তাদের সাথে মিডল-অর্ডারে ব্যাট হাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন মোহাম্মদ মিথুন। ৪১ বলে ৫০ রানের মারমুখী ইনিংস খেলেন তিনি।
একই সাথে তিন সিনিয়র খেলোয়াড় মুশফিকুর রহিম, তামিম ইকবাল ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ব্যাট হাতে ভালো শুরু পরও তা বড় করতে পারেননি। কিন্তু তাদের খারাপ দিনে ভবিষ্যতের খেলোয়াড়রা নিজেদের সেরাটাই দিয়েছে।
দ্বিতীয় ওয়ানডের আগে সোমবার বাংলাদেশ দলের আনুষ্ঠানিক অনুশীলন নেই। দ্বিতীয় ম্যাচেও নিজেদের পারফরম্যান্স অবহ্যাত রাখার পরিকল্পনা রয়েছে বাংলাদেশের। জিম্বাবুয়ে ঘুড়ে দাঁড়াবে এমন চিন্তাও রয়েছে টাইগারদের। অন্যদিকে, সফরকারীরা নিজেদের মেলে ধরতে না পারলেও শন উইলিয়ামসের অন্তর্ভুক্তিতে সিরিজে সমতা আনার ব্যাপারে আশাবাদী জিম্বাবুয়ে।
প্রথম সন্তানের বাবা হতে বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজের একমাত্র টেস্ট ও প্রথম ওয়ানডে খেলতে পারেননি উইলিয়ামস। উইলিয়ামস বলেছেন, ‘১-০ ব্যবধানে পিছিয়ে থাকা ছেলেদের মানসিকভাবে শক্ত থাকা কঠিন। সবদিক থেকেই প্রথম ম্যাচে আমাদের পারফরম্যান্স ছিল হতাশাজনক।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের সামনে এগিয়ে যেতে হবে। দ্বিতীয় ম্যাচের জন্য পরিকল্পনা করা খুব জরুরি। আশা করি আমার উপস্থিতি দলে কিছুটা সাহস ও প্রশান্তি আনতে পারবে। ক্রেইগ আরভিনও দলে আছে। সেও খেলতে প্রস্তুত। আমি মনে করি, দীর্ঘ সময়ের জন্য ভালো সিদ্বান্ত নেয়াটা গুরুত্বপূর্ণ। ব্রেন্ডন টেইলর ও সিকান্দার রাজার মত খেলোয়াড়রা দলে বড় ভূমিকা পালন করে। তাদের জ্বলে উঠা, আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে পড়েছে।’
দ্বিতীয় ওয়ানডের একাদশে বেশ কিছু পরিবর্তন আনতে পারে জিম্বাবুয়ে। তবে অপরিবর্তিত দল নিয়েই খেলতে দেখা যেতে পারে স্বাগতিক দলকে।
মঙ্গলবার ওয়াডেতে ৭৪তম বারের মত একে অপরের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ে। আগের ৭৩ ম্যাচের মধ্যে বাংলাদেশ ৪৫টিতে ও জিম্বাবুয়ে ২৮টিতে জয় পেয়েছে।