বিশ্ব জুড়ে করোনা ভাইরাসে মৃতের সংখ্যা তিন হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে। প্রায় ৬০টি দেশে ভাইরাস ছড়িয়ে যাওয়ার খবর মিলেছে। ভয়াবহ পরিস্থিতি দক্ষিণ কোরিয়ায়। ইরানে মৃতের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। ইতালিসহ ইউরোপেও করোনা আতঙ্ক ক্রমশ বাড়ছে। সোমবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আরও এক ব্যক্তির মৃত্যুর খবর মিলেছে। এই নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে করোনা ভাইরাসে দুই জনের মৃত্যু হল।
রবিবার ইরানে করোনা ভাইরাসে আরও ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে সেদেশের প্রশাসন জানিয়েছে। এই নিয়ে শুধু ইরানেই করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৫৪। যদিও এখনও পর্যন্ত ইরান সরকার করোনা অধ্যুষিত অঞ্চলগুলিকে বাকি দেশ থেকে আলাদা করেনি।
দেশের ভিতর যাতায়াতে কিছু নিষেধাজ্ঞা জারি করলেও সার্বিকভাবে করোনাভাইরাস রোধে যতটা সতর্ক হওয়া উচিত, ইরান ততটা সতর্কতা নিচ্ছে না বলেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অভিমত। যার জেরে বহু দেশ ইরানের সঙ্গে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখছে।
তুরস্ক, আফগানিস্তানের পরে কাজাখস্তানও ঘোষণা করেছে ইরানের নাগরিকদের আপাতত দেশে ঢুকতে দেওয়া হবে না। ইরানের সঙ্গে বিমান যোগাযোগও কার্যত বন্ধ করে দিয়েছে কাজাখস্তান।
এদিকে ইউরোপের পরিস্থিতিও ভাল নয়। ইতালিতে এখনও পর্যন্ত মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৬৯৪। ফ্রান্সেও আক্রান্তের সংখ্যা ১৩০ ছুঁয়েছে। বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে প্যারিসের বিভিন্ন মিউজিয়াম। জার্মানিতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। এখনও পর্যন্ত মোট আক্রান্ত ১২৯। বনে প্রথম করোনা আক্রান্তের খবর মিলেছে।
চেক রিপাবলিক, স্কটল্যান্ড, ডমিনিকান রিপাবলিকও করোনা আক্রান্তের খবর জানিয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসেব, এখনও পর্যন্ত গোটা বিশ্বে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৮০ হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে। মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়ে গিয়েছে তিন হাজার।
দক্ষিণ কোরিয়ার পরিস্থিতি ভয়াবহ। দিনে দু’বার করে সেখানে করোনার বুলেটিন দিচ্ছে প্রশাসন। রবিবার রাতে জানানো হয়েছিল, আরও চার জনের মৃত্যু হয়েছে। নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৪৭৬ জন। শুধু দক্ষিণ কোরিয়ায় এখনও পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ২২ জনের। আক্রান্তের সংখ্যা চার হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, সোমবার সকালে আক্রান্তের সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পাবে। এরই মধ্যে যে চার্চটি থেকে প্রথম করোনা ছড়াতে শুরু করেছিল, তাদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার সরকার। সরাসরি খুনের অভিযোগ আনা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, বহু নিষেধ সত্ত্বেও যে তৎপরতার সঙ্গে করোনা মোকাবিলার কথা ছিল চার্চটির, তারা তা করেনি।
যেভাবে করোনাভাইরাস গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ছে, তা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। মাসখানেক আগে তারা ঠিক এই আশঙ্কাই করেছিল। বলা হয়েছিল, অপেক্ষাকৃত গরিব দেশগুলিতে ভাইরাস ছড়িয়ে গেলে ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে। সেই পরিস্থিতির দিকেই ক্রমশ এগোচ্ছে বিশ্ব।