২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ১২:৪৫

‘গরু ঈশ্বর ও মায়ের বিকল্প’

অনলাইন ডেস্ক:

গরু হলো পবিত্র জাতীয় সম্পদ। গরু ঈশ্বর ও মায়ের বিকল্প। জানালেন হায়দ্রাবাদ হাইকোর্ট বিচারপতি বি শিবা শঙ্কর রাও। শুক্রবার গরু কেনাবেচা বিষয়ক মামলার শুনানিতে এ মন্তব্য করেন তিনি।

এজলাসে বসে বি শিবশঙ্কর রাও বলেন, গরু ভারতের সম্পদ। এমনকি কোরবানির ঈদেও গরু জবাইয়ের অধিকার নেই মুসলিমদের। ভারতীয়দে গরুর গুরুত্ব বোঝা উচিত। মুঘল সম্রাট বাবর পর্যন্ত গরুর গুরুত্ব বুঝে জবাই বন্ধ করেছিলেন। এমনকি সম্রাট আকবর, জাহাঙ্গীর আহমেদ শাহ সময়ে গরুর জবাই নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। যারা গরু জবাই করেন এবং যারা প্রশ্রয় দেন, তাদের ১১ বছর কারাদণ্ড হওয়া উচিত।  দুধ দিতে না পারার জন্য যারা গরুকে জবাইয়ের জন্য বিক্রি করার সার্টিফিকেট দেয়, তাদের বিরুদ্ধেও কড়া আইন তৈরি প্রয়োজন এবং এ ধরনের মামলা জামিন অযোগ্য ধারায় হওয়া উচিত।

সম্প্রতি তেলেঙ্গানার নালগোন্ডার এক গরু ব্যবসায়ী রামবত হনুমার বাড়ি থেকে ৬৫টি গরু বাজেয়াপ্ত করে পুলিশ। অভিযোগ ওঠে, ঈদের আগে গোমাংসের জন্যই গরুগুলোকে নিয়ে এসেছিলেন হনুমা। নালগোন্ডার নিম্ন আদালতে হনুমা দাবি করেন, ঈদের জন্য নয়, চরানোর জন্যই তিনি গরুগুলোকে এনে কাঞ্চনপল্লীর খামারে রেখেছেন। এ নিয়ে একটি পিটিশনও দাখিল করেন হনুমা। কিন্তু নালগোণ্ডা আদালত তার সেই পিটিশন খারিজ করে দেন।

নিম্ন আদালতকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে যান হনুমা। কিন্তু সেখানে গিয়েও রেহাই পাননি। হনুমার আবেদনকে খারিজ করে দিয়ে হায়াদ্রাবাদ হাইকোর্টের বিচারপতি শঙ্কর রাও স্পষ্ট জানিয়ে দেন, নিম্ন আদালতের নির্দেশে নাক গলাবে না হাইকোর্ট।

শুক্রবার এই মতামত দেয়ার পাশাপাশি অন্ধ্রপ্রদেশ ও তেলেঙ্গানার পশু চিকিৎসকদের উদ্দেশ করে একটি নির্দেশ দেন বিচারপতি। তিনি বলেন, যেসব চিকিৎসক ভুয়া সার্টিফিকেট দিয়ে দুধের গরুকে কসাই খানায় পাঠানোর ব্যবস্থা করছেন, তাদের অন্ধ্রপ্রদেশ গরু জবাই আইন, ১৯৭৭-এর আওতায় এনে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়া হবে। প্রয়োজনে আইনের সংশোধন করে ওই চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে জামিন-অযোগ্য পরোয়ানাও আনা দরকার বলে মত দেন তিনি।

এরপর মে মাসে রাজস্থান হাইকোর্টে হিঙ্গোনিয়া গোশালা মামলার শুনানি ছিল। গত বছর অসুস্থতা, অবহেলাজনিত নানা কারণে ওই গরু শালায় মারা গিয়েছিল প্রায় আট হাজার গরু।  সে শুনানি চলার সময়ই বিচারপতি মহেশ চন্দ্র শর্মার সিঙ্গল বেঞ্চ প্রস্তাব রাখে, গরুকে জাতীয় পশুর স্বীকৃতি দেয়া হোক। গরুকে জাতীয় পশু হিসেবে ঘোষণা করা হলে গরু হত্যায় রাশ টানা যাবে বলেই মত বিচারপতি মহেশ চন্দ্র শর্মার।

তার কথায়, ‘নেপাল গরুকে জাতীয় পশু হিসেবে ঘোষণা করেছে। আমাদের দেশ কৃষিভিত্তিক। এখানে গবাদি পশুর পালন যথেষ্ট গুরুত্ব পেয়ে থাকে। তাই ভারতীয় দণ্ডবিধির ধারা ৪৮ এবং ৫১এ(জি) অনুযায়ী রাজ্য সরকারের কাছে আশা করাই যায় যে, গরু রক্ষার জন্য যেকোনো আইনি পদক্ষেপ নেয়া হবে।

দৈনিক দেশজনতা/ এমএইচ

প্রকাশ :জুন ১১, ২০১৭ ৩:৪৩ অপরাহ্ণ