আরব বসন্তে ক্ষমতাচ্যুত হওয়া মিসরের সাবেক প্রেসিডেন্ট হোসনি মোবারক মারা গেছেন। মঙ্গলবার দেশটির রাজধানী কায়রোর একটি হাসপাতালে তিনি মারা যান বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বিবিসি। তার বয়স হয়েছিল ৯১ বছর।
২০১১ সালে ১৮ দিনের তীব্র আন্দোলনের মুখে মোবারকের ৩০ বছরের কঠোর শাসনের অবসান ঘটে। ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার দুই মাস পর ২০১১ সালের এপ্রিলে গ্রেপ্তার হন হোসনি মোবারক। তখন থেকেই তিনি কারাগারে বন্দী ছিলেন।
মিসরের উত্তরাঞ্চলে কাফর আল মেসেলহায় ১৯২৮ সালের ৪ মে জন্ম নেন হোসনি মোবারক। দরিদ্র পরিবার থেকে উঠে আসা সত্ত্বেও তিনি ১৯৪৯ সালে মিসরের মিলিটারি একাডেমি থেকে গ্রাজুয়েশন করেন। পরে বিমান বাহিনীতে বদলি হয়ে ১৯৫০ সালে কমিশনপ্রাপ্ত হন।
১৯৭২ সালে তিনি বিমান বাহিনী প্রধান হিসেবে দায়িত্ব লাভ করেন। মূলত বিমান বাহিনী প্রধান ও প্রতিরক্ষা বিষয়ক ডেপুটি মিনিস্টার হওয়ার পরই তার নাম ছড়িয়ে পড়ে।
১৯৭৩ সালে আরব-ইসরায়েল যু্দ্ধের শুরুতে ইসরায়েলি বাহিনীর ওপর হামলার তিনিই ছিলেন পরিকল্পনাকারী। পরে প্রেসিডেন্ট আনোয়ার সাদাত তাকে ভাইস প্রেসিডেন্ট বানান ১৯৭৫ সালে।
১৯৮১ সালে আনোয়ার সাদাত সামরিক বাহিনীর হাতেই নিহত হন ও এ ঘটনায় হোসনি মোবারকও আহত হন। পরে জাতীয় গণভোটে হোসনি মোবারক প্রেসিডেন্ট হন যেখানে তিনিই ছিলেন একমাত্র প্রার্থী।
দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার পর ২০১১ সালে আরব বসন্তের ঢেউ লাগে মিসরে এবং এক পর্যায়ে সরে দাঁড়াতে বাধ্য হন মোবারক। চার মাস পরেই বিচারের মুখোমুখি হতে হয় তাকে। ২০১২ সালে যাবজ্জীবন দণ্ড হয় তার। এর ছয় মাস পর এ দণ্ড বাতিল করা হয় ও পুনরায় বিচারের আদেশ দেয়া হয়।
তাকে কায়রোর একটি সামরিক হাসপাতালে বন্দী রাখা হয়। অবশ্য ২০১৭ সালে মিসরের সর্বোচ্চ আদালত তাকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেয় এবং তিনি মুক্তি পান।