বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনেকে (বিটিআরসি) পাওনা বাবদ আপাতত এক হাজার কোটি টাকা দিতে গ্রামীণফোন কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
আগামী সোমবারের মধ্যে এই টাকা পরিশোধ করতে বলা হয়েছে। ওই দিন আদালত পরবর্তী আদেশ দেবেন।
বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন সাত বিচারপতির বৃহত্তর আপিল বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
আদালতে গ্রামীণফোনের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট এএম আমিন উদ্দিন ও ব্যারিস্টার মেহেদী হাসান চৌধুরী। অন্যদিকে বিটিআরসির পক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও ব্যারিস্টার খন্দকার রেজা-ই-রাকিব।
গত ২৪ নভেম্বর আপিল বিভাগ প্রায় ১২ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা পাওনার মধ্যে বিটিআরসি’কে তিন মাসের মধ্যে দুই হাজার কোটি টাকা দিতে গ্রামীণফোনকে নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ। এ আদেশ রিভিউ চেয়ে আবেদন করে গ্রামীণফোন।
পরে ব্যারিস্টার মেহেদী হাসান চৌধুরী বলেন, ‘অডিটে রবির ক্ষেত্রে সিম্পল ইন্টাররেস্টে ক্যালকুলেট করা হয়েছে। জিপির ক্ষেত্রে কম্পাউন্ড ইন্টারেস্ট সিস্টেমে করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আজ আদালত বলেছেন সোমবারের মধ্যে এক হাজার কোটি টাকা দিতে। ওই দিন রিভিউ আবেদনের ওপর আদেশর জন্য দিন রেখেছেন আদালত। আমরা এখন এটা কোম্পানিকে জানাবো। আদালত বলেছেন, আদেশ অনুসারে অবশ্যই দুই হাজার কোটি টাকা দিতে তবে। আমরা বলার চেষ্টা করেছি, কোম্পানির অ্যাবিলিটি তো থাকতে হবে। গ্রামীণফোন একটা শেয়ার মার্কেট লিস্টেড কোম্পানি।’
মেহেদী হাসান চৌধুরী বলেন, ‘আমারা আদালতে বলেছি, ৫০০ কোটি টাকা এক মাসে দেব। বাকিটা ছয় মাসে দেব। কিন্তু আদালত সেটা গ্রহণ করেননি।’
গত বছরের ২ এপ্রিল বিভিন্ন খাতে ১২ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা দাবি করে বিটিআরসি গ্রামীণফোনকে চিঠি দিয়েছিল। পরে গ্রামীণফোন ওই চিঠির বিষয়ে নিম্ন আদালতে টাইটেল স্যুট (মামলা) করে। একই সঙ্গে ওই মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত অর্থ আদায়ের ওপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করা হয়। পরে ২৮ আগস্ট নিম্ন আদালত গ্রামীণফোনের অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আবেদন খারিজ করে দিলে ওই আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করে গ্রামীণফোন।
পরে শুনানি শেষে গত বছরের ১৭ অক্টোবর আদালত আপিলটি শুনানির জন্য গ্রহণ করে টাকা আদায়ের ওপর দুই মাসের অন্তর্বর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞা দেন।
পরে গ্রামীণফোনের কাছে ওই টাকা দাবি আদায়ের ওপর হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা স্থগিত চেয়ে বিটিআরসি আপিল বিভাগে আবেদন করে। ওই আবেদনের ওপর শুনানি শেষে ২৪ নভেম্বর তিন মাসের মধ্যে দুই হাজার কোটি টাকা দেওয়ার আদেশ দেন আপিল বিভাগ।