বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের কিছু অংশ নিয়ে ২ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে অমর একুশে গ্রন্থমেলা-২০২০। লেখক, পাঠক ও প্রকাশকদের নিয়ে একটু একটু করে জমে উঠছে মেলা। নিরাপত্তা চেকপোস্ট পেরিয়েই সবাইকে বইমেলা প্রাঙ্গণে প্রবেশ করতে হয়। তারপরও হঠাৎ কানে ভেসে আসছে ‘ভাই/আপা চকোলেট দেই’। কখনও সামনেই হাজির হবে সিগারেট ও চায়ের ফ্লাস্ক নিয়ে। আবার কখনও দেখা যাচ্ছে কিছু তরুণ সাহায্য তুলতেও হাজির হচ্ছেন বাক্স নিয়ে। মেলায় আগতদের প্রশ্ন, নিরাপত্তাকর্মীদের চোখ ফাঁকি দিয়ে কীভাবে হকাররা ভেতরে ঢুকছে। জানা গেছে, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের অংশে টিনের বেড়া সরিয়ে হকাররা ঢুকছে বইমেলায়। আয়োজকরা বলছেন, মেলা প্রাঙ্গণে কোনোভাবেই হকার ঢোকার সুযোগ নেই। আমাদের আনসার বাহিনী চারদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখছে।
৩-৬ ফেব্রুয়ারি মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা গেছে, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান লেকের পূর্ব ও পশ্চিম প্রান্তের অংশে এবং রমনা কালী মন্দির গেটের পাশের অংশে রয়েছে টিনের বেড়া। এই টিনের বেড়ার কিছু বাঁধন কৌশলে খুলে রেখেছে হকাররা, যা বাইরে থেকে দেখলে বোঝার উপায় নেই। হকাররা টিন সরিয়ে সেখান দিয়ে মেলায় প্রবেশ করছে।
বাবাকে নিয়ে মেলায় এসেছিলেন সাদিয়া কানিজ। ঘুরতে ঘুরতে ক্লান্ত হয়ে ফুড কোর্টের এক প্রান্তে বসেছিলেন কফি খেতে। ঠিক সে সময়ই ১০/১২ বছর বয়সী এক ছেলে শপিং ব্যাগে চকোলেট নিয়ে এসে বলছে, আপা চকোলেট নেন। না বলার পরও সে জোরাজুরি করায় সাদিয়া বাধ্য হয়ে চকোলেট নিলেন।
সাদিয়া বলেন, ‘বইমেলার মতো জায়গায় মানুষ একটু নিরিবিলি ঘুরতে পছন্দ করে। হকারদের তো আমরা সব জায়গাতেই দেখি। কিন্তু এমন জায়গায় দেখলে বিরক্তিই লাগে। যদিও মাইকে বারবার বলা হচ্ছে, কিন্তু তেমন কোনও তোড়জোড় চোখে পড়ছে না।’
হকার বিড়ম্বনা সম্পর্কে আগামী প্রকাশনীর প্রকাশক ওসমান গনি বলেন, ‘আমি মনে করি মেলার নিয়ম-কানুন কঠোরভাবে মানা উচিত। কিন্তু সেই বিষয়টা নেই। মেলায় খাবারসহ বিভিন্ন রকমের স্টল দেওয়া হয়েছে। তারপরও যারা বাইরে থেকে আসবে তাদের বাংলা একাডেমির উচিত প্রতিহত করা। বিকাশের স্টলের সামনে গেলেই ডেকে ডেকে বলা হচ্ছে বিকাশ অ্যাকাউন্ট আছে কিনা। এটা তো ঠিক না। কারও দরকার হলে তারা স্টলে যাবো, কথা বলবে। কিন্তু তারা রাস্তায় এসে বিরক্ত করবে কেন?’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলা একাডেমির পরিচালক ও মেলা আয়োজক কমিটির সদস্য সচিব ড. জালাল আহমেদ বলেন, ‘আমাদের এখানে নিরাপত্তাকর্মী আছে, আনসার আছে। হকার তো ঢুকতে পারবে না। আর যদি কোনও জায়গায় কাউকে দেখা যায় তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’