কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানায়, সোমবার ফিলিস্তিনের নেতৃবৃন্দের অনুরোধে ৫৭ সদস্যের ওআইসি সংস্থার সদস্যরা সৌদি আরবের জেদ্দায় একটি বৈঠকে মিলিত হয়। পরে ট্রাম্পের শান্তি পরিকল্পনাকে প্রত্যাখ্যান করে আনুষ্ঠানিক বিবৃতি প্রকাশ করা হয়।
ওআইসির মতে, ট্রাম্পের ‘ডিল অব দ্যা সেঞ্চুরি’ ফিলিস্তিনের নাগরিকদের নূন্যতম নাগরিক অধিকার ও প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে।
এর দুইদিন আগে আরব লীগও ট্রাম্পের ‘ডিল অব দ্যা সেঞ্চুরি’ প্রত্যাখ্যান করেছিল।
গত মঙ্গলবার ফিলিস্তিনিদের প্রবল বিরোধিতা উপেক্ষা করে ‘ডিল অব দ্যা সেঞ্চুরি’ প্রকাশ করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। হোয়াইট হাউসে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে পাশে নিয়ে কথিত এই শান্তি পরিকল্পনা প্রকাশ করেন তিনি।
শান্তি পরিকল্পনা প্রকাশের এক ঘণ্টা আগে সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প বলেন, ইসরায়েলের জন্য শান্তি বয়ে আনার লক্ষ্যে তিনি এ পরিকল্পনা উপস্থাপন করতে যাচ্ছেন। ‘ডিল অব দ্যা সেঞ্চুরি’ বাস্তবায়িত হলে তা মধ্যপ্রাচ্যে উগ্রবাদ মোকাবিলায় সহায়তা করবে।
এই পরিকল্পনায় পশ্চিম জেরুজালেমকে ইসরায়েলি ভূখণ্ডের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সেই সঙ্গে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বসবাসরত ফিলিস্তিনি শরণার্থীদেরকে তাদের মাতৃভূমিতে ফিরে যাওয়ার অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। এছাড়া, জর্দান নদীর পশ্চিম তীরের অবশিষ্ট অংশ ও গাজা উপত্যকা নিয়ে একটি দুর্বল ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের কথা বলা হয়েছে। পরিকল্পনা প্রকাশ করে ট্রাম্প বলেন, ‘এ প্রস্তাব ফিলিস্তিনিদের জন্য শেষ সুযোগ।’
ট্রাম্প বলেন, ফিলিস্তিনিরা দারিদ্র্য ও সহিংসতার মধ্যে বাস করছে। যারা সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদ ছড়াতে চায় তাদের দাবার ঘুটি হিসেবে তারা ব্যবহৃত হচ্ছে। এই প্রথমবারের মতো ইসরায়েল একটি ধারণামূলক মানচিত্র প্রকাশ করতে রাজি হয়েছে। শান্তি স্থাপনের জন্য নিজেদের ভূখণ্ড ছেড়ে দিতে সম্মতও হয়েছে।
ট্রাম্পের দাবি, ওই মানচিত্রে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড দ্বিগুণ হবে এবং পূর্ব জেরুজালেমে ফিলিস্তিনের রাজধানী থাকবে এবং যুক্তরাষ্ট্র গর্বের সঙ্গে সেখানে দূতাবাস চালু করবে।
ট্রাম্পের শান্তি পরিকল্পনাকে প্রত্যাখ্যান করেছিল ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। তিনি বলেন, ‘আমি ট্রাম্প এবং নেতানিয়াহুকে বলছি: জেরুজালেম বিক্রির জন্য নয়, আমাদের সব অধিকার বিক্রি হবে না এবং এ নিয়ে দর কষাকষিও হবে না এবং আপনাদের চুক্তি, ষড়যন্ত্র পাস করা হবে না।’
এছাড়া ফিলিস্তিন-বিরোধী মার্কিন পরিকল্পনা ‘ডিল অব দ্যা সেঞ্চুরি’ কে মৃত পরিকল্পনা হিসেবে ঘোষণা করেছিল তুরস্ক। তুর্কি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যান করে বলেছে, এই পরিকল্পনার জন্মই হয়েছে মৃত অবস্থায়।
এতে আরও বলা হয়েছে, গোটা ফিলিস্তিনকে গিলে খাওয়ার জন্যই এ পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন ট্রাম্প। এর মধ্য দিয়ে দুই রাষ্ট্র ভিত্তিক সমাধানের সম্ভাবনারও ইতি ঘটানোর ষড়যন্ত্র চলছে।