ঢাকা সিটি নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপির বিরুদ্ধে বাইরে থেকে ‘সশস্ত্র সন্ত্রাসী’ আনার যে অভিযোগ আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের করেছেন, সেটি ‘হাস্যকর’ বলেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তার দাবি, সিটি ভোটকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগই অস্ত্র-শস্ত্র ও ৩০ লাখ কর্মীকে বাইরে থেকে এনেছে।
বুধবার আর কে মিশন রোডে প্রয়াত মেয়র সাদেক হোসেন খোকার বাসায় এক সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের নিন্দা জানিয়ে একথা বলেন খন্দকার মোশাররফ।
দক্ষিণ সিটিতে বিএনপির নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক খন্দকার মোশাররফ আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ এনে বলেন, ‘এটা অত্যন্ত হাস্যকর। কে না জানে যে বিএনপির প্রার্থীরা, সাধারণ কর্মীরা বাড়িতে থাকতে পারছে না পুলিশের বিভিন্ন ধরনের কর্মকাণ্ডের কারণে। আমাদের পক্ষে বাইরে থেকে লোক আনা বা কোনো অস্ত্র-শস্ত্র যোগাড় করা- এটা অসম্ভব বিষয়। এটা আমাদের দ্বারা করা সম্ভবও নয়, এটা আমরা করিও নাই।’
গত মঙ্গলবার কাদের ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের সম্পাদকমণ্ডলীর সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির বিরুদ্ধে বহিরাগত অস্ত্রধারীদের ঢাকায় এনে জড়ো করার অভিযোগ করেন।
খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘আমরা জানি যে, আওয়ামী লীগ এটা আসলে করছে। তারা বাইরে থেকে নেতা-কর্মীদের ঢাকা শহরে এনে সয়লাব করে ফেলেছে, ৩০ লাখ নেতা-কর্মী ঢাকা শহরে এনেছে এবং অস্ত্র-শস্ত্রসহ এনেছে। এই অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে আসতে তাদের কর্মীরা সাহস পায়, কারণ পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে না।’
‘এই কাজটি তারা করেছে, এই কাজটি করবে বলেই আগে থেকে বিএনপির ওপরে দোষ চাপানোর জন্য ওবায়দুল কাদের সাহেব এই উদোর পিণ্ডি বুঁদোর ঘাড়ে নেয়ার যে তাদের সবসময়ের অভ্যাস, সেটা করার জন্য এই কথা উনি বলেছেন। আমি এর তীব্র নিন্দা জানাই।’
মানুষ ভোট দিতে পারলে শতকরা ৮০ ভাগ ভোট পেয়ে ঢাকায় বিএনপির প্রার্থীরা বিপুল ভোটে জয়ী হবে বলে দাবি করে বিএনপি নেতা বলেন, ‘এখনো নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি হয়নি। প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ওয়ার্ডে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা-কর্মীদের ভয় দেখানো হচ্ছে। নেতা-কর্মীদের বাসা-বাড়িতে ঢুকে হুমকি-ধামকি ও ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। এই বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে জানানো হলেও ন্যূনতম কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে না।’
তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি, একচোখা নির্বাচন কমিশন প্রশাসনের ন্যাক্কারজনক আচরণ ও ভূমিকায় এই নির্বাচন যদি গতানুগতিক ও প্রহসনে পরিণত হয় তাহলে জনগণ তা বরদাশত করবে না এবং উদ্ভুত পরিস্থিতির দায়-দায়িত্ব সরকার ও একচোখা নির্বাচন কমিশনকেই গ্রহণ করতে হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির মেয়রপ্রার্থী খোকার ছেলে ইশরাক হোসেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আবদুস সালাম, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, নিতাই রায় চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।