২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ২:৩৯

দৈনিক মিলবে ৯ কোটি লিটার পানি

চট্টগ্রামের হাটহাজারীর মদুনাঘাটে স্থাপিত শেখ রাসেল পানি শোধনাগার প্রকল্প থেকে দৈনিক ৯ কোটি লিটার পানি মিলবে।

ওয়াসার আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর এই শোধনাগার আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করতে যাচ্ছে রোববার।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এদিন ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই প্রকল্পটি আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবে।

শুক্রবার চট্টগ্রামে কর্মরত বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকদের সঙ্গে নিয়ে পুরো প্রকল্পটি ঘুরে দেখান এবং প্রকল্প সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী এ কে এম ফজলুল্লাহ।

প্রকল্প পরিদর্শন শেষে ওয়াসার এমডি সাংবাদিকদের জানান, চট্টগ্রাম ওয়াসার সবচেয়ে আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর এই শোধনাগার প্রকল্প থেকে দৈনিক ৯ কোটি লিটার পানি শোধন করে চট্টগ্রাম মহানগরীতে সরবরাহ করা হবে। হালদা নদী থেকে পানি সংগ্রহ করে সর্বমোট চার ধাপে এই পানি শোধন করে নতুন স্থাপিত পাই লাইনের মাধ্যমে নগরীতে সরবরাহ কার্যক্রম ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে।

ওয়াসার এমডি প্রকৌশলী এ কে এম ফজলুল্লাহ জানান, ২০১১ সালে মদুনাঘাট পানি শোধনাগার প্রকল্প হিসেবে এই প্রকল্প গৃহীত ও বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া শুরু হয়। তবে মাঠ পর্যায়ে কাজ শুরু হয় ২০১৪ সালে। বিশ্বব্যাংক, বাংলাদেশ সরকার ও চট্টগ্রাম ওয়াসার যৌথ অর্থায়নে ১৮৯০ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হয়। এর মধ্যে বিশ্বব্যাংক এক হাজার ৪৯৪ কোটি ৯০ লাখ টাকা, বাংলাদেশ সরকার ৩৭০ কোটি ৩৭ লাখ টাকা এবং চট্টগ্রাম ওয়াসা ২২ কোটি ৫৪ লাখ টাকা অর্থায়ন করে।

মূলত ২০১৮ সালের নভেম্বরে প্রকল্পের অবকাঠামোগত যাবতীয় কাজ সম্পন্ন হয়। পরে প্রকল্পের নামকরণ করা হয় শেখ রাসেল পানি শোধনাগার প্রকল্প। ২৬ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে এই প্রকল্পটি আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করবে। এই শোধনাগার থেকে দৈনিক পানি পাওয়া যাবে নয় কোটি লিটার।

চট্টগ্রাম ওয়াসার এমডি আরো জানান, চট্টগ্রাম মহানগরীতে বর্তমানে পানির চাহিদা রয়েছে দৈনিক ৪২ কোটি লিটার। এর মধ্যে নতুন প্রকল্পসহ চট্টগ্রাম ওয়াসা দৈনিক ৩৬ কোটি লিটার পানি উৎপাদন ও সরবরাহ করছে। ঘাটতি ৬ কোটি লিটার পানি ডিপ টিউবওয়েলের মাধ্যমে পূরণ করছে নগরবাসী।

তবে ওয়াসার পাইপলাইনে থাকা আরো দুটি শোধনাগার প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে ওয়াসার পানির উৎপাদন ক্ষমতা দৈনিক ৫০ কোটি লিটার ছাড়িয়ে যাবে। এতে আগামী ২০৩৫ সাল পর্যন্ত চট্টগ্রামে কোন পানির চাহিদার ঘাটতি থাকবে না। একই সময়ের মধ্যে ওয়াসার আরো নতুন নতুন প্রকল্প যুক্ত হলে চাহিদার সঙ্গে উৎপাদনও ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পেতে থাকবে।

উল্লেখ্য, ওয়াসার শেখ রাসেল পানি শোধনাগার প্রকল্পের অধীনে নগরীতে ১২৬ কিলোমিটার ট্রান্সমিশন ও ডিস্ট্রিবিউশন পাইপলাইন বসানো হয়েছে। এর মাধ্যমে হালদা নদী থেকে পানি সংগ্রহ করে তা চার ধাপে পরিশোধন করে শতভাগ বিশুদ্ধতা নিশ্চিত করার পর তা নগরীতে সরবরাহ করা হচ্ছে।

এই প্রকল্প থেকে নগরীর উত্তর-পূর্ব অংশ বৃহত্তর বাকলিয়া, মোহরা, চান্দগাঁও, কালামিয়া বাজার, কল্পলোক আবাসিক এলাকা, রাহাত্তারপুল, খাতুনগঞ্জ, খাজারোড, ডিসিরোড, সিরাজ উদ দৌলা সড়কের পূর্ব অংশ এবং পতেঙ্গা এলাকায় পানি সরবরাহ করা হচ্ছে।

প্রকল্প পরিদর্শনকালে চট্টগ্রাম ওয়াসার সদস্য মহসিন কাজী এবং ওয়াসার বিভিন্ন পর্যায়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

প্রকাশ :জানুয়ারি ২৫, ২০২০ ১:৪২ অপরাহ্ণ