ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার বাতিল করে ব্যালট পেপারে ভোট নিতে লিখিতভাবে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কাছে আবেদন জানিয়েছে বিএনপি।
মঙ্গলবার বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক চিঠিতে এই আবেদন জানান।
বেলা ১১টায় আগারগাঁওয়ে অবস্থিত নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদার সভাকক্ষে কমিশনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন বিএনপির চার সদস্যের প্রতিনিধি দল। এসময় কমিশনের কাছে ফখরুলের চিঠি পৌঁছে দেয় প্রতিনিধিদল।
চিঠিতে ফখরুল বলেন, গত ১৩ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম-৮ উপনির্বাচনের বিস্তারিত চিত্রসহ গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। মনে করি, বিষয়টি আপনারাও অবহিত আছেন। বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত এই চিত্র ইভিএম, নির্বাচন কমিশন এবং নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার সম্পর্কে আমাদের দাবিকে আরও পাকাপোক্ত করেছে।
সর্বশেষ গত ৫ জানুয়ারি ইভিএম সম্পর্কে আমাদের দলের বক্তব্য এবং দাবি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জাতিকে অবগত করেছি। ৬ জানুয়ারি আমাদের দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর নেতৃত্বে আমাদের দলের দুই মেয়র প্রার্থীসহ বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল ঢাকা মহানগরের আগামী ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে একটি দাবিনামা আপনাদেরকে (নির্বাচন কমিশন) পেশ করেছেন। সেই ধারাবাহিকতায় চট্টগ্রাম-৮ উপনির্বাচনের অভিজ্ঞতার প্রেক্ষাপটে এই পত্র আবারও আপনাদের কাছে পেশ করছি।
একটি স্বচ্ছ ও শুদ্ধ নির্বাচন ব্যবস্থা ছাড়া গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা অর্থহীন। গণতন্ত্র কার্যকরী করার জন্যই ওই ভোট ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে আমাদের সংবিধান নির্বাচন কমিশনের মত একটি প্রতিষ্ঠান জন্ম দিয়েছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, ইভিএম মেশিনের দুটি ইউনিট। একটি কন্ট্রোল ইউনিট, অন্যটি ব্যালট ইউনিট। এর মধ্যে ব্যালট ইউনিট অরক্ষিত। কন্ট্রোল ইউনিটে ফিঙ্গার প্রিন্ট ম্যাচিংয়ের পর একজনের ভোট দিতে পারেন অন্যজন।
কেননা, কন্ট্রোল ইউনিটে ফিঙ্গারের ব্যবস্থা থাকলেও ব্যালট ইউনিটে তা নেই। সেখানে সাংবাদিকরাই তা প্রমাণ করেন। যা প্রমাণিত হলো চট্টগ্রাম-৮ উপ-নির্বাচনে।
নির্বাচন কমিশন যতক্ষণ একটি স্বচ্ছ, শুদ্ধ ও ভোটারের গোপনীয়তাসহ ভোটাধিকারের ব্যবস্থা নিশ্চিত না করতে পারবেন ততক্ষণই ভোটাধিকার চর্চা থেকে ভোটের মালিক তথা রাষ্ট্রের মালিক জনগণ বঞ্চিত থাকবেন।
চিঠিতে মহাসচিব বলেন, এই পরিপ্রেক্ষিতে আগামী ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনের হাতে এখনো সময় আছে নিরপেক্ষতা প্রমাণের চেষ্টা করার। সেই লক্ষ্যে ইভিএমের অকার্যকারিতাকে বিবেচনায় নিয়ে এ ব্যবস্থা বাতিল করে প্রচলিত ব্যালট পেপারে নির্বাচনের ব্যবস্থা করার দাবি জানাচ্ছি।
ফখরুল বলেন, ভোট প্রক্রিয়ায় সরকারি দলের খবরদারি বন্ধে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করুন। এতে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নির্বাচন কমিশন তার নিরপেক্ষতা ও স্বাধীনতা প্রমাণে ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচন অবাধ ও স্বচ্ছ করার ব্যবস্থা নেবেন।