শনিবার ভোরে চালানো ওই হামলায় অন্তত ছয়জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও তিনজন। খবর রয়টার্সের।
রয়টার্সের খবরে জানানো হয়েছে, ভোরে রাজধানী বাগদাদের উত্তরের তাজি এলাকায় আল শাবির একটি ঘাঁটিতে যুক্তরাষ্ট্র বিমান হামলা চালালে গোষ্ঠীটির এক শীর্ষ কমান্ডারসহ ছয়জন নিহত হন।
আধাসামরিক বাহিনী হাশদ আল শাবি পপুলার মোবিলাইজেশন ফোর্স (পিএমএফ) নামেও পরিচিত। ইরাকের সেনাবাহিনীর অধীনে থাকা বিভিন্ন মিলিশিয়া গ্রুপের জোট এটি। জোটটি ইরানের সমর্থন পেয়ে থাকে।
ইরাকের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের খবরে বলা হয়েছে, শনিবার ভোরে রাজধানী বাগদাদের উত্তরে তাজি সড়কে একটি গাড়িবহর লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র। তাজি সড়কে যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী জোটের একটি ঘাঁটি রয়েছে। এই জোটে যুক্তরাজ্য ও ইতালির সেনা রয়েছে।
তবে হাশেদ আল-শাবি হামলায় তাদের শীর্ষ কমান্ডার নিহত হওয়ার খবর অস্বীকার করেছে। এক পুলিশ রয়টার্সকে বলেন, পিএমইউ-এর গাড়িবহর লক্ষ্য করে এই হামলা চালানো হলে অনেকে হতাহত হয়েছেন। তবে কতজন নিহত হয়েছেন তা বলতে পারেননি তিনি।
গতকাল শুক্রবার ভোরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে ইরাকের বাগদাদ বিমানবন্দরের কাছে ড্রোন (চালকবিহীন বিমান) হামলা চালিয়ে হত্যা করা হয় ইরানের প্রভাবশালী সামরিক কমান্ডার সোলেমানিকে।
সোলেমানির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে এরই মধ্যে ইরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কে বড় ধরনের সংঘাতের ঝুঁকি সৃষ্টি হয়েছে। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভাদ জারিফ মার্কিন হামলার ঘটনাকে ‘আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ’ আখ্যা দিয়েছেন। এ ঘটনার ভয়ঙ্কর প্রতিশোধ নেওয়ারও হুমকি এরই মধ্যে দিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি।
ওদিকে পেন্টাগন সম্পূর্ণ বিপরীত বক্তব্য দিয়ে বলেছে, “ইরানের ভবিষ্যৎ হামলার পরিকল্পনা ঠেকাতেই হামলা করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বব্যাপী তাদের স্বার্থ এবং জনগণকে রক্ষায় সব প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়ে যাবে।’
বহু মার্কিন সেনা নিহতের ঘটনা এবং মধপ্রাচ্যে অনেক প্রাণহানির জন্যও পেন্টাগন সোলেমানিকে দায়ী করেছে। ওদিকে ইরান যুক্তরাষ্ট্রের আক্রমণকে দুর্বৃত্ত অভিযান আখ্যা দিয়ে এর সব পরিণতির জন্য তাদেরকেই দায়ী করে পাল্টা জবাবে দ্বিগুণ উদ্যমে জিহাদে অগ্রসর হওয়ার শপথ নিয়েছে।
ফলে সোলেমানি নিহতের ঘটনাটি কেবল ইরাকের জন্যই নয়, সামগ্রিক মধ্যপ্রাচ্যের জন্যই বড় টার্নিং পয়েন্ট হতে চলেছে। পুরো অঞ্চলে ঘনিয়ে আসতে চলেছে ছদ্মযুদ্ধের এক নতুন অধ্যায়। মধ্যপ্রাচ্যে প্রায় সব দেশেই যে এ ঘটনার প্রভাব পড়বে তা একরকম নিশ্চিত।