জনগণের স্বার্থ নয় আওয়ামী লীগের কাছে ক্ষমতাই বড় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ কখনও বাংলাদেশের মানুষের স্বার্থে কাজ করে না। তারা ভারতকে খুশি করতে সবসময় প্রস্তুত।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ওবায়দুল কাদেরের কথায় দেশের মানুষ এটা বুঝতে পারছে যে, আওয়ামী লীগের কাছে দেশের জনগণের স্বার্থ নয়, ক্ষমতাই বড়। তারা যেকোনো উপায়ে ক্ষমতায় থাকতে বিদেশি প্রভুদের খুশি করতে সদা প্রস্তুত।’
বৃহস্পতিবার দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব।
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশকে ডাম্পিং গ্রাউন্ড বানাতে সরকার ভারতকে সহযোগিতা করছে বলেও অভিযোগ করেছে ফখরুল।
‘ভারত থেকে বাংলাদেশে কেউ আসলে তারা যদি বাংলাদেশের নাগরিক না হন তাদের ফেরত পাঠানো হবে’- পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আবদুল মোমেনের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এর মাধ্যমে প্রমাণ হয় যে, ভারত থেকে বাংলাদেশে পুশ ইন হচ্ছে। সরকার এটা স্বীকার করে নিচ্ছে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ভারত বিতর্কিত নাগরিকত্ব বিল পাস করে বাংলাদেশকে একটা ডাম্পিং স্টেশন বানাতে চায়। যেভাবে মিয়ানমার থেকে ১১ লাখ রোহিঙ্গা এসে বাংলাদেশ-কে অনিশ্চয়তার মাঝে ফেলেছে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ্’র সাম্প্রতিক সময়ের বক্তব্যে সমর্থন জানিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের নিজ দেশের আপামর জনগণের উদ্দেশে বলেছেন, ‘ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যেটা বলেছেন বাংলাদেশের বাস্তবতায় এটা কি অসত্য? আমরা অত্যন্ত সুস্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, ওবায়দুল কাদের, ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ্ ও ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রবীশ কুমার আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ, বিএনপি ও বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সরকার সম্পর্কে যে বক্তব্য রেখেছেন তা সর্বৈব মিথ্যা, ভিত্তিহীন, বৈষম্যমূলক, ধর্মীয় বিভক্তি সৃষ্টিকারী এবং তা দুদেশের (আওয়ামী লীগ ও বিজেপি) অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে সংকীর্ণ সুবিধা লাভের ঘৃণ্য কৌশলমাত্র।’
ফখরুল বলেন, ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বক্তব্য মেনে নিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক স্বীকার করে নিয়েছেন যে, ৭১-পরবর্তী শেখ মুজিবুর রহমানের সরকার ও বর্তমান অবৈধ ভোটারবিহীন সরকারের সময়ে সংখ্যালঘু নির্যাতন হয়েছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘ওবায়দুল কাদের অমিত শাহের বক্তব্য সমর্থন করে ভারতের তোষামোদি করেছেন, তাদের স্বার্থ রক্ষায় কাজ করছেন। একই সঙ্গে দেশটির বিদেশ বিষয়ক মুখপাত্র রবীশ কুমারের বর্ধিত দায়িত্বও পালন করেছেন।’
‘আমরা ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানাই। আশা করি, সামনের দিনে আওয়ামী লীগ দেশের স্বার্থবিরোধী কোনো কথা বলা থেকে বিরত থাকবে।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, মঈন খান, বেগম সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী প্রমুখ।